জুমবাংলা ডেস্ক: ‘কলা রুয়ে না কাটো পাত, তাতেই কাপড় তাতেই ভাত। অর্থাৎ কলার গাছ রোপণের পর পাতা না কাটলে ভলো ফলন পাওয়া যাবে। তাতে ভাত-কাপড়ের অভাব হবে না।
বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার চন্ডিহারা গ্রামের আবুল মুনছুর জানান, তিনি খনার এ বচন মাথায় রেখে কলার পাতা না কেটে ফলন পেয়েছেন ভালো। কলার উৎপাদন ও ভালো দাম পেয়ে খুশি তার মতো অনেক কৃষক। তাদের অনেকে কলা চাষ করে পাকা বাড়ি করেছেন, অনেকে ছেলে মেয়েদের উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করার স্বপ্নে বিভোর। কলায় লাভ বেশি হওয়ায় শিবগঞ্জসহ জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে চাষিরা কলা চাষে ঝুঁকছেন।
কাক ডাকা ভোরে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার চন্ডিহারায় রংপুর- বগুড়া মহাসড়কের কলার হাটে ক্রেতা বিক্রেতাদের কেনা-বেচায় মুখরিত হয়ে ওঠে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাকডাকও বেড়ে যায়। সকাল থেকে কলার হাটে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যাপারীরা আসে হাটে। আবার অনেকে কলাচাষিদের বাড়িতে রাতে অবস্থান নেয়। যাতে কাক ডাকা ভোরে কিনে নিয়ে গন্তব্যে পৈাঁছতে পারে।
কেন জায়গাটি নাম চন্ডি হারা হলো কেই বলতে পারেনা। তবে নাম যাই হোক শিবগঞ্জ উপজেলা বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে খুব কমখরচে কলার আবাদ হয়ে থকে। আর সেই কলার হাট বসে চন্ডিহারার রাস্তার পশে দেড় থেকে ২ কিলোমিটার জুড়ে। ভোরে কলা চাষিরা রিকশা ভ্যান ভোঝ্ইা করে কলা নিয়ে আসে চন্ডিহারা হাটে। প্রতি বুধবার ও শনিবার এ চন্ডিহারায় বসে কলার হাট।
কলা চাষি আকরাম জানান, হাট বারে এখানে কুষ্টিয়া, যশোর, জয়পুরহাট, ঢাকা, পাবনাসহ বিভিন্ন জেলার ব্যাপরীরা আসে। প্রতি হাট বারে প্রায় ২০ ট্রাক কলা বিক্রি হয়ে হাটে। সাগার কলা, রঙিন সাগর, স্থানীয় ভাষায় অনুপম, এঁটে, চাঁপাকলাপ্রচুর সমাহার হাটে।
জেলার কাহালু উপজেলার কলার ব্যাপরী আনছার হোসেন জানান, তিনি প্রায় ৩০ বছর এ হাট থেকে কলা কিনে নিয়ে বিক্রি তার এলাকায় পইকারীতে বিক্রি করে থাকেন। তাতে বেশ ভালো দাম পেয়ে থাকেন। জেলার অনেক জাযগায় কেজিতে আবার হালিতেখুচরা বিক্রি হয়ে থাকে।
চাঁপা কলা এক কাঁদি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়ে থাকে। এক কাঁদিতে প্রায় দেড়শত থেকে ২০০ কলা থাকে। খুচরা বাজারে এ কলা ১৫ থেকে ২০ টাকা হালি(৪ টা) আবার ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়ে থাকে। সাগার ও রঙিন সাগার কলা দামও প্রায় একই রকম। তবে কৃষক সপরী কলার দামভালো পেয়ে থাকেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক এনামুল হক জানান, জেলায় এবার ৬০০ হেক্টর জমিতে কলা চাষ হয়েছে। এ লক্ষ্যমাত্রা সম্পূর্ণ পূরণ হয়েছে। এ উৎপাদন সারা বছর চলমান থাকে।
শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার আল মুজাহিদ জানান, এ হাট থেকে ২০ ট্রাক কলা বিক্রি হয়ে থাকে। প্রতিট্রাকে ১৫ থেকে ২০ ট্রাক কলা হাট বারে বিক্রি হয়ে থাকে। ট্রাক প্রতি ১০ থেকে ১২ টন কলাবহন করতে পারে। এতে প্রতিহাট বারে ১৫০ টন থেকে পৌনে ২০০ টন বিক্রি হয় এ হাট থেকে। তবে ভালা দাম পেয়ে চাষি ও ব্যাপরীরা খুশি।-বাসস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।