জুমবাংলা ডেস্ক: দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে বাংলাদেশের কর্মীদের নিয়োগের জন্য আজ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করবে দুই দেশ।
মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের হিলটন হোটেলে স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় স্মারকে স্বাক্ষর করবেন দুই দেশের দুই মন্ত্রী। বাংলাদেশের পক্ষে স্বাক্ষর করবেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এবং মালয়েশিয়ার পক্ষ সে দেশের মানবসম্পদ মন্ত্রী দাতুক সেরি এম সারাভানান।
ঢাকা ও কুয়ালালামপুরের কূটনৈতিক সূত্রমতে নতুন সমঝোতা স্মারকে কর্মীদের সর্বোচ্চ অভিবাসন ব্যয় নির্ধারণ করা হচ্ছে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এতে আগের মতো সরকারি প্রক্রিয়ার সম্পৃক্ততা অর্থাৎ জিটুজি প্লাস পদ্ধতি থাকছে না। সেই সঙ্গে কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নতুন করে যুক্ত হচ্ছেন মালয়েশিয়ার এজেন্টরা। বাংলাদেশ অংশে কর্মী প্রেরণে রিক্রুটিং এজেন্সির সংখ্যার কোনো বাধ্যবাধকতা থাকছে না। সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর উপলক্ষে গতকাল রাতেই মালয়েশিয়ার উদ্দেশে রওনা দিয়েছে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদের নেতৃত্বে চার সদস্যবিশিষ্ট প্রতিনিধি দলের অনরা হলেন প্রবাসী কল্যাণ সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন, বিএমইটির মহাপরিচালক শহীদুল আলম এনডিসি ও উপপরিচালক সুষমা সুলতান।
মধ্যপ্রাচ্যের বিমানভাড়া কমাতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ প্রার্থনা : পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে যেসব কর্মজীবী যাচ্ছেন তাদের কয়েক গুণ বাড়তি বিমানভাড়া গুনতে হচ্ছে। বিমানের ভাড়া ৪০ হাজার টাকা থেকে বেড়ে ১ লাখের বেশি হয়েছে; এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য না। এটা সহনীয় পর্যায়ে আনতে ইতিমধ্যে আমাদের বিমান প্রতিমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার জন্য।’
গতকাল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস-২০২১’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে কর্মসংস্থানে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগের কারণে ইতালি ও গ্রিসে আমাদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ইতালিতে এ সুযোগ বন্ধ ছিল। প্রধানমন্ত্রী সফর করার পর তারা আবার বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে রাজি হয়েছে। সৌদি আরব ও আমিরাতে লোক নিয়োগ বন্ধ ছিল। প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে এসব দেশে আমরা যথেষ্ট কর্মী পাঠাচ্ছি।
সম্প্রতি লিবিয়ার পরিস্থিতিও আগের চেয়ে উন্নত হয়েছে। ২০১৫ সাল থেকে লিবিয়ায় কর্মী পাঠানো বন্ধ আছে। যেহেতু পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়েছে তাই সেই বাজার খুলতে যথেষ্ট উদ্যোগী হয়েছি। হাই কোর্টের রায় আছে লিবিয়ায় লোক না পাঠানোর, আমরা চেষ্টা করছি সেটি তুলে নেওয়ার।’ এসময় প্রশিক্ষণে গুরুত্ব বাড়াতে প্রবাসীদের উদ্যোগে বিদেশে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করার আহ্বান জানান তিনি। এছাড়া বিদেশে বসে এনআইডি পাওয়ার বিষয়টি নিয়েও কাজ করার কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি আনিসুল ইসলাম মাহমুদ সিলেট ও চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে করোনাভাইরাস পরীক্ষার আরটি-পিসিআর ল্যাব না বসায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘এখন প্রবাসীদের বিদেশ যেতে পিসিআর টেস্ট দরকার হয়। চট্টগ্রাম ও সিলেট আমাদের দুটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আছে। চট্টগ্রাম থেকে এসে ঢাকায় টেস্ট করা অনেক কষ্টের। আমরা যারা বাইরে যাই, আমাদেরই পিসিআর টেস্ট করতে অনেক কষ্ট হয়। কেন আমরা এই সামান্য সহযোগিতার কাজ করতে পারব না? অনতিবিলম্বে চেষ্টা করে পিসিআর টেস্টের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।’ এ সময় বিমানবন্দরে প্রবাসীদের নানান ভোগান্তির কথাও তুলে ধরেন আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।
তিনি বলেন, বিমানবন্দরে ট্রলি নেই, মাথায় করে স্যুটকেস নিয়ে যাচ্ছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে প্রবাসী কর্মীদের সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান ও প্রবাসী সিআইপিদের মধ্যে ক্রেস্ট বিতরণ করা হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



