কালচারাল বলতে বিভিন্ন বইপুস্তক, ম্যাগাজিন, মিউজিক অর্থাৎ কালচারাল প্রোডাক্টগুলো যে ইন্ডাস্ট্রিতে তৈরি হয় সেটাই সংস্কৃতির কারখানা। কালচালার ইন্ডাস্ট্রি বলতে এমন কালচারকে বুঝায় যে গুলো ইচ্ছাকৃত ভাবে তৈরি করে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। যা আমাদেরকে পলিটিক্যালি ডমিনেট করে রাখে।
এডোর্নো এখানে কালচারাল ইন্ডাস্ট্রিকে দেখেছেন ‘গণপ্রতারণা’ হিসেবে। বলা হয় প্রোডাক্টগুলো উৎপাদন করা হয় ভোক্তার জন্য। কিন্তু আসলে পণ্য উৎপাদিত হয় মুনাফার জন্য। মূল বিষয়টাই হচ্ছে পুঁজিবাদ। কালচারাল ইন্ডাস্ট্রি মানুষকে অর্থাৎ ভোক্তাকে তাদের ওপর নির্ভরশীল ও দাস হিসেবে পরিণত করে। আমাদের কাজের সময় কমানোর ফলে আমরা অবসর সময়ে এইসব পণ্য গ্রহণ করে থাকি।
আমার কাজের বাইরে আমি কী করব সেটাও কালচারাল ইন্ডাস্ট্রি নির্ধারণ করে দেয়। উদ্দেশ্য কালচারাল ইন্ডাস্ট্রির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে কালচারার প্রোডাক্ট তৈরি করা৷ আমাদেরকে সস্তা বিনোদনের ভোক্তা সংস্কৃতিতে বুদ করে রাখা। ভোক্তার অর্থাৎ আমাদের মধ্যে কোনো পণ্যের আকাঙ্খা ও চাহিদা সৃষ্টির মাধ্যমে এই স্যস্কৃতির বৈধতা প্রদান করা।
কালচারাল ইন্ডাস্ট্রির বৈশিষ্ট মূলত দুটি।
১. ভোক্তার জন্য উচ্চ মূল্যের পণ্য উৎপাদন করে
২. শিক্ষা, বিনোদনমূলক পণ্য তৈরির মাধ্যমে ভোক্তার কাছে তা ছড়িয়ে দেয়
এর্ডোনোর মতে রেডিও, ম্যাগাজিন, চলচ্চিত্রকে শিল্প হিসেবে উপস্থাপনের কোনো প্রয়োজন নেই। এসব নিছক ব্যবসা ছাড়া আর কিছুই নয়। কালচারাল ইন্ডাস্ট্রির মনোপলির ফলে সকল পণ্যই একরকমের। কয়েকটা প্রতিষ্ঠানের হাতে উৎপাদনের সকল কিছু ন্যস্ত। তারা যেসব পণ্য তৈরি করে সে পণ্যগুলো সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে যায়।
কালচারাল ইন্ডাস্ট্রি সকল ধরনের ভোক্তাকেই কন্ট্রোল করতে চায়। পণ্যের দাম যতই হোক না কেন আমাদেরকে তা কিনতে হয়৷ ভোক্তারা এখানে পণ্য পছন্দ করলেও তা তাদের পছন্দ নয়। কারণ তাদের জন্য পণ্য আগে থেকেই নির্ধারিত থাকে। কালচারাল ইন্ডাস্ট্রি প্রযুক্তির মাধ্যমে অর্থাৎ রেডিও, চলচ্চিত্র ইত্যাদি বিষয়ের আমাদের নিয়ন্ত্রণ করে। আমাদের সামনে কোনো রকমের পথ খোলা থাকে না।
মানুষের যখন কোনো গান পছন্দ হয় বা মানুষের মনে জায়গা করে নেয়, তখন বিক্রয়কারীরা এটাকে পণ্য হিসেবে ব্যবহার করে। পপ মিউজিক মানুষকে নিষ্ক্রিয় শ্রোতা তে পরিণত করে।
গান শুনলে আমরা সেটা বোঝার চেষ্টা করি না। কালচারাল ইন্ডাস্ট্রির তৈরি পণ্যগুলো আমাদের মাঝে সোশ্যাল সিমেন্ট হিসেবে কাজ করে। অর্থাৎ এক ধরনের দৃশ্যমান দেয়াল তৈরি হয়। মানুষের মনের মধ্যে মেকি ইমোশন সৃষ্টি করে। আমাদের সৃষ্টিশীলতা নষ্ট হয়ে যায়। অলস হয়ে যাই। মোরাল ভেল্যু নষ্ট হয়ে যায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।