সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : নতুন সড়ক আইন সংশোধনের দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘট পালন করছেন চালক ও পরিবহন শ্রমিকরা। অঘোষিত এই ধর্মঘটে সিরাজগঞ্জে বন্ধ রয়েছে দূরপাল্লা ও অভ্যন্তরীণ রুটে বাস চলাচল। বুধবার (২০ নভেম্বর) সকাল থেকে পরিবহন শ্রমিকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট পালন করছেন সিরাজগঞ্জে।
চলমান ধর্মঘটের মাঝে সকাল ৯টার দিকে জেলার এম এ মতিন কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে কথা হয় বাসচালক বাবু শেখের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘না খেয়ে মরতে রাজি আছি, কিন্তু বাস চালাতে রাজি নই। সড়ক দুর্ঘটনা ইচ্ছে করে হয় না, হঠাৎ করেই হয়ে থাকে। কিন্তু সরকার যে আইন করেছে, তাতে শ্রমিকরা বিপদে পড়েছে। জরিমানা ও জেলের বিধান রাখা হয়েছে। জরিমানার টাকা শ্রমিকরা কোথায় পাবে? এটা মানা সম্ভব না। তাই বাধ্য হয়ে গাড়ি চালানো বন্ধ রেখেছি।’
বাসযাত্রী আবুল হোসেন বলেন, ‘শাহজাদপুর কলেজে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়েছি। বাসস্ট্যান্ডে এসে দেখি বাস বন্ধ। এখন তো দেখি যাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। বাস বন্ধের ঘোষণা আগে থেকে থাকলে এ সমস্যায় পড়তে হতো না।’
সিরাজগঞ্জ মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক দুলাল শেখ দুলু বলেন, ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ সংশোধনসহ নয় দফা দাবিতে শ্রমিকরা নিজেই থেকে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন। তাঁরা মালিকের কাছে গাড়ির চাবি হস্তান্তর করছেন গাড়ি চালাবেন না বলে। শ্রমিকরা না চাইলে তো জোর করে গাড়ি চালানো যাবে না।’
উল্লেখ্য, নতুন সড়ক আইন সংশোধনসহ ৯ দফা দাবিতে মঙ্গলবার এ কর্মসূচি ঘোষণা করে বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। পূর্বঘোষণা ছাড়া আচমকা এই ধর্মঘটের ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ট্রাক-কাভার্ডভ্যান পণ্য পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক রুস্তম আলীসহ পরিষদের তিন নেতার সঙ্গে বৈঠক করেন।
তবে সিদ্ধান্ত ছাড়াই বৈঠক শেষ হয়েছে। ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব তাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, কাল (আজ) সন্ধ্যায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঐক্য পরিষদের নেতাদের নিয়ে আবার বসবেন। তবে আমরা যে কর্মসূচির ডাক দিয়েছি সেটি চলবে।
এর আগে বিকালে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) কর্মকর্তারা। ওই বৈঠকেও আইন কার্যকর না করার দাবি জানিয়েছেন পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতারা।
গত ১ নভেম্বর নতুন সড়ক পরিবহন আইন কার্যকর করে সরকার। তবে নতুন আইনে মামলা ও শাস্তি দেয়ার কার্যক্রম মৌখিকভাবে দুই সপ্তাহ পিছিয়ে দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।
গত বৃহস্পতিবার সেই সময়সীমা শেষ হয়েছে। রবিবার সড়কমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, ওইদিন থেকেই আইন কার্যকর শুরু হয়েছে। এরপর থেকেই ঘোষিত-অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘট ডাকতে শুরু করেছে পরিবহন সংগঠনগুলো।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।