মো. শামীম হোসেন বাবু, কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) প্রতিনিধি: আলুর বীজ সংরক্ষণের জন্য অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রতিবাদে মুক্তা হিমাগারের মালিকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ করেছে আলু চাষিরা।
মঙ্গলবার সকাল ১১টার সময় নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার নিতাই ইউনিয়নের মুক্তা হিমাগারের সামনে এ বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ করেন তারা। এ ঘটনায় স্টোরের সামনে উত্তেজনা বিরাজ করলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রতিবাদ সমাবেশে কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার নিতাই ইউনিয়নের মেসার্স মুক্তা হিমাগারে ইউনিট-২ তে প্রায় ৫ হাজার কৃষক এক লাখ ২৫ হাজার বস্তা আলু সংরক্ষণ করে। হিমাগারে আলু সংরক্ষণের আগে হিমাগার কর্তৃপক্ষ মাইকিং করে পার বস্তা ২২০ টাকা করে ভাড়া নেওয়ার কথা বলে। কিন্তু এখন কৃষকরা আলু ফিরিকুল করতে গেলে হিমাগার কর্তৃপক্ষ প্রতি বস্তায় ২৭০ টাকা থেকে ২৮০ টাকা করে ভাড়া আদায় করছে। গতকাল সোমবার বিকালে আজিজুল ইসলাম নামে এক কৃষক ৫০ বস্তা আলু ফিরিকুল করতে গেলে অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করলে ওই কৃষক প্রতিবাদ করে এসময় হিমাগারের লোকজন ওই কৃষকের উপর হামলা চালায় এবং ওই কৃষককে তুলে নিতে চায়। পরে ওই কৃষক বিষয়টি অন্যান্য কৃষককে জানালে উপজেলার সমস্ত আলুচাষীরা মিলে মঙ্গলবার সকালে হিমাগারের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করে অতিরিক্ত ভাড়া কমানো দাবিতে এবং কৃষকের উপর হামলার বিচারের দাবিতে বিচার চেয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, কৃষক বাবুল হোসেন, আব্দুল মতিন, সাফিউল ইসলাম, সেনামিয়া ও বাদশা মিয়া।
হিমাগারে বীজ আলু সংরক্ষনকারী কৃষক আফজাজুল ইসলাম বলেন, আমি ২২০ টাকা ভাড়ার কথা শুনে মুক্তা হিমাগারে ৫০ বস্তা বীজ আলু সংরক্ষণ করি। কিন্তু গতকাল আমি আলু ফিরিকুল দিতে গেলে হিমাগার কতৃপক্ষ আমার কাছে ৬০ কেজি প্রতি বস্তা ২৮৫ টাকা করে দাবি করে।
একই অভিযোগ করেন কৃষক আব্দুল মতিন, বাদশা মিয়া, সোহরাব মিয়া, দিপু মিয়া সহ শতাধিক কৃষক।
উপজেলা কৃষি কর্মকতা হাবিবুর রহমান বলেন, সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা যাবে না। তারপরও যদি হিমাগার কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে তাহলে কৃষকরা লিখিত অভিযোগ দিলে হিমাগারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কিশোরগঞ্জ থানার অফিসার ইনর্চাজ এম হারুন অর রশিদ বলেন, হিমাগার কর্তৃপক্ষ কৃষকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশকে ঘিরে যাতে করে কোনও ধরনের অপ্রতিকর ঘটনা না ঘটে বা আইন শৃঙ্খলার অবনতি না হয় সেজন্য পুলিশ পাঠিয়ে প্ররিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে মুক্তা হিমাগারের মালিক শরীফুল ইসলাম বাবরুর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, সরকারিভাবে নির্ধারিত ৪ টাকা ৬০ পয়সা কেজি দরে প্রতি বস্তা আলুর ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এবারে ৫০ কেজির ছোট বস্তায় বীজ আলু সংরক্ষণের জন্য সরকার থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিজিএমসির ১৭টি রাইস মিল ছাড়াই অন্যান্য মিলে ৫০ কেজি বস্তা পাওয়া যায়নি। তাই অনিচ্ছাকৃত বড় বস্তায় ৬০ কেজি থেকে ৮০ কেজি পর্যন্ত বীজ আলু সংরক্ষণ করা হয়েছে। সে অনুযায়ী ৪ টাকা ৬০ পয়সা হিসেবে যা রেট হচ্ছে তাই নেয়া হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল কালাম আজাদ জুমবাংলাকে বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি এ ব্যাপারে কৃষক এবং মালিক পক্ষের সাথে কথা বলে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করব।