জুমবাংলা ডেস্ক : কুষ্টিয়ায় কিশোর-কিশোরী ক্লাবের শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দের টাকা আত্মসাতে মেতেছেন জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নূরে সফুরা ফেরদৌস। এমনকি নাস্তার টাকাও বাদ দিচ্ছেন না। এছাড়া দুর্নীতি আর অনিয়মের আরো অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
এসব অপকর্মে তাকে সহযোগিতা করছেন মহিলা বিষয়ক অধিদফতরের কিশোর-কিশোরী ক্লাবের জেন্ডার প্রমোটার, ফিল্ড সুপারভাইজারসহ কয়েকজন কর্মকর্তা। যতই দিন যাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাল্লা ততই ভারী হচ্ছে।
জানা গেছে, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় কিশোর-কিশোরী ক্লাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। প্রতিটি ক্লাবে ৩০ জন করে শিক্ষার্থী রয়েছে। এসব ক্লাবের শিক্ষার্থীদের জন্য নাস্তা বাবদ জনপ্রতি ৩৫ টাকা করে বরাদ্দ দিচ্ছে সরকার। কিন্তু শিক্ষার্থীদের দেয়া হচ্ছে ১০-১৫ টাকার নাস্তা। আবার দিনে ৮-১০ জন শিক্ষার্থীকে নাস্তা দিয়ে বিল করা হচ্ছে ৩০ জনের। এতে প্রতি মাসে এক লাখ ৯ হাজার ২০০ টাকা বরাদ্দের মধ্যে ৬২ হাজার ৪০০ টাকা পকেটে ঢুকাচ্ছেন মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নূরে সফুরা ফেরদৌস।
শুক্র ও শনিবার সরেজমিনে বেশ কয়েকটি কিশোর-কিশোরী ক্লাবে গিয়ে এসব অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। হাটশহরিপুর ইউনিয়নের দি ওল্ড হাই স্কুলের ক্লাবে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে ৩০ জনের পরিবর্তে উপস্থিত আছে মাত্র আটজন। তাদের নাস্তা হিসেবে দেয়া হয়েছে ডিম, লাড্ডু ও পাউরুটি। যার দাম সর্বোচ্চ ১৫ টাকা।
বটতৈল ইউনিয়নের সঙ্গীতশিল্পী মৌলি জানান, গত শুক্রবার ৩০ জনের পরিবর্তে মাত্র একজন শিক্ষার্থী ক্লাবে এসেছিল। আইলচারা ইউনিয়নের আবৃত্তি শিক্ষক নওরীন নেহা জানান, ১০ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত হয়েছিল। শুধু তাদেরই নাস্তা ও মাস্ক দেয়া হয়েছে।
আলামপুর ইউনিয়নের কিশোর-কিশোরী ক্লাবের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের ১০-১৫ টাকার নাস্তা দেয়া হয়। মাঝে মাঝে তো এগুলোও দেয়া হয় না। করোনার সময় মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার দেয়ার কথা থাকলেও তা আমরা পাইনি।
কিশোর-কিশোরী ক্লাবের জেন্ডার প্রমোটার রাকিবুল হাসান বলেন, বিষয়টি আামাদের জেলার ডিডি ম্যাডাম দেখছেন। আমি কিছু বলতে পারব না।
অভিযুক্ত মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নূরে সফুরা ফেরদৌস বলেন, নিয়ম অনুযায়ীই নাস্তা দেয়া হচ্ছে। নাস্তার বিল নিতে গেলে হিসাররক্ষণ অফিসে ঘুষ দিতে হয়। এছাড়া ক্লাব পরিচালনারও অনেক খরচ আছে।
তিনি আরো বলেন, ৩০ জনের জন্যই নাস্তা কেনা হয়। অনেক সময় ২০-২৫ জন উপস্থিত হয়। তখন যারা থাকে না তাদের নাস্তা বাকিরা খেয়ে নেয়।
২০১৯ সালের ২৪ নভেম্বর থেকে সারাদেশে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে কিশোর-কিশোরী ক্লাবের কার্যক্রম শুরু হয়। এ কার্যক্রমের আওতায় প্রতিটি উপজেলায় দুইজন করে ফিল্ড সুপারভাইজার, তিনজন করে জেন্ডার প্রমোটার, ইউনিয়ন ও পৌরসভার জন্য সঙ্গীত ও আবৃত্তি শিক্ষক নিয়োজিত আছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।