জুমবাংলা ডেস্ক : জামিনে মুক্তির পর কারাফটক থেকে ফের আটক হয়েছেন রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) রাত ৮টার সময় তিনি রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান। এরপর কারাফটকেই জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা তাকে আটক করেন।
এর আগে বুধবার বিকাল থেকেই সাবেক এমপি কালামের জামিনে মুক্তি পাওয়ার খবর জানাজানি হয়। এর প্রতিবাদে বিকাল থেকেই কারাগারের বাইরের সড়কে অবস্থান নেন ছাত্রদল, যুবদল, মহিলা দল ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা। কারও কারও হাতে লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেলও দেখা যায়।
বাইরে পুলিশের সদস্যরা সতর্ক অবস্থায় ছিলেন। রাত ৮টার সময় কারাগারের ভেতরের প্রধান ফটক থেকে বের হন কালাম। পরে ডিবি পুলিশের সঙ্গে হেঁটে কারাগারের বাইরের প্রধান ফটকের কাছে আসেন। এ সময় বাইরে অপেক্ষমাণ ডিবি পুলিশের একটি জিপে তাকে তুলে নেওয়া হয়। আবুল কালাম আজাদকে এ সময় উদ্বিগ্ন ও বিমর্ষ দেখা যায়। গাড়িতে তোলার সময় ছাত্রদল, যুবদল ও মহিলা দলের নেতাকর্মীরা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় ডিবি পুলিশের এক সদস্য বলতে থাকেন, ‘এটা পুলিশের গাড়ি, পুলিশের গাড়ি’। কালাম পুলিশের গাড়িতে উঠে যাওয়ার পর নেতাকর্মীরা গাড়িটি আটকে দেওয়ার চেষ্টা করেন। অনেকে গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে যান। দুয়েকজন ইটপাটকেলও ছোড়েন। এ সময় গাড়ির বাইরে থাকা পুলিশ সদস্যরা নেতাকর্মীদের সরিয়ে দিলে দ্রুত গাড়িটি ডিবি কার্যালয়ে চলে যায়।
কথা বলতে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র জেল সুপার রত্মা রায় ও জেলার আমান উল্লাহর মোবাইল ফোনে দফায় দফায় ফোন করা হলেও তারা ধরেননি। তাই তাদের সঙ্গে কথা বলা যায়নি। তবে কথা বলেছেন কারাগারের একজন ডেপুটি জেলার।
তিনি জানান, বাগমারা থানার দুটি মামলায় কারাগারে বন্দি ছিলেন আবুল কালাম আজাদ। হাইকোর্টে তিনি দুটি মামলাতেই জামিন পেয়েছেন। বুধবার জামিনের কাগজ কারাগারে পৌঁছালে তার মুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়। তবে বিষয়টি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাকে জানানো হয়েছিল।
এমপি হওয়ার আগে আবুল কালাম আজাদ বাগমারার তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র ছিলেন। মেয়র থাকাকালে ঠিকাদারকে অতিরিক্ত ৩৩ লাখ ৬৫ হাজার ৬৬১ টাকা বিল পরিশোধ করার অভিযোগে গত ২১ জানুয়ারি কালামসহ চার জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তবে এ মামলায় কালামকে গ্রেফতার দেখানো হয়নি না বলে জানিয়েছেন কারাগারের ওই ডেপুটি জেলার।
তিনি জানান, ছাত্র-জনতার ওপর হামলার অভিযোগে বাগমারা থানায় দায়ের হওয়া দুটি মামলায় কারাগারে ছিলেন কালাম। এর বাইরে তার নামে অন্য মামলা আছে কি না তা তাদের জানা নেই। অন্য মামলায় গ্রেফতার না থাকায় তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।
রাজশাহী জেলা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আরিফ আলী বলেন, ‘কারাগারের সামনে থেকে সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদকে আটক করে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।’ তাকে কোন মামলায় গ্রেফতার দেখানো হবে তা জানতে চাইলে আরিফ আলী বলেন, ‘এটা পরে জানানো হবে।’
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হন আবুল কালাম আজাদ। ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। পরে গত ২ অক্টোবর রাতে র্যাব-৪ ও র্যাবের গোয়েন্দা শাখার যৌথ অভিযানে রাজধানীর মিরপুর শেওড়াপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।