করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দেশজুড়ে ১৪ দিনের ‘শাটডাউন’ দেওয়ার সুপারিশ করেছে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) কোভিড-১৯ কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মােহাম্মদ সহিদুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, দেশে কোভিড-১৯ রােগের ভারতীয় ডেল্টা ধরনের সামাজিক সংক্রমণ চিহ্নিত হয়েছে। ইতােমধ্যে এর প্রকোপ অনেক বেড়েছে। এ প্রজাতির জীবাণুর সংক্রমণ ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বিশ্লেষণে সারাদেশেই উচ্চ সংক্রমণ, পঞ্চাশটির বেশি জেলায় অতি উচ্চ সংক্রমণ লক্ষ্য করা গেছে। এটি প্রতিরােধে খণ্ড খণ্ডভাবে নেওয়া কর্মসূচির উপযােগিতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। সার্বিক দিক বিবেচনা করে করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া ও জনগণের জীবনের ঝুঁকি ঠেকাতে কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে সারাদেশে কমপক্ষে ১৪ দিন শাটডাউনের সুপারিশ করছে। এ সময়ে জরুরি সেবা ছাড়া যানবাহন, অফিস-আদালতসহ সবকিছু বন্ধ রাখা প্রয়োজন। এ ব্যবস্থা কঠোরভাবে পালন করতে না পারলে, আমাদের যতই প্রস্তুত থাকুক না কেন, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অপ্রতুল হয়ে পড়বে।
অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ জানিয়েছেন, শাটডাউন মানে হচ্ছে সবকিছু বন্ধ থাকবে, শুধু জরুরি সেবা ছাড়া। অফিস-আদালত, বাজার-ঘাট, গণপরিবহনসহ সব বন্ধ থাকবে। সবাই বাসায় থাকবে। তিনি বলেন, জরুরি সেবা বলতে ওষুধ, ফায়ার সার্ভিস, গণমাধ্যম ছাড়া সবকিছু দুই সপ্তাহ বন্ধ করে মানুষ যদি এই স্যাক্রিফাইস-কষ্টটুকু মেনে নেয়, তাহলে আগামীতে ভালো হবে।
কারিগরি পরামর্শক কমিটির সুপারিশের পর জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, আমরা খুবই গভীরভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। এরই মাঝে আমরা ঢাকার চারপাশের ৭ জেলা এবং সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোকে কঠোর বিধিনিষেধের আওতায় এনেছি। অবস্থা বিবেচনায় ঢাকাসহ সারাদেশে শাটডাউনের প্রস্তুতি সরকারের আছে।
জানতে চাইলে পরামর্শক কমিটির একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গত ২৩ জুন কমিটির বৈঠককালে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যু প্রতিরোধে কমপক্ষে দুই সপ্তাহ সারাদেশে ‘কারফিউ’ জারি করার ব্যাপারে একমত পোষণ করেন।
কমিটির আরেক সদস্য বলেন, লকডাউন শব্দটি এখন হেলাফেলার হয়ে গেছে। লকডাউনের মধ্যেও গণপরিবহন চলছে, মার্কেট শপিংমলসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিস ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলা রয়েছে। এ কারণে তারা ‘কারফিউ’ শব্দটি প্রয়োগের পরামর্শ দিয়েছিলেন। কারফিউ হোক আর শাটডাউন হোক, সারাদেশে আগামী ১৪ দিনের জন্য যানবাহন ও মানুষের চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ না করলে পরিস্থিতির ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে। এমনকি চিকিৎসাসেবা বন্ধের উপক্রমও হতে পারে হাসপাতালে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।