জুমবাংলা ডেস্ক : কারাগারে এক সঙ্গে ছিলেন ছয় আ’সামি। তাদের মধ্যে কথা ছিল, যিনি আগে জামিন পাবেন, তিনি অন্যদের জামিনের জন্য তদবির করবেন। কিন্তু তা না করে জেল থেকে বের হয়ে নিজের সঙ্গে কারাগারে থাকা এক আ’সামির স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পরেন হাবিবুর রহমান ওরফে সবুজ নামের ২৬ বছরের এক যুবক। এর জের ধরেই ১১ টুকরো লা’শ হতে হয়েছে তাকে।
গত ৭ মার্চ খুলনা মহানগরীর সদর থানার ফারাজীপাড়া এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে হাবিবের লা’শের টুকরোগুলো উদ্ধার করে পুলিশ। নৃ’শংস এ হ’ত্যাকাণ্ডের শিকার হাবিব ইটভাটায় শ্রমিক সরবরাহের ঠিকাদারি করতেন। তার বাড়ি সাতক্ষীরা সদরের উমরাপাড়া গ্রামে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক শেখ আবু বকর জানান, পাঁচ খু’নি আর ভুক্তভোগী হাবিবের মধ্যে জেলখানায় পরিচয় হয়। হাবিব আগে কারামুক্ত হলে তার সঙ্গে কথা ছিল অন্যদের জামিন করাতে তিনি তদবির করবেন। কিন্তু তিনি জামিনে বের হয়ে আ’সামি মোস্তফা আল মামুনের সুন্দরী স্ত্রী রিক্তার সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। তাকে নিয়ে কুয়াকাটা, কক্সবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরেও বেড়ান হাবিব। কারাগারে থাকা অবস্থায় এসব তথ্য পেয়ে যান মামুন। পরে হাবিবকে হ’ত্যার জন্য আরেক আ’সামি আসাদের সঙ্গে ৫০ হাজার টাকায় চুক্তি করেন।
গত ৫ মার্চ বিকেলে কারামুক্ত হয়ে আ’সামিরা খুলনার আদালত চত্বরে বসেই মুঠোফোনের মাধ্যমে হাবিবকে সাতক্ষীরা থেকে খুলনায় আসতে বলেন। নগরীর ফারাজীপাড়া লেনের একটি ভাড়া বাড়িতে গত ৬ মার্চ রাতের কোনো এক সময় পাঁচ আ’সামি মিলে খু’ন করেন হাবিবকে।
সকালে খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য সালাউদ্দিন জুয়েলের শেরে বাংলা রোডের বাড়ির সামনে নিহত হাবিবের ধড়, নগরীর ফারাজিপাড়া এলাকার এনজিও রূপান্তরের সামনে হাত-পা এবং একই এলাকায় অবস্থিত সাবেক স্পিকার ম’রহুম অ্যাডভোকেট রাজ্জাক আলীর বাড়ির সামনে মাথা ফেলে দেওয়া হয়। আর কিছু অংশ রাখা হয় ওই ভাড়া বাড়ির খাটের নিচে। পরদিন সকালে এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়ে বিভিন্ন স্থান থেকে লা’শের টু’করো করা অংশগুলো উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত ব্যক্তি ও আ’সামিদের মোবাইল নেটওয়ার্ক, সিডিআরের বরাত দিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান, নিহত হাবিবকে ওই মামলার প্রধান আ’সামি আসাদুজ্জামান ৫ মার্চ বিকেল ৩টা ২৭ মিনিটের সময় তার ব্যবহৃত মোবাইল দিয়ে ফোন করে খুলনায় আনেন।
ওইদিন বিকেল ৫টা ৪ মিনিটে হাবিব খুলনার ময়লাপোতা মোড়ে এসে পৌঁছান। ৬ মার্চ রাত ৯টা ২১ মিনিট থেকে পরদিন সকাল ৬টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত আ’সামি সরদার আসাদুজ্জামান, অনুপম মহলদার, খলিলুর রহমান খলিল, আবদুল হালিম গাজী এবং এ কে এম মোস্তফা চৌধুরী মামুন একই সঙ্গে একই স্থানে নগরীর ৩৪ নম্বর ফারাজীপাড়া লেনের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। ওই সময়েই হাবিবকে হ’ত্যা করে লা’শ টু’করো টু’করো করা হয়।
পিবিআিইয়ের এ কর্মকর্তা জানান, হাবিব হ’ত্যার চার আসামি বর্তমানে খুলনা জেলা কারাগারে থাকলেও মোস্তফা চৌধুরী ওরফে মামুন ভারতে অবস্থান করছেন বলেও পিবিআইয়ের কাছে তথ্য রয়েছে। তিনি মাঝে মধ্যে তার প্রথম স্ত্রী খাদিজা ওরফে রূপাকে ফোন কের তার দুই সন্তানের সঙ্গে কথা বলেন এমনো প্রমাণ রয়েছে। চলতি সেপ্টেম্বর মাস নাগাদ এই মামলার চার্জশিট দাখিল করতে পারবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন পিবিআইয়ের এই তদন্ত কর্মকর্তা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।