জুমবাংলা ডেস্ক: গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, নড়াইল ও যশোরসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলায় কাজু বাদাম চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার রাতইল হর্টিকালচার সেন্টারে এবছর প্রথম ফলেছে কাজু বাদাম। তাই এই অঞ্চলে কাজু বাদাম চাষে সমৃদ্ধির হাতছানি দিচ্ছে।
কাজু বাদাম খেতে সুস্বাদু। এটি খুবই পুষ্টিকর খাদ্য । বাজারে এ বাদামের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। প্রতি কেজি এই বাদাম বাজারে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫শ’ টাকা দরে বিক্রি হয়। উচ্চ মূল্যের এ ফসল চাষাবাদ করে এ অঞ্চলের কৃষক লাভবান হবেন। দেশের অর্থনীতিকে করবেন সমৃদ্ধ।
গোপালগঞ্জ হর্টিকালচার সেন্টার উপ-পরিচালক ড. আমিনুল ইসলাম বলেন, এ হর্টিকালচার সেন্টারে কাজু বাদামের এলএ-৪, ভাসকরা ও এম-২৩ জাতের ৩ টি মাতৃ গাছ রয়েছে। এ গাছ থেকে হর্টিকালচার সেন্টারে ৫০টি কাজু বাদামের গাছ সৃজন করা হয়েছে। এবছর ৩ প্রজাতির ৫০টি কাজু গাছেই কাজুবাদাম ধরেছে। এটি হর্টিকালচার সেন্টার প্রতিষ্ঠার ৮ বছরের মধ্যে অন্যতম সেরা সাফল্য।
তিনি বলেন, এখন এই হর্টিকালচার সেন্টার থেকেই কাজু বাদামের চারা তৈরী করা হবে। এ চারা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলায় ছড়িয়ে দেয়া হবে। কৃষক কাজু বাদাম উৎপাদন করে খোরপোষের কৃষিকে বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তরিত করতে পারবেন। তারা তাদের আয় ২ থেকে ৩ গুন বৃদ্ধি করে দেশের সমৃদ্ধিতে অবদান রাখবেন।
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী হর্টিকালচার সেন্টারের উদ্যান তত্ত্ববিদ এ. এইচ. এম. রাকিবুল হাসান বলেন, অর্থকারী ফসল হিসেবে সারা বিশ্বে এই বাদাম তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে। বাংলাদেশে এ বাদাম খুবই সমাদৃত। বছরে আমাদের দেশে ৬ লাখ কেজি কাজু বাদাম আমাদানি করা হয়। আমাদের অঞ্চলের আবহাওয়া কাজু বাদাম চাষের উপযোগি। তাই সরকার কাজু বাদামের আমাদানি নির্ভরতা কমাতে পাহাড়ি এলাকায় কাজু চাষের উদ্যোগ গ্রহণ করে। সে ধারবাহিকতায় সরকার কম্বোডিয়া থেকে ৫০ কেজি কাজু বীজ আমদানি করে। এ বীজ দিয়েই দেশের হর্টিকালচার সেন্টারগুলোতে মাতৃগাছ তৈরী করা হয়। আমরা ৩টি মাতৃ গাছ থেকে এখানে ৫০টি গাছ সৃজন করেছি। এসব গাছে কাজু ধরেছে। ফলে এটি চাষে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে।
এই কর্মকর্তা আরও জানান, বাংলাদেশের পাহাড়ে প্রতিবছর উৎপাদিত হচ্ছে মাত্র ১ লাখ কেজি কাজুবাদাম। পাহাড় ও সমতলে কাজুর আবাদ বৃদ্ধি করে বৈদেশিক মূদ্রা সাশ্রয় করা সম্ভব। এই কাজু আমাদের এ অঞ্চলের কৃষককে সমৃদ্ধি এনে দেবে।
গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণের ডিডি ড. অরবিন্দু কুমার রায় বলেন, কৃষক শুধু এই বাদাম সংগ্রহ করে বিক্রি করেই টনে ৬০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা লাভ করতে পারবে। এছাড়া কাজু বাদাম সংগ্রহ, শুকানে, প্রক্রিয়াজাতকরণ সহ বিভিন্ন কাজে প্রচুর শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। কাজুর আবাদে কৃষকের আয় যেমন বাড়বে, তেমনি শ্রমিকের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে। এখানে নারী শ্রমিকরা বেশি কাজ করার সুযোগ পাবেন। পাহাড়ি অঞ্চলের পাশাপাশি সমতলেও কাজু বাদাম চাষের সমান সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে গোপালগঞ্জ হর্টিকালচার সেন্টার। এটি আমাদের কৃষির জন্য সু সংবাদ। কাজু আমাদের কৃষিকে সমৃদ্ধ করবে। কৃষকের জীবন মান উন্নত হবে।
মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. দ্বীপ সাহা বলেন, কাজু বাদামে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী শর্করা, আমিষ, স্নেহ, খনিজ পদার্থ, ভিটামিনসহ অনেক ফাইটো কেমিক্যাল রয়েছে। এগুলো মানব দেহের চর্বি কমানো, নার্ভ সিস্টেম নিয়ন্ত্রণ, ডায়াবেটিক, কন্স্যারসহ দেহের অন্যান্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।-বাসস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।