বরেণ্য সংগীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন রাষ্ট্রীয় সম্মাননা পেলেন। শিল্পীর জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ সম্মাননা পান গানের জগতের এ উজ্জ্বল নক্ষত্র।
রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ঘড়ির কাঁটায় তখন রাত ৮টা। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে জাতীয় শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে জমে উঠেছে আবেগ, ভালোবাসা আর শ্রদ্ধার এক অভূতপূর্ব মিলনমেলা।
মঞ্চে তখন বাংলা গানের পাখি, ছয় দশক ধরে যিনি সংগীতকে করেছেন সমৃদ্ধ, কিংবদন্তি সাবিনা ইয়াসমীন। ৫৪ বছরের সংগীত জীবনে ১৬ হাজারেরও বেশি গান গাওয়া এই শিল্পী গ্রহণ করেন রাষ্ট্রীয় সম্মাননা।
এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আবদুর রশীদ, বিএনপির সালাউদ্দিন আহমেদসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসও পাঠিয়েছেন বিশেষ বার্তা।
স্বাগত বক্তব্যে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ‘যার গান শুনে শুনে আমরা সময়ের সঙ্গে আগামীর পথে হেঁটেছি, যার গান প্রাণে শিহরণ এনেছে, আপ্লুত করেছে, অভিভূত করেছে তিনি বাংলা গানের পাখি সাবিনা ইয়াসমীন। স্বনামখ্যাত এ গুনী শিল্পীকে সম্মাননা প্রদান করতে পেরে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় গর্বিত ও আনন্দিত।’
সম্মাননা প্রদানের পর শুরু হয় সাবিনা ইয়াসমীনের একক সংগীত পরিবেশনা। অভিনেতা আফজাল হোসেনের সঞ্চালনায় আয়োজনে আরও ছিলেন শিল্পী খুরশীদ আলম, রফিকুল আলম, আবিদা সুলতানা, নকীব খান, ফেরদৌস আরা, পার্থ বড়ুয়া ও আগুন। গানের ফাঁকে ফাঁকে চলছিল স্মৃতিচারণ, খুনসুটি আর শ্রদ্ধায় ভেজা মুহূর্ত।
এ অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত হয় কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিনের ওপর নির্মিত ডকুমেন্টারি ‘শুধু গান গেয়ে পরিচয়’। এরপর সমবেত নৃত্য ‘গীতিময় সেই দিন চিরদিন বুঝি আর এলো না’ পরিবেশন করেন, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির নৃত্যশিল্পীরা।
১৯৫৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর, ঢাকায় এক সাংস্কৃতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন সাবিনা ইয়াসমীন। মাত্র ছয় বছর বয়সে অল পাকিস্তান স্কুল মিউজিক কম্পিটিশনে গান গেয়ে জেতেন প্রথম পুরস্কার।
১৯৬২ সালে সুরকার রবীন ঘোষের হাত ধরে ছোটদের গানে কণ্ঠ দিয়ে সংগীত জগতে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু। এরপর চলচ্চিত্রে প্লেব্যাকসহ আধুনিক, পল্লিগীতি, নজরুলগীতি, রবীন্দ্রসংগীত কিংবা গজল প্রতিটি ধারায় রেখেছেন সুরেলা স্বাক্ষর।
সর্বশেষ ২০২০ সালে কবরী পরিচালিত ‘এই তুমি সেই তুমি’ চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করেন এই সুরের নক্ষত্র।
প্রসঙ্গত, সংগীতে অবদানের জন্য এর আগে ১৯৮৪ সালে একুশে পদক, ১৯৯৬ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার এবং ক্যারিয়ারে ১৪ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন গুণী এই শিল্পী।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।