কলেজ ছাত্রী নিঝুমকে হত্যা করে পুকুরে লাশ ফেলে দেয় সাবেক প্রেমিক

কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) প্রতিনিধি: নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে সাবেক প্রেমিকা মুশফিরাত জাহান নিঝুমকে (১৯) কৌশলে ডেকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ পুকুরে ফেলে রেখেছিল জুয়েল রানা (২১)।

শুক্রবার দুপরে নীলফামারী চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবাববন্দিতে এই তথ্য দিয়েছে প্রেমিক জুয়েল। এরপর আদালত তাকে জেলা কারাগারে প্রেরণ করে।

কিশোরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ ও মামলার তদন্ত কর্মকতা এসআই আব্দুল আজিজ আজ এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, নিঝুম নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের মধ্য রাজীব ব্রাহ্মণপাড়া গ্রামের গোলাম মর্তুজার মেয়ে। সে নীলফামারী সরকারি মহিলা কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী ছিল। অপর দিকে, হত্যাকারী জুয়েল রানা একই উপজেলার মধ্যরাজিব চ্যাংমারী গ্রামের আনছার আলীর ছেলে।

জুয়েল রানা নিঝুমকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে জানায়, ২০১৭-২০১৮ সালে নিঝুমের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পরে নিঝুম বাজেডুমরিয়া গ্রামের হেলাল মেম্বারের ছেলে তৌফিকের (২০) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। এই  কারণে নিঝুমকে হত্যার পরিকল্পনা করে জুয়েল রানা।

পরিকল্পনা অনুযায়ী ২৬ জুলাই রাত দেড়টার দিকে নিঝুমকে তাদের বসতবাড়ীর পূর্ব পার্শ্বের সুপারি বাগানে ডেকে নেন জুয়েল। এ সময় জুয়েল তৌফিকের বিষয়ে কথা বলার চেষ্টা করে এবং তৌফিকের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতে নিঝুমকে চাপ দেয়। নিঝুম তার কথায় রাজি না হয়ে জুয়েলের গালে চড় মারে। এতে জুয়েল ক্ষিপ্ত হয়ে নিঝুমের গলা চেপে ধরে হত্যা করে সুপারি বাগান সংলগ্ন পুকুরে ফেলে চলে যায়।

গত সোমবার (২৭ জুলাই) বেলা ৩টার দিকে খবর পাওয়া যায় মুশফিরাত জাহান নিঝুমের মৃতদেহ তার বাড়ির পাশের পুকুরের হাঁটু পানিতে পড়ে আছে। পরে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে।

পরিবারের লোকজন এ ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে প্রচারণা চালালেও পুলিশ কিছু আলামতের ভিত্তিতে বিভিন্ন তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টা ৩০ মিনিটে নিঝুমের সাবেক প্রেমিক জুয়েলকে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে।

শুক্রবার মেয়ের বাবা মর্তুজা হোসেন বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস,আই আব্দুর আজিজ জানান, নীলফামারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) অশোক কুমার পালের দিক নির্দেশনায় এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা উন্মোচন করা সম্ভব হয়েছে।