স্পোর্টস ডেস্ক: চূড়ান্ত হয়েছে গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ খ্যাত ফুটবল বিশ্বকাপের অংশগ্রহণকারী ৩২ দল। এতে করে পূর্ণতা পেয়েছে আগেই ঘোষণা দেয়া ম্যাচের সূচি। এখন অপেক্ষা মহারণের। যা চলবে একমাস ধরে। হাতে সময় আছে মাত্র ১৫৭ দিন। মাঠের লড়াইয়ের আগেই শুরু হয়ে গেছে মাঠের বাইরের লড়াই। ভক্ত, সমর্থক, সাবেক, বর্তমানরা এরই মধ্যে হিসেব কষতে শুরু করেছেন স্বপ্নের ফাইনালে খেলতে গিয়ে নিজেদের প্রিয় দলের সামনে কারা বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
ব্যতিক্রম নয় আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের সমর্থকরাও। এবারের মিশনটি ব্রাজিলের হেক্সা হলেও আর্জেন্টিনার তৃতীয় শিরোপার। ব্রাজিলের জন্য যতটা গুরুত্ব বিশ্বকাপ আর্জেন্টিনার সমর্থকরা মনে করেন তাদের জন্য বিশ্বকাপের গুরুত্ব তার চেয়েও বেশি। এবারের আসরটি ব্রাজিলের সেরা তারকা নেইমারের শেষ বিশ্বকাপ। কেননা নেইমার ইতোমধ্যে বিশ্বকাপের পর আন্তর্জাতিক ফুটবল ক্যারিয়ার থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন। যদিও নেইমার এবারের আসরে যখন অংশ নেবেন তার বয়স হবে মাত্র ৩০ বছর। ২০২৬ সালের আসরে নেইমারের বয়স হবে ৩৪ বছর। নেইমার তার মতামত পরিবর্তন করলে বিশ্বকাপের ২৩তম আসরে দেখা যেতেই পারে। তবে নেইমারের কথা অনুসারে বলা যায় এবারের আসরই মেসির ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপ।
বিশ্বকাপের ২২তম আসরে মাঠে নামার আগে দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। ল্যাতিন আমেরিকা অঞ্চল থেকে শীর্ষস্থানে থেকে কাতার বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করেছে ব্রাজিল। যদিও তারা ২০ বছর ধরে শিরোপার ধারে কাছেও নেই। নেইমারের নেতৃত্বে ব্রাজিলের শেষ আন্তর্জাতিক শিরোপা ২০১৯ সালের কোপা আমেরিকা জয়। তবে বর্তমান পারফর্ম্যান্সের বিচারে ব্রাজিল ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থানে রয়েছে।
গ্রুপ পর্ব
ব্রাজিল কাতার বিশ্বকাপের জি গ্রুপে রয়েছে। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ সুইজারল্যান্ড, সার্বিয়া ও ক্যামেরুন। নেইমার-জেসুসদের বর্তমান পারফর্ম্যান্সের হিসেবে ব্রাজিলকে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবেই দেখছে ফুটবল বিশ্লেষকরা। ব্রাজিল তাদের প্রথম ম্যাচ খেলবে ২৪ নভেম্বর সার্বিয়ার বিপক্ষে। এরপর ২৮ নভেম্বর সুইজারল্যান্ড ও শেষ ম্যাচটি খেলবে ২ ডিসেম্বর ক্যামেরুনের বিপক্ষে।
শেষ ষোলো
জি গ্রুপ থেকে নেইমারের ব্রাজিল চ্যাম্পিয়ন হলে তাদের দেখা হবে এইচ গ্রুপের রানার্সআপ দলের সঙ্গে। যেখানে তাদের সামনে পড়বে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন পর্তুগাল, উরুগুয়ে, ঘানা ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্য থেকে একটি দল। এ গ্রুপ থেকে চ্যাম্পিয়ন হিসেবে পর্তুগালকেই দেখছে অনেকে। তবে আবার অনেকের ধারণা উরুগুয়ে। সে হিসেবে এইচ গ্রুপ থেকে পর্তুগাল কিংবা উরুগুয়ে যারাই ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ হোক। শেষ ষোলোর ম্যাচে ব্রাজিল ফেভারিট হিসেবেই খেলবে।
কোয়ার্টার ফাইনাল
শেষ ষোলোর ম্যাচে পর্তুগাল কিংবা উরুগুয়েকে হারিয়ে কোয়ার্টারে জায়গা নিশ্চিত হলে ব্রাজিলের সামনে পড়বে ই গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ও এফ গ্রুপের রানার্সআপের মধ্যকার শেষ ষোলো ম্যাচজয়ী দল। যেখানে সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ জার্মানি ও ক্রোয়েশিয়া। যেখান থেকে জয়ী হিসেবে জার্মানিকেই দেখছে।
জার্মানির মুখোমুখি হলে ব্রাজিলের সামনে চলে আসবে প্রতিশোধ নেয়ার সুযোগ। ২০১৪ সালে মারাকানায় এই জার্মানির কাছেই যে ৭-১ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছিল সেলেসাওরা।
সেমিফাইনাল
জার্মানি কিংবা ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়ে সেরা চারে উঠতে পারলেই কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে নেইমারদের। কেননা যেখানে তাদের মুখোমুখি হতে হবে ল্যাতিন আমেরিকার আরেক প্রতিপক্ষ আর্জেন্টিনার। সমীকরণ যদি ঠিক থাকে তাহলে সেমিফাইনালের ম্যাচটি রূপ নেবে সুপার ক্লাসিকোয়। যার আশায় ফুটবল বিশ্ব বসে থাকে। এই সুপার ক্লাসিকোয় জয় পেলেই নিজেদের ষষ্ঠ বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ের পথে এগিয়ে যেতে পারবে ব্রাজিল।
ফাইনাল
সেমির কঠিন বাধা টপকে গেলে ২০০২ সাল অর্থাৎ দীর্ঘ ২০ বছর পর আবার ফাইনাল খেলবে ব্রাজিল। সেক্ষেত্রে তাদের সামনে পড়বে অন্য সেমিফাইনাল জয়ী দল। ফিফার ফিক্সার অনুসারে সেই সেমিফাইনালে মুখোমুখি হতে পারে ফ্রান্স ও বেলজিয়াম। এ ম্যাচের জয়ী দলের বিপক্ষে ব্রাজিল মুখোমুখি হবে শিরোপার লড়াইয়ে। যেটি ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে ১৮ ডিসেম্বর লুসাইল স্টেডিয়ামে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।