Close Menu
Bangla news
    Facebook X (Twitter) Instagram
    Bangla news
    • প্রচ্ছদ
    • জাতীয়
    • অর্থনীতি
    • আন্তর্জাতিক
    • রাজনীতি
    • বিনোদন
    • খেলাধুলা
    • শিক্ষা
    • আরও
      • লাইফস্টাইল
      • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
      • বিভাগীয় সংবাদ
      • স্বাস্থ্য
      • অন্যরকম খবর
      • অপরাধ-দুর্নীতি
      • পজিটিভ বাংলাদেশ
      • আইন-আদালত
      • ট্র্যাভেল
      • প্রশ্ন ও উত্তর
      • প্রবাসী খবর
      • আজকের রাশিফল
      • মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার
      • ইতিহাস
      • ক্যাম্পাস
      • ক্যারিয়ার ভাবনা
      • Jobs
      • লাইফ হ্যাকস
      • জমিজমা সংক্রান্ত
    • English
    Bangla news
    Home কিশোরীদের স্বাস্থ্য সচেতনতা:সুস্থ ভবিষ্যতের বুনিয়াদ
    লাইফস্টাইল ডেস্ক
    লাইফস্টাইল

    কিশোরীদের স্বাস্থ্য সচেতনতা:সুস্থ ভবিষ্যতের বুনিয়াদ

    লাইফস্টাইল ডেস্কMd EliasJuly 24, 202514 Mins Read
    Advertisement

    সকালের ক্লাস শুরু হওয়ার আগে স্কুলের উঠোন। একদল কিশোরী গুচ্ছ গুচ্ছ হয়ে দাঁড়িয়ে গল্প করছে। হঠাৎই ষোলো বছরের সুমাইয়া কাত হয়ে পড়ল মাটিতে, চোখে অন্ধকার দেখে। বন্ধুরা তাড়াহুড়ো করে তাকে উঠিয়ে বসালেও কেউ জানে না কেন এমন হলো। শুধু রক্তশূন্যতার কথা জানা থাকলে, সুমাইয়ার মতো হাজারো কিশোরী প্রতিদিন এড়াতে পারতো এমন অস্বস্তিকর পরিস্থিতি। বাংলাদেশের প্রাণবন্ত শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত, কৈশোরকালীন স্বাস্থ্য সচেতনতার এই অভাবই ভবিষ্যত প্রজন্মের সুস্থতার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিশোরীদের স্বাস্থ্য সচেতনতা শুধু ব্যক্তিগত সুস্থতার বিষয়ই নয়, এটি একটি জাতির সামগ্রিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির মৌলিক ভিত্তি গড়ে তোলে।

    কিশোরীদের স্বাস্থ্য সচেতনতা

    বাংলাদেশে ১০-১৯ বছর বয়সী কিশোরীদের সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ (বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, ২০২৩ আনুমানিক)। এই বিপুল জনগোষ্ঠীর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের এই সন্ধিক্ষণে সঠিক স্বাস্থ্য জ্ঞান ও অভ্যাস গড়ে তোলা ভবিষ্যতের সুস্থ মা, কর্মক্ষম নাগরিক এবং আত্মবিশ্বাসী নেতৃত্ব তৈরির একমাত্র পথ। অথচ, লজ্জা, সংস্কারের বেড়াজাল, তথ্যের অভাব এবং সঠিক স্বাস্থ্যসেবার সুযোগের অভাবে অনেক সম্ভাবনাময়ী জীবন ঝুঁকির মুখে পড়ছে। আসুন, আলোকিত করি সেই অন্ধকার গলি, গড়ে তুলি একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের ভিত্তি।

    কিশোরীদের স্বাস্থ্য সচেতনতা কেন এতটাই জরুরি? (বৈজ্ঞানিক ও সামাজিক দৃষ্টিকোণ)

    কৈশোর শুধু স্কুল-কলেজের গণ্ডি পেরোনোর সময় নয়; এটি জীবনের সবচেয়ে গতিশীল ও সংবেদনশীল বিকাশের পর্যায়। মেয়েদের শরীরে হরমোনের পরিবর্তন, প্রজনন অঙ্গের বিকাশ, হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি, মস্তিষ্কের গঠন পূর্ণতা পাওয়া – সবকিছুই ঘটে এই সময়ে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মতে, এই সময়ে গড়ে তোলা স্বাস্থ্যকর অভ্যাসগুলো (পুষ্টি, ব্যায়াম, মানসিক স্বাস্থ্য যত্ন) সারাজীবনের সুস্থতার জন্য নির্ধারক ভূমিকা রাখে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, কৈশোরে পর্যাপ্ত আয়রন ও ক্যালসিয়াম গ্রহণ পরবর্তী জীবনে রক্তশূন্যতা ও অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমায়।

    বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে চ্যালেঞ্জগুলো প্রকট:

    1. পুষ্টির ঘাটতি: জাতীয় পুষ্টি সেবা (এনএনএস) এর সর্বশেষ তথ্য (২০২২) অনুযায়ী, বাংলাদেশে ১৫-১৯ বছর বয়সী কিশোরীদের মধ্যে প্রায় ৪০% রক্তশূন্যতায় ভোগে, মূলত আয়রনের ঘাটতির কারণে। এছাড়াও ভিটামিন-এ, ভিটামিন-ডি, জিংক এবং ক্যালসিয়ামের ঘাটতিও ব্যাপক। স্কুলে টিফিনের নামে চিপস-বিস্কুট, বাড়িতে ভাতের উপর অত্যধিক নির্ভরতা এর পেছনে বড় কারণ।
    2. প্রজনন স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে অজ্ঞতা ও ট্যাবু: মাসিক স্বাস্থ্যবিধি (Menstrual Hygiene Management – MHM) এখনও অনেক পরিবারে নিষিদ্ধ আলোচনার বিষয়। বাংলাদেশ সরকারের ‘জাতীয় কিশোর-কিশোরী স্বাস্থ্য কৌশল ২০১৭-২০৩০’ এ স্বীকার করা হয়েছে যে ৫৪% কিশোরী মাসিক শুরুর আগে এ সম্পর্কে কোনো তথ্য পায় না। অপরিচ্ছন্ন কাপড় ব্যবহার, স্কুলে পর্যাপ্ত ও স্বাস্থ্যকর স্যানিটেশন সুবিধার অভাব (শৌচাগার, বিশুদ্ধ পানি, বর্জ্য নিষ্কাশন) সংক্রমণ ও জটিলতার ঝুঁকি বাড়ায়।
    3. মানসিক স্বাস্থ্যের অবহেলা: পরীক্ষার চাপ, পারিবারিক প্রত্যাশা, দৈহিক পরিবর্তন নিয়ে উদ্বেগ, সামাজিক চাপ, অনলাইন বুলিং – কিশোরীদের মানসিক চাপের কারণ অনেক। অথচ মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলার সংস্কৃতি ও পরামর্শ সেবার সুযোগ অত্যন্ত সীমিত। মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক জাতীয় জরিপ (২০১৮-১৯) ইঙ্গিত দেয় যে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে বিষণ্নতা ও উদ্বেগের লক্ষণ উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
    4. অতিরিক্ত ওজন ও স্থূলতা: শহুরে জীবনযাত্রা, জাঙ্ক ফুডের সহজলভ্যতা এবং শারীরিক ক্রিয়াকলাপের অভাবের কারণে কিশোরীদের মধ্যে অতিরিক্ত ওজন ও স্থূলতা বাড়ছে, যা ভবিষ্যতে ডায়াবেটিস, হৃদরোগের মতো অসংক্রামক রোগের (NCDs) ঝুঁকি বাড়ায়।
    5. সাইবার বুলিং ও অনলাইন নিরাপত্তা: ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রগতির সাথে সাথে ইন্টারনেটে কিশোরীদের উপস্থিতি বেড়েছে। তবে এর সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে অনলাইন হয়রানি, ভুয়া প্রোফাইল তৈরি, ব্যক্তিগত ছবি অপব্যবহারের মতো ঘটনাও, যা গভীর মানসিক আঘাতের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

    ডাঃ শারমিন ইয়াসমিন, একজন বিশিষ্ট কিশোর স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং বারডেম জেনারেল হাসপাতালের কনসালট্যান্ট, তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন: “আমার চেম্বারে প্রতিদিন অসংখ্য কিশোরী আসেন শুধুমাত্র এই কারণে যে তাদের ছোটখাটো স্বাস্থ্য সমস্যা বা দৈহিক পরিবর্তনগুলো নিয়ে তারা পরিবারে বা বন্ধুদের সাথে খোলামেলা আলোচনা করতে পারেন না। একটি সাধারণ ফাঙ্গাল ইনফেকশন অনাদরে থেকে জটিল রূপ নেয়, পুষ্টিহীনতা থেকে দুর্বলতা, মনোযোগের অভাব হয়। সবচেয়ে বড় বিষয়, প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে সঠিক জ্ঞানের অভাবে অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণ, অনিরাপদ গর্ভপাতের মতো ভয়াবহ পরিস্থিতিও তৈরি হয়। কিশোরীদের স্বাস্থ্য সচেতনতা শুধু চিকিৎসা নয়; এটি তাদের ক্ষমতায়ন, শিক্ষা অর্জন এবং নিরাপদ ভবিষ্যৎ গড়ার চাবিকাঠি।”

    প্রজনন স্বাস্থ্য শিক্ষা: অজানাকে জানার শক্তি (প্রকৃত উদাহরণ ও ব্যবহারিক দিকনির্দেশনা)

    প্রজনন স্বাস্থ্য শিক্ষা শুধু প্রজননতন্ত্রের জৈবিক কার্যক্রম নয়; এটি শরীরের মালিকানা, সম্মতি, নিরাপত্তা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকার সম্পর্কে জানা। এই শিক্ষা কিশোরীদেরকে যৌন হয়রানি ও শোষণ থেকে রক্ষা করতে, তাদের দেহ সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা গড়ে তুলতে এবং সুস্থ যৌন জীবনযাপনের ভিত্তি তৈরি করতে সাহায্য করে।

    • মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা (MHM): এটি শুধু স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করা নয়; এটি একটি সামগ্রিক প্রক্রিয়া।

      • সঠিক পণ্য নির্বাচন ও ব্যবহার: কাপড়, ডিসপোজেবল প্যাড, মেনস্ট্রুয়াল কাপ – প্রতিটির সুবিধা-অসুবিধা ও ব্যবহারবিধি জানা জরুরি। বাংলাদেশ সরকারের ‘নিরাপদ স্বাস্থ্যব্যবস্থা কর্মসূচি’ বিভিন্ন স্কুলে সাশ্রয়ী মূল্যে স্যানিটারি প্যাড সরবরাহ ও ব্যবহার প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।
      • পরিচ্ছন্নতা: নিয়মিত (৪-৬ ঘন্টা পর পর) প্যাড/কাপড় পরিবর্তন, সাবান-পানি দিয়ে যৌনাঙ্গ পরিষ্কার করা, ব্যবহৃত প্যাড/কাপড় সঠিকভাবে (মোড়কজাত করে) ফেলা।
      • ব্যথা ব্যবস্থাপনা: হালকা গরম সেক, হালকা ব্যায়াম (হাঁটা, ইয়োগা), প্যারাসিটামল (ডাক্তারের পরামর্শে) নেওয়া যেতে পারে। তীব্র ব্যথা চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার লক্ষণ।
      • স্কুল ও পাবলিক স্পেসে সুবিধা: পর্যাপ্ত শৌচাগার, বিশুদ্ধ পানি, বর্জ্য ফেলার ব্যবস্থা (ইনসিনারেটর বা বদ্ধ ডাস্টবিন) এবং জরুরি প্যাডের ব্যবস্থা থাকা অপরিহার্য। UNICEF বাংলাদেশ স্কুল পর্যায়ে MHM সুবিধা উন্নয়নে ব্যাপকভাবে কাজ করছে।
      • ট্যাবু ভাঙা: মাসিক স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এটি নিয়ে খোলামেলা আলোচনা, প্রশ্ন করা এবং সঠিক তথ্য আদান-প্রদান করা উচিত পরিবার ও স্কুলে।
    • শারীরিক পরিবর্তন বোঝা: ব্রেস্ট ডেভেলপমেন্ট, শরীরে চর্বি জমা, ব্রণ হওয়া, যৌনাঙ্গে লোম গজানো – এগুলো সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। এই পরিবর্তনগুলো নিয়ে উদ্বিগ্ন হলে বিশ্বস্ত অভিভাবক, স্কুল কাউন্সেলর বা চিকিৎসকের সাথে কথা বলা উচিত। ইন্টারনেটে ভুল তথ্যের ভীড়ে বিভ্রান্ত হওয়া থেকে সতর্ক থাকতে হবে।

    • সুরক্ষা ও সম্মতি: নিজের শরীর নিজের। কারো স্পর্শে অস্বস্তি লাগলে ‘না’ বলার অধিকার আছে। ‘ভালো স্পর্শ-খারাপ স্পর্শ’ (Good Touch-Bad Touch) এর পার্থক্য বোঝা এবং বিশ্বস্ত কারো কাছে তা জানানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যৌন হয়রানি বা নির্যাতনের শিকার হলে অবশ্যই পরিবার, স্কুল কর্তৃপক্ষ বা ‘১০৯’ জাতীয় হেল্পলাইনে সাহায্য চাইতে হবে। বাংলাদেশে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন আছে, যা কিশোরীদের সুরক্ষা দেয়।

    রিয়েল লাইফ ইমপ্যাক্ট: খুলনার একটি গ্রামের স্কুলে ‘কিশোরী স্বাস্থ্য ক্লাব‘ চালু হয়েছিল। সেখানে মাসিক স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিষয়ে নিয়মিত আলোচনা হতো। সেখানে অংশ নেওয়া রুমা (১৪) বলে, “আগে মাসিকের সময়ে পরিষ্কার কাপড় ব্যবহার করতাম, কিন্তু কখন কতক্ষণ রাখতে হয়, কীভাবে ধুতে হয় জানতাম না। বারবার ইনফেকশন হতো। ক্লাবে শিখলাম স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার করতে, পরিষ্কার থাকতে। এখন স্কুল কামাই করি না, ব্যথাও কম লাগে।” এই উদ্যোগের ফলে স্কুলে কিশোরীদের উপস্থিতি ২০% বেড়েছে।

    পুষ্টি: শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জ্বালানি (বাংলাদেশি খাদ্যাভ্যাসের সাথে প্রাসঙ্গিক টিপস)

    কৈশোরকালে দ্রুত বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য পুষ্টির চাহিদা অনেক বেশি। সঠিক পুষ্টি শুধু শারীরিক শক্তি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় না, মস্তিষ্কের কার্যকারিতা, মনোযোগ ও মানসিক সুস্থতার জন্যও অপরিহার্য।

    প্রধান পুষ্টি উপাদান ও উৎস (বাংলাদেশি প্রেক্ষাপটে):

    পুষ্টি উপাদানকেন দরকার?সহজলভ্য বাংলাদেশি খাদ্য উৎসদৈনিক চাহিদার আনুমানিক পরিমাণ (কিশোরী)
    আয়রনরক্ত তৈরিতে, এনার্জি, রক্তশূন্যতা রোধলাল মাংস (অল্প), কলিজা, ডিমের কুসুম, ডাল (মসুর, মুগ), সবুজ শাক (পালং, লালশাক), খেজুর, আয়রন-ফোর্টিফায়ড লবণ১৫-১৮ মিগ্রা
    ক্যালসিয়ামহাড় ও দাঁতের গঠন, পেশী কাজদুধ, দই, পনির, ছোট মাছ (মলা, ঢেলা) হাড়সহ, ব্রকলি, ঢেঁড়স, ক্যালসিয়াম-ফোর্টিফায়ড খাবার১৩০০ মিগ্রা
    প্রোটিনমাংসপেশী, টিস্যু মেরামত, এনজাইম ও হরমোনমাছ, মুরগি, ডিম, ডাল, বাদাম (চিনাবাদাম), দুধ ও দুগ্ধজাত দ্রব্য, সয়াবিন৪৬ গ্রাম
    ভিটামিন-এদৃষ্টিশক্তি, রোগ প্রতিরোধ, ত্বক সুস্থগাজর, মিষ্টি কুমড়া, আম, পেঁপে, কাঁচা পেঁপে, সবুজ শাক, ডিমের কুসুম, কলিজা৭০০ মাইক্রোগ্রাম RAE
    ভিটামিন-ডিক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য, হাড়ের স্বাস্থ্যসূর্যালোক (প্রধান উৎস!), তৈলাক্ত মাছ (ইলিশ, স্যামন), ডিমের কুসুম, ফোর্টিফায়ড দুধ৬০০ IU (১৫ মাইক্রোগ্রাম)
    জিংকরোগ প্রতিরোধ, ক্ষত নিরাময়, কোষ বৃদ্ধিমাংস, ডাল, বীজ (কুমড়ার বীজ), বাদাম, গোটা শস্য, দুগ্ধজাত দ্রব্য৯ মিগ্রা
    ফাইবারহজমশক্তি ঠিক রাখা, ওজন নিয়ন্ত্রণশাকসবজি, ফলমূল (পেয়ারা, আম, কলা), ডাল, ওটস, গোটা শস্যের আটা (চাল, গম)২৬ গ্রাম

    ব্যবহারিক পুষ্টি টিপস:

    1. সকালের নাশতা বাদ দেওয়া নয়: দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার। রুটি-ডিম, দুধ-কলা, ওটস, পোহা – যেকোনো কিছু খেয়ে স্কুলে যাওয়া।
    2. রঙিন খাবার: প্রতিদিনের খাবারে রং বাড়ান। সবুজ শাক, লাল-কমলা ফল (পেঁপে, গাজর), হলুদ ডাল – প্রতিটি রং আলাদা পুষ্টি দেয়।
    3. আয়রন বুস্টার: ডাল বা শাকের সাথে ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ খাবার (লেবু, আমলকী, টমেটো, কাঁচা মরিচ) খেলে আয়রন শোষণ বাড়ে।
    4. জাঙ্ক ফুডের লোভ সামলানো: চিপস, কোল্ড ড্রিংক, অতিরিক্ত তেলে ভাজা খাবার শক্তি দেয় কিন্তু পুষ্টি দেয় না। সপ্তাহে এক-দুইবার সীমিত পরিমাণে খাওয়া যেতে পারে।
    5. পর্যাপ্ত পানি: দিনে অন্তত ৮ গ্লাস (২ লিটার) বিশুদ্ধ পানি পান করা। পানির বোতল সবসময় কাছে রাখুন। ডিহাইড্রেশন ক্লান্তি, মাথাব্যথা ও মনোযোগের সমস্যা তৈরি করে।
    6. স্ন্যাকস স্মার্টলি: চিপস-বিস্কুটের বদলে ফল, বাদাম, দই, সেদ্ধ ডিম বা ছোলা বেছে নিন।

    মনে রাখুন: কড়া ডায়েটিং বা একদম কম খেয়ে ওজন কমানোর চেষ্টা কিশোরীদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এটি বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত করে, হাড় দুর্বল করে এবং খাদ্যাভ্যাসের সমস্যা তৈরি করতে পারে। ওজন নিয়ে চিন্তিত হলে পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিন।

    মানসিক সুস্থতা: অদৃশ্য শক্তির যত্ন (সামাজিক চাপ ও সমাধান)

    শারীরিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি মানসিক সুস্থতাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। কৈশোর মানসিক চাপ, আবেগের উত্থান-পতন এবং পরিচয় খোঁজার সময়।

    সাধারণ মানসিক স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জ:

    • পরীক্ষার চাপ ও ভবিষ্যতের দুশ্চিন্তা: ভালো রেজাল্টের জন্য তীব্র প্রতিযোগিতা ও প্রত্যাশা।
    • দৈহিক পরিবর্তন ও আত্মবিশ্বাস: দেহের গঠন নিয়ে অসন্তুষ্টি, অন্যের সাথে নিজের তুলনা।
    • বন্ধুত্ব ও প্রেম-ভালোবাসা: সম্পর্কের জটিলতা, প্রত্যাখ্যানের ভয়, বুলিং।
    • পারিবারিক দ্বন্দ্ব: বাবা-মায়ের সাথে মতবিরোধ, ভাইবোনের রেষারেষি।
    • সামাজিক মিডিয়া প্রভাব: ‘পারফেক্ট’ লাইফ দেখে নিজেকে কম মনে করা, লাইক-কমেন্টের উপর নির্ভরশীলতা।
    • অনলাইন নিরাপত্তা: সাইবার বুলিং, ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস, অপরিচিতদের সাথে ঝুঁকিপূর্ণ যোগাযোগ।

    মানসিক স্বাস্থ্য সুস্থ রাখার কৌশল:

    1. কথা বলা: নিজের অনুভূতি বিশ্বস্ত কারো সাথে শেয়ার করা – বাবা-মা, ভাইবোন, প্রিয় শিক্ষক, কাছের বন্ধু বা স্কুল কাউন্সেলর। কথা বলা মানসিক বোঝা হালকা করে।
    2. নিজের জন্য সময়: প্রতিদিন কিছু সময় নিজের জন্য রাখুন – যা পছন্দ করেন তা করতে (গান শোনা, বই পড়া, আঁকা, বাগান করা, প্রার্থনা করা, শুধু নিঃশ্বাস নেওয়া)।
    3. শারীরিক কার্যকলাপ: নিয়মিত ব্যায়াম (হাঁটা, দৌড়ানো, সাইকেল চালানো, নাচ, ইয়োগা) স্ট্রেস হরমোন কমায়, এন্ডোরফিন (সুখী হরমোন) বাড়ায়।
    4. পর্যাপ্ত ঘুম: প্রতি রাতে ৮-১০ ঘন্টা গভীর ঘুম আবশ্যিক। ঘুম মস্তিষ্ককে বিশ্রাম ও পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করে। মোবাইল ফোন বিছানায় নেওয়া এড়িয়ে চলুন।
    5. সামাজিক যোগাযোগে সীমাবদ্ধতা: স্ক্রিন টাইম নির্দিষ্ট করুন। বাস্তব জীবনের বন্ধুত্ব ও কার্যকলাপকে প্রাধান্য দিন। অনলাইনে যা পোস্ট করছেন, কার সাথে যোগাযোগ করছেন – সে বিষয়ে সচেতন থাকুন। প্রাইভেসি সেটিংস চেক করুন।
    6. সাইবার বুলিং মোকাবিলা: বুলির বার্তা/কমেন্ট সেভ করুন, ব্লক করুন এবং অবশ্যই বিশ্বস্ত বড় কারো (বাবা-মা, শিক্ষক) কাছে জানান। ‘জাতীয় হেল্পলাইন ১০৯’ এও ফোন করতে পারেন। মনে রাখবেন, এটা আপনার দোষ নয়।
    7. পেশাদার সাহায্য চাইতে দ্বিধা করবেন না: যদি মনে হয় দুঃখ, উদ্বেগ, রাগ বা হতাশা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে, ঘুম বা খাওয়া-দাওয়া বিঘ্নিত হচ্ছে, স্কুলে মনোযোগ দিতে পারছেন না – একজন মনোবিদ বা কাউন্সেলরের সাহায্য নেওয়া সাহসের কাজ, দুর্বলতার নয়। অনেক স্কুলে কাউন্সেলর আছেন। সরকারি হাসপাতাল ও বেসরকারি ক্লিনিকে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা পাওয়া যায়।

    প্রতিরোধ ও সুরক্ষা: সচেতনতার ঢাল (রুটিন চেকআপ ও টিকা)

    স্বাস্থ্য সচেতনতার একটি বড় অংশ হল রোগ প্রতিরোধ করা। কৈশোরেই কিছু রুটিন স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও টিকা নেওয়া ভবিষ্যতের বড় ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা এড়াতে পারে।

    • নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা: বছরে অন্তত একবার সাধারণ স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো ভালো। এতে রক্ত পরীক্ষা (রক্তশূন্যতা, থাইরয়েড), ওজন-উচ্চতা মাপা, রক্তচাপ দেখা এবং প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে সাধারণ পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে। কোনো সমস্যা ধরা পড়লে আগেভাগেই চিকিৎসা শুরু করা যায়।
    • টিকাকরণ:
      • এইচপিভি টিকা (Human Papillomavirus Vaccine): জরায়ুমুখের ক্যান্সার সৃষ্টিকারী এইচপিভি ভাইরাস প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকর। মেয়েদের ৯-১৪ বছর বয়সে দুই ডোজে এই টিকা দেওয়ার পরামর্শ WHO এবং বাংলাদেশ সরকার দেয়। এটি নিরাপদ ও অত্যন্ত কার্যকর। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে পাওয়া যায়। (বিস্তারিত: স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের টিকাদান কর্মসূচি)
      • টিটেনাস টক্সয়েড (TT): ধনুষ্টংকার প্রতিরোধ করে। কিশোরী বয়সে বুস্টার ডোজ নেওয়া উচিত, বিশেষ করে বিয়ের আগে। স্কুল টিকাদান কর্মসূচি বা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পাওয়া যায়।
      • হেপাটাইটিস-বি টিকা: লিভার সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ। যদি আগে নেওয়া না থাকে, কিশোর বয়সে নেওয়া যেতে পারে।
    • ধূমপান, মদ্যপান ও মাদক থেকে দূরে থাকা: এই বদভ্যাসগুলো স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর, এবং কৈশোরেই এর শুরু হয়। এগুলো থেকে সম্পূর্ণ দূরে থাকাই শ্রেয়।
    • নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার: ব্যক্তিগত তথ্য (ঠিকানা, ফোন নম্বর, স্কুলের নাম, ছবি) অনলাইনে শেয়ার না করা। অপরিচিত ব্যক্তির সাথে ব্যক্তিগত আলোচনা বা দেখা করা থেকে বিরত থাকা। অস্বস্তিকর কোনো বার্তা বা কন্টেন্ট পেলে অবিলম্বে বাবা-মা বা শিক্ষককে জানানো।

    পরিবার, শিক্ষক ও সম্প্রদায়ের ভূমিকা: সহায়ক পরিবেশ গঠন

    কিশোরীদের স্বাস্থ্য সচেতনতা শুধু তাদের একার দায়িত্ব নয়। একটি সহায়ক ও উন্মুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে পরিবার, শিক্ষক এবং সম্প্রদায়ের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

    • পরিবার:
      • খোলামেলা আলোচনা: স্বাস্থ্য, বিশেষ করে প্রজনন স্বাস্থ্য ও দৈহিক পরিবর্তন নিয়ে সংকোচ ছেড়ে খোলামেলা ও ইতিবাচক আলোচনা করা। প্রশ্ন করার জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা।
      • পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ: বাড়িতে সুষম ও পুষ্টিকর খাবারের ব্যবস্থা করা। জাঙ্ক ফুডের প্রলোভন কমিয়ে ফল, শাকসবজি, দুধ-ডিমের ব্যবস্থা করা।
      • মানসিক সমর্থন: চাপের সময়ে পাশে থাকা, কথা শোনা, বিচার না করা। সাফল্য-ব্যর্থতা উভয়তই উৎসাহ দেওয়া।
      • স্বাস্থ্য সেবার সুযোগ নিশ্চিত করা: প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা, টিকা ও চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সংস্থান ও সহায়তা করা।
    • শিক্ষক ও স্কুল:
      • বয়সোপযোগী স্বাস্থ্য শিক্ষা: পাঠ্যক্রমে সঠিক ও বিজ্ঞানসম্মত স্বাস্থ্য শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করা, বিশেষ করে প্রজনন স্বাস্থ্য ও মানসিক স্বাস্থ্য।
      • মেন্টরিং: কিশোরীদের জন্য সহানুভূতিশীল ও বিশ্বস্ত মেন্টর হিসেবে কাজ করা। সমস্যা শেয়ার করার জন্য নিরাপদ জায়গা তৈরি করা।
      • শারীরিক কার্যকলাপ: স্কুলে পর্যাপ্ত খেলাধুলা ও শারীরিক শিক্ষার সুযোগ দেওয়া।
      • MHM সুবিধা: স্কুলে পরিষ্কার, নিরাপদ ও গোপনীয়তা রক্ষাকারী শৌচাগার, বিশুদ্ধ পানি এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সুবিধা নিশ্চিত করা। জরুরি অবস্থার জন্য স্যানিটারি প্যাডের ব্যবস্থা রাখা।
      • কাউন্সেলিং সেবা: স্কুলে প্রশিক্ষিত কাউন্সেলরের ব্যবস্থা করা।
    • সম্প্রদায় ও সরকার:
      • সচেতনতামূলক কর্মসূচি: কমিউনিটি ক্লিনিক, স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও গণমাধ্যমের মাধ্যমে কিশোরী স্বাস্থ্য বিষয়ে ব্যাপক সচেতনতা প্রচার।
      • কিশোরীবান্ধব স্বাস্থ্যসেবা: স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে কিশোরীদের জন্য আলাদা ও বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করা, যেখানে তারা সংকোচ ছাড়াই পরামর্শ নিতে পারে। প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ।
      • সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য সরবরাহ: স্যানিটারি প্যাড, প্রয়োজনীয় ওষুধ ও ভিটামিন সাশ্রয়ী মূল্যে পাওয়া নিশ্চিত করা।
      • নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন: ‘জাতীয় কিশোর-কিশোরী স্বাস্থ্য কৌশল’ এর মতো নীতিগুলোর কার্যকর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা।

    কিশোরীদের জন্য সহায়ক কিছু গুরুত্বপূর্ণ লিংক (বাংলাদেশ):

    • স্বাস্থ্য অধিদপ্তর (DGHS) – কিশোর-কিশোরী স্বাস্থ্য: https://dghs.gov.bd/ (তথ্য ও পরামর্শ)
    • জাতীয় কিশোরী স্বাস্থ্য ক্লিনিক: বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চালু আছে। স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে জিজ্ঞাসা করুন।
    • জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল: https://nimh.gov.bd/ (মানসিক স্বাস্থ্য পরামর্শ ও চিকিৎসা)
    • ইউনিসেফ বাংলাদেশ – কিশোরী উন্নয়ন: https://www.unicef.org/bangladesh/ (কর্মসূচি ও সম্পদ)
    • জাতীয় জরুরি হেল্পলাইন: ১০৯ (নারী ও শিশু নির্যাতন, সহায়তা)
    • চাইল্ড হেল্পলাইন: ১০৯৮ (শিশু নির্যাতন ও ঝুঁকিতে থাকা শিশুদের জন্য)

    জেনে রাখুন (FAQs)

    ১. কিশোরী বয়সে মাসিক অনিয়মিত হওয়া কি স্বাভাবিক?
    হ্যাঁ, প্রথম কয়েক বছর মাসিক চক্র অনিয়মিত হওয়া খুবই সাধারণ। হরমোনের ভারসাম্য ঠিক হতে সময় লাগে। তবে যদি ৩ বছর পরেও অনিয়মিত থাকে, বা অতিরিক্ত রক্তপাত, তীব্র ব্যথা হয়, তাহলে অবশ্যই গাইনোকোলজিস্ট দেখানো উচিত। স্ট্রেস, অতিরিক্ত ব্যায়াম বা পুষ্টির ঘাটতিও কারণ হতে পারে।

    ২. ব্রেস্টে ব্যথা বা গোটা অনুভব করলে কী করব?
    কিশোরী বয়সে ব্রেস্টের বিকাশের সময়ে ব্যথা বা কিছুটা গোটা অনুভূত হওয়া স্বাভাবিক হতে পারে। তবে যদি গোটা খুব শক্ত হয়, ক্রমাগত বাড়তে থাকে, চামড়ার রং বা টেক্সচার বদলে যায়, বা নিপল থেকে অস্বাভাবিক নিঃসরণ হয়, তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সাধারণত এগুলো নিরীহ সিস্ট বা ফাইব্রোএডিনোমা হয়, কিন্তু পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া জরুরি।

    ৩. আমার ওজন নিয়ে আমি খুব অস্বস্তি বোধ করি। ডায়েটিং শুরু করব?
    কিশোরী বয়সে কড়া ডায়েটিং করা খুবই বিপজ্জনক। শরীর ও মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য পর্যাপ্ত পুষ্টি দরকার। ওজন নিয়ে চিন্তিত হলে, প্রথমে একজন পুষ্টিবিদের সাথে কথা বলুন। তারা বুঝবেন আপনার আদর্শ ওজন কত হওয়া উচিত এবং কীভাবে স্বাস্থ্যকর উপায়ে তা অর্জন বা বজায় রাখা যায়। জাঙ্ক ফুড কমিয়ে পুষ্টিকর খাবার খাওয়া, নিয়মিত ব্যায়াম করা এবং পর্যাপ্ত ঘুমানো – এগুলোই মূল চাবিকাঠি।

    ৪. প্রেমে পড়েছি, কিন্তু মানসিকভাবে খুব অস্থির লাগছে। কী করব?
    কৈশোরে ভালোলাগা, আবেগের টানাপোড়েন খুব স্বাভাবিক। প্রথমে নিজের অনুভূতিগুলো বুঝতে চেষ্টা করুন। বিশ্বস্ত কারো সাথে শেয়ার করুন – হয়তো আপনার সবচেয়ে কাছের বন্ধু বা বড় বোন। পড়াশোনা, শখ এবং বন্ধুদের সাথে সময় কাটানোর মতো বিষয়গুলোতে মনোযোগ দিতে চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন, সম্পর্ক জীবনের একটি অংশ মাত্র, সবকিছু নয়। যদি আবেগ খুব তীব্র হয় বা দুশ্চিন্তা বাড়তে থাকে, স্কুল কাউন্সেলর বা মনোবিদের সাহায্য নিতে পারেন।

    ৫. অনলাইনে কেউ অশালীন বার্তা দিচ্ছে বা হুমকি দিচ্ছে। এখন কী করব?
    একদমই চুপ করে থাকবেন না! প্রথমেই সেই ব্যক্তিকে ব্লক করুন। তাদের দেওয়া সব বার্তা, ইমেইল বা স্ক্রিনশট সেভ করে রাখুন (প্রমাণ হিসেবে)। অবিলম্বে আপনার বাবা-মা, শিক্ষক বা অন্য কোনো বিশ্বস্ত প্রাপ্তবয়স্ককে জানান। বাংলাদেশে সাইবার বুলিং ও হয়রানির বিরুদ্ধে আইন আছে। ‘জাতীয় হেল্পলাইন ১০৯’ এ ফোন করে সাহায্য চাইতে পারেন। আপনার দোষ নেই।

    ৬. আমি প্রায়ই খুব দুঃখবোধ করি এবং কান্না পায়। মানসিক সমস্যা কি?
    মাঝে মাঝে দুঃখবোধ বা কান্না আসা স্বাভাবিক। কিন্তু যদি এই অনুভূতিগুলো প্রায়ই আসে, দীর্ঘ সময় ধরে থাকে (দুই সপ্তাহের বেশি), এবং দৈনন্দিন কাজকর্মে (ঘুম, খাওয়া, পড়াশোনা, বন্ধুদের সাথে মেলা) ব্যাঘাত ঘটায়, তাহলে এটি বিষণ্নতার লক্ষণ হতে পারে। এটা কোনো দুর্বলতা নয়। সাহস করে আপনার বাবা-মাকে বলুন এবং একজন মনোবিদ বা কাউন্সেলরের সাথে কথা বলার জন্য বলুন। সাহায্য পাওয়া যায় এবং আপনি ভালো বোধ করতে পারেন।

    সবচেয়ে বড় কথা হলো, কিশোরীদের স্বাস্থ্য সচেতনতা কোনো এককালীন প্রচেষ্টা নয়; এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া, একটি জীবনবোধ। নিজের শরীর ও মনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া, তার সংকেতগুলোকে বোঝার চেষ্টা করা এবং প্রয়োজনে সাহায্য চাওয়ার সাহস অর্জন করা – এগুলোই হল সেই মজবুত ভিত্তি, যার উপর দাঁড়িয়ে আজকের কিশোরীরা গড়ে তুলবে আগামী দিনের স্বাস্থ্যবান, স্বাবলম্বী ও আত্মবিশ্বাসী নারী সমাজ। পরিবার, শিক্ষক, স্বাস্থ্যকর্মী, নীতিনির্ধারক – সকলের সম্মিলিত দায়িত্ব এই ভিত্তিকে শক্তিশালী করা। প্রতিটি কিশোরীকে তার স্বাস্থ্য সম্পর্কে জ্ঞানী ও ক্ষমতাশালী করে তোলার মাধ্যমেই আমরা গড়ে তুলতে পারি একটি রোগমুক্ত, উৎপাদনশীল ও সুখী বাংলাদেশ। আজই শুরু করুন নিজের যত্ন নেওয়া, জানুন, শিখুন, সাহায্য নিন। আপনার সুস্থ ভবিষ্যতের ভিত্তি আপনার হাতেই।


    জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।
    কিশোরীদের কিশোরীদের স্বাস্থ্য সচেতনতা বুনিয়াদ ভবিষ্যতের লাইফস্টাইল সচেতনতা:সুস্থ স্বাস্থ্য
    Related Posts
    period-pain

    এই ৭ অভ্যাস বাড়িয়ে দিতে পারে ঋতুস্রাবের যন্ত্রণা

    July 25, 2025
    tomato

    টমেটো নেই? চিন্তা নেই—এই তিনটি জিনিসেই অটুট থাকবে খাবারের স্বাদ!

    July 25, 2025
    ড্রাইভিং লাইসেন্স

    সঠিক নিয়মে দ্রুত ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে যা করবেন

    July 25, 2025
    সর্বশেষ খবর
    Gopalganj

    দুধ দিয়ে গোসল করে ছাত্রলীগ নেতার পদত্যাগ

    Heavy Rain

    টানা ১০ দিন অতি ভারি বৃষ্টির আভাস

    marcon-and-his-wif

    ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের স্ত্রীকে ‘পুরুষ’ হিসেবে অভিহিত, হলো মামলা

    Shyamnagar BNP clash

    শ্যামনগরে বিএনপির কাউন্সিলে জাল ভোটকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, আহত ৩

    bsf

    বিএসএফের বাংলাদেশি হত্যার আন্তর্জাতিক তদন্ত চায় জামায়াত

    Chittagong

    ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে টিকটক বানাতে গিয়ে ১২ যুবক আটক

    Sohag Son

    ‘কিসের স্বাধীন দেশ, আমার বাবাকে প্রকাশ্যে হত্যা করে মিছিল করতেছে’

    Shibir

    তিতুমীর কলেজ ছাত্রশিবিরের সভাপতি খাদেমুল, সেক্রেটারি মুনতাসীর

    bonna

    দক্ষিণাঞ্চলের সব নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে, লোকালয়ে জলাবদ্ধতা

    Zelio Gracy Plus

    Zelio নিয়ে এল নতুন ই-স্কুটার, এক চার্জেই চলবে ১৩০ কিমি!

    • About Us
    • Contact Us
    • Career
    • Advertise
    • DMCA
    • Privacy Policy
    • Feed
    • Banglanews
    © 2025 ZoomBangla News - Powered by ZoomBangla

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.