ধর্ম ডেস্ক : শারীরিক ও আর্থিকভাবে সক্ষম প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর জন্য জীবনে একবার হজ করা ফরজ ইবাদত। হজ ইসলামের পঞ্চ স্তম্ভের অন্যতম একটি।
সারা বিশ্ব থেকে প্রতি বছর প্রায় ২৫ লাখ লোক হজে অংশগ্রহণ করতো। কিন্তু এবারের হজ প্রাণঘাতী বৈশ্বিক মহামারি নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাবের কারণে মাত্র ১০ হাজার মানুষের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। গত ১০-১৫ জুলাই ইলেক্ট্রনিক আবেদন প্রক্রিয়ায় ১৬০ দেশের নাগরিকদের এবারের হজে অংশগ্রহণকারীদের বাছাই করা হয়েছে।
প্রতি বছর ৯ জিলহজ তারিখে আরাফার দিন (হজের দিন) কাবাঘরের পুরনো গিলাফ পরিবর্তন করে নতুন গিলাফ লাগানো হয়। আর এরই ধারাবাহিকতায় এবার পবিত্র কাবাঘরের গিলাফ বদলানো হবে আজ বৃহস্পতিবার, অর্থাৎ ৯ জিলহজ এশার নামাজের পর। সংবাদমাধ্যম সৌদি গেজেট ও গালফ নিউজের খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এরই মধ্যে পবিত্র কাবার নতুন গিলাফ হস্তান্তর করা হয়েছে। খাদেমুল হারামাইন শরিফাইন ও সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের পক্ষ থেকে মক্কার গভর্নর প্রিন্স খালিদ আল ফয়সাল কাবা শরিফের জন্য তৈরি করা নতুন গিলাফ কাবার জ্যেষ্ঠ তত্ত্বাবধায়ক শায়খ সালেহ বিন জায়নুল আবেদিনের কাছে হস্তান্তর করেছেন।
মক্কার নিকটবর্তী উম্মুল জুদ এলাকায় কাবার গিলাফ তৈরির একটি কারখানা রয়েছে। যেখানে নির্দিষ্ট পরিমাণ শ্রমিক সারা বছর কাবার গিলাফ তৈরির কাজে নিয়োজিত থাকেন।
গিলাফটি খুব টেকসই ও মানসম্মত উপায়ে তৈরি করা হয়। যেন রোদ-বৃষ্টিতে নষ্ট না হয় এবং এতে খাঁটি রেশম ব্যবহার করা হয়। পবিত্র কাবার কালো গিলাফকে কিসওয়া বলা হয়। গিলাফের বাইরের কালো কাপড়ে স্বর্ণমণ্ডিত রেশমি সুতা দিয়ে দক্ষ কারিগর দিয়ে ক্যালিওগ্রাফি করা হয়। গিলাফে পবিত্র কোরআনের আয়াত শোভা পায়, অক্ষরগুলো সোনালি আভায় উদ্ভাসিত। একটি গিলাফ তৈরি করতে ৪৭ টুকরো কাপড় ব্যবহার করা হয়। এতে ১২০ কেজি সোনার সুতা, ৬৭০ কেজি রেশম সুতা ও ১০০ কেজি রুপার সুতা লাগে। গিলাফটির দৈর্ঘ্য ১৪ মিটার এবং প্রস্থ ৪৪ মিটার। কাবার এ গিলাফ তৈরিতে খরচ হয় প্রায় ২০ মিলিয়ন সৌদি রিয়াল।
পুরোনো গিলাফকে টুকরো টুকরো করে বিভিন্ন দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তি ও রাষ্ট্রপ্রধানদের উপহার হিসেবে দেয়া হয়।
গিলাফ যা লেখা থাকে:
পবিত্র কাবা শরিফের গিলাফ একটি বস্ত্রখণ্ড যা দ্বারা কাবাকে আচ্ছাদিত করে রাখা হয়। বর্তমানে গিলাফ কালো রেশমী কাপড় নির্মিত, যার ওপর স্বর্ণ দিয়ে লেখা থাকে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলাল্লাহ’, ‘আল্লাহু জাল্লে জালালুহু’, ‘সুবহানাল্লাহু ওয়া বেহামদিহি, সুবহানাল্লাহিল আযিম’ এবং ‘ইয়া হান্নান, ইয়া মান্নান’।
উল্লেখ্য, মহামারি করোনাভাইরাস যেন হজের সময় কারোর মধ্যে না ছড়ায় সে লক্ষ্যে বিভিন্ন সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিয়েছে সৌদি সরকার। পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি বিনা অনুমতিতে মক্কা ও এর আশপাশের এলাকায় প্রবেশের ওপর কড়া নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। যারা ২০ জুলাই থেকে ২ আগস্ট পর্যন্ত বিনা অনুমতিতে হজের রোকন অঞ্চলে প্রবেশ করবে তাদের জন্য ১০ হাজার রিয়াল জরিমানার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। একাধিকবার প্রবেশ করলে এ জরিমানা দ্বিগুণ হবেও বলে জানিয়েছেন দেশটির দায়িত্বশীল প্রশাসন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।