জুমবাংলা ডেস্ক : ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশে ঋতুর পালাবদলে এখন শুরু হয়েছে শরৎকাল। শরৎ মানেই নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা আর কাশফুলের শুভ্রতা। প্রকৃতিতে যখন শরৎকাল আসে, তখন কাশফুলই জানিয়ে দেয় এর আগমনী বার্তা।
পালকের মতো নরম এবং ধবধবে সাদা রঙের কাশফুল সাধারণত গ্রামের খাল, বিল ও নদীর পারে দেখা গেলেও, এখন রাজধানীর আশেপাশের অনেক এলাকায় দোল খাচ্ছে ঘন কাশফুল। আর শ্বেত শুভ্র এই কাশফুলের দোলায় সবারই মন আন্দোলিত হয়ে ওঠে। এ কারণেই করোনার বন্দী জীবন থেকে মুক্ত হয়ে রাজধানীর হাজারও মানুষ প্রতিদিন ভীড় করছে এসব স্থানে।
তবে, এবারই প্রথম প্রশাসনের কেন্দ্রস্থল বাংলাদেশ সচিবালয়ে দেখা যাচ্ছে কাশের সমারোহ। সচিবালয়ের একটি বড় অংশ জুড়েই বিস্তার ঘটেছে কাশ বনের।
মূলত, যুবলীগ নেতা জি কে শামীমের ঠিকাধারী প্রতিষ্ঠান জি কে বি অ্যান্ড কোম্পানি কর্তৃক সচিবালয়ে নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই প্রকল্প স্থান পুরোটাই কাশবনে পরিণত হয়েছে।
জি কে শামীমের প্রতিষ্ঠান নির্মিত সচিবালয়ের বহুতল ভবন দুটির একটি হচ্ছে অর্থ মন্ত্রণালয় ভবন। যার নির্মাণে ব্যয় ধার্য করা হয়েছিলো ১৫০ কোটি টাকা। এ ভবনের প্রায় ৭০ ভাগ কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে।
আর অপরটি হচ্ছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন ভবন। যার নির্মাণ ব্যয় ধরা ছিলো ৪২০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। এ প্রকল্পের পাইলিংসহ প্রাথমিক কাজ চলছিলো। এই প্রকল্প স্থান জুড়েই এখন কাশফুল, লতা, গুল্ম বেড়ে উঠেছে।
২০১৯ সালের ২৮ মার্চ এ প্রকল্পটি নিয়ে সরকারের চুক্তি হয় জিকে অ্যান্ড বি কোম্পানির সঙ্গে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ব্যবহারের জন্য দু বছর সময় দিয়ে ২০ তলা ভবনটি নির্মিত হওয়ার কথা থাকলেও ভবনের পাইলিংকালেই বন্ধ হয়ে যায় এটি।
প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু সচিবালয়ে এমন কাশবন দেখে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম সচিব রসিকতা করে বলেন, জিকে শামীমের করা ওই ভবনের চেয়ে কাশবনই ভাল। তার জানালা দিয়ে কাশফুলের দিকে তাকিয়ে সময় সংবাদকে জানান, সারাদিনের কাজের ক্লান্তি যেন দূর হয়ে যায়।
প্রকল্প স্থানের এই কাশবন সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, পুরো প্রকল্প স্থান জুড়েই এখন কাশফুল, লতা, গুল্ম বেড়ে উঠেছে। ক্যাসিনো কাণ্ডে জড়িত থাকায় যুবলীগ নেতা জিকে শামীম গ্রেপ্তার হওয়ার পর ভবন নির্মান প্রকল্পটি বন্ধ হলেও প্রকল্প স্থানে পড়ে রয়েছে রড, বালি, ইট, পাথর ভাঙ্গা যন্ত্রপাতিসহ নানা নির্মাণ সামগ্রী। টিন দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে পুরো এলাকা।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, প্রকল্পটি চালু করা না হলে বা নতুন প্রকল্প করা না হলে এ অবস্থায় থাকবে প্রকল্প স্থান। তবে, সচিবালয় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কার্যক্রমের আওতায় ওখানের ঝোপ-ঝাড় জঙ্গল পরিষ্কার করা হবে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সচিবালয় বাংলাদেশ সরকারের প্রশাসনিক সদর দপ্তর। বাংলাদেশ সরকারের সকল নির্বাহী বিভাগীয় কার্য সচিবালয়েই সম্পন্ন হয়। ১৯৪৭ সালে নির্মিত একগুচ্ছ ভবন নিয়ে সচিবালয় গঠিত, যা ১৯৭১ সাল পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক সরকারের সচিবালয় হিসেবে কার্যরত ছিল। প্রধানত এখানেই সরকারের সকল নীতি নির্ধারণী সংস্থা অবস্থিত।
উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালের জানুয়ারির শেষ নাগাদ সম্প্রসারিত একটি মন্ত্রিপরিষদ গঠিত হলে ১৯টি মন্ত্রণালয় সমন্বয়ে সচিবালয়টিও পুনর্গঠিত হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।