নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: গাজীপুরের কালীগঞ্জের একটি মাদরাসায় ৮ বছর বয়সী ছাত্রকে বস্তায় ভরে নির্যাতনের অভিযোগে গ্রেপ্তার শিক্ষক হাফেজ মো. জাকারিয়া শেখকে (২৯) কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
রবিবার (২৯ জুন) আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। কালীগঞ্জ থানার ওসি মো. আলাউদ্দিন এ তথ্য জানান।
গতকাল শনিবার (২৮ জুন) রাতে নির্যাতিত ছাত্রের বাবা মো. মোশারফ শেখ বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় শিশু আইন ২০১৩-এর ৭০ ধারায় মামলা করেন।
অভিযুক্ত জাকারিয়া শেখ কালীগঞ্জ উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের সাওরাইদ গ্রামের মৃত তোতা মিয়ার ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের ফুলদী গ্রামে অবস্থিত ‘নূরে মদিনা হাফেজিয়া মাদরাসা’। এই মাদরাসার নূরানী বিভাগে শিক্ষক জাকারিয়া শেখের অধীনে পড়ালেখা করতেন মো. আবু বক্কর সিদ্দিক নামে শিশু শিক্ষার্থী। গত শুক্রবার (২৭ জুন) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ছুটি চাওয়ায় শিক্ষক জাকারিয়া ক্ষিপ্ত হয়ে শিশু আবু বক্করকে মারধর করেন। রাত সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত তাকে একটি প্লাস্টিকের বস্তায় ঢুকিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী ও অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। রাতেই প্রায় ১৫০-২০০ জন স্থানীয় লোকজন মাদরাসা ঘেরাও করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
শনিবার (২৮ জুন) তিনজন মাদরাসা ছাত্র নির্যাতিত শিশুকে ফেরত আনতে তার বাড়িতে যান। ভুক্তভোগীর মা ফরিদা বেগম ছেলেকে বুঝিয়ে দিয়ে শিক্ষকের কাছে অনুরোধ করেন যেন আর নির্যাতন না করা হয়।
শিক্ষক সেই অনুরোধ উপেক্ষা করে শিশুটিকে রবিবার (২৮ জুন) সকালে মাদরাসার ছাদে একটি বস্তায় ভোরে রোদের মধ্যে ফেলে রাখেন। মাদরাসার দুই ছাত্র হৃদয় (১৮) ও সাহাদ সাদ (১৭) আবু বক্করকে দেখতে চাইলে শিক্ষক তাদেরকেও বাধা দেন।
কালীগঞ্জ থানার ওসি মো. আলাউদ্দিন বলেন, “ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার পর অভিযুক্ত শিক্ষক জাকারিয়া শেখকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। শিশুটির নিরাপত্তা ও মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।