জুমবাংলা ডেস্ক : সম্প্রতি দেশের অনেক স্থানেই কুকুরের কামড়ে হাসপাতালে যাচ্ছেন অনেকে। আচমকা কুকুর আক্রমণ করে বসলে মানুষ আতঙ্কিত ও দিশেহারা হয়ে পড়েন। র্যাবিস বা জলাতঙ্কের কথা ভেবে ভীত হওয়ার কারণ কুকুরের আঁচড় বা কামড়। তবে কেবল জলাতঙ্কই নয়, ধনুষ্টঙ্কারসহ বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রামক রোগও কুকুরের আঁচড় বা কামড় থেকে ছড়াতে পারে। সময়মতো চিকিৎসা না নিলে জলাতঙ্ক প্রাণসংশয়ের কারণও হতে পারে।
ফেনির সোনাগাজি উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো. সাদেকুল করিম জানান, ফেনিসহ অনেক অঞ্চলে বছরের বিভিন্ন সময় বেওয়ারিশ ও পাগলা কুকুরের উপদ্রব বাড়ে। কুকুরের কামড় খেয়ে অনেক লোক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। তাদের চিকিৎসা করতে গিয়ে ঝামেলায় পড়তে হয়। অনেকে জানেন না কুকুর কামড়ালে কি করতে হয়। এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো জরুরি। তার পরামর্শক্রমে কুকুর কামড়ালে কি করতে হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত ধারণা দেওয়া হলো।
সতর্কতার বিষয়
রাস্তায় চলার সময় কুকুরের গতিবিধি লক্ষ্য করুন। সব কুকুরই যে আপনাকে আক্রমণ করবে তা নয়। অনেকে মনে করেন সব কুকুরই আক্রমণ করে। অনেকে কুকুরকে ঢিল ছোড়েন বা লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। এমন করা উচিত নয়। বেওয়ারিশ বা পাগলা কুকুর সচরাচর আপনার দিকে আস্তে আস্তে এগিয়ে আসে। তাদের চোখ লাল থাকে এবং মুখ দিয়ে ক্রমশ লালা ঝরে। এমন কুকুর রাস্তায় আপনাকে দৌড়ে আক্রমণ করে। দূর থেকেই শনাক্ত করলে থমকে দাঁড়ান। কুকুরটিকে পর্যবেক্ষণ করুন। তাড়ানোর জন্য শব্দ করুন। কুকুরটি যদি দৌড় দিয়ে আক্রমণ করতে আসে দৌড় দেবেন না। পাগল হলেও কুকুর সতর্ক থাকে।
কামড়ে দিলে আতঙ্ক নয়
যদি কুকুর আচড় বা কামড় দেয় তাহলে আতঙ্কিত হবেন না। শুরুতেই আক্রান্ত স্থানে ক্ষত ও রক্তপাতের তীব্রতা খেয়াল করতে হবে। কুকুর কামড়ালে প্রথমে ক্ষতস্থান চেপে ধরুন, যাতে তাড়াতাড়ি রক্তপাত বন্ধ হয়ে যায়।
ক্ষতস্থান পর্যবেক্ষণ করুন
শুরুতেই আক্রান্ত স্থানে ক্ষত ও রক্তপাতের তীব্রতা খেয়াল করতে হবে। কুকুর কামড়ালে প্রথমে ক্ষতস্থান চেপে ধরুন। চেষ্টা করুন যাতে তাড়াতাড়ি রক্তপাত বন্ধ হয়ে যায়।
ক্ষত পরিষ্কারে
কাছেপিঠে কোথাও কল, চাপকল বা পানির উৎস থাকলে পানির ধারায় ন্যূনতম ১০ মিনিট ধরে ক্ষত পরিষ্কার করুন। সবচেয়ে ভালো হয় অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সাবান ব্যবহার করে ক্ষতটি ভালোভাবে পরিষ্কারের জন্য। এটি ক্ষতের ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণু পরিষ্কার করতে সাহায্য করবে।
আক্রান্ত স্থানকে উঁচু করে রাখার চেষ্টা করুন। তবে ব্যথা করলে দরকার নেই। বাসায় কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিন। আতঙ্কে কষ্ট করে দাঁড়িয়ে থাকবেন না। ক্ষত পরিষ্কার হয়ে গেলে দেরি না করে ক্ষত–পরবর্তী সংক্রমণের হার কমানোর জন্য নিকটস্থ চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে ক্ষতস্থানে কোনো অ্যান্টিবায়োটিক মলমের প্রলেপ প্রয়োগ করে একটি জীবাণুমুক্ত গজ কাপড় দিয়ে ব্যান্ডেজ করে ফেলুন।
প্রয়োজনীয় ওষুধ ও পথ্যের পাশাপাশি অবশ্যই প্রতিদিন ক্ষতস্থান পরিষ্কার করতে হবে। কাটা স্থানে ধুলাবালু ও ময়লা যেন না লাগে, সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে। ক্ষতপ্রদাহ শুকিয়ে আসা অবধি এ নিয়ম মেনে চলা উচিত। যদি অনেক বেশি ব্যথা হয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে প্যারাসিটামল বা অন্য ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করতে পারেন।
জলাতঙ্কের টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে
স্বাস্থ্য পরামর্শক, হাসপাতাল বা কোনো চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। জলাতঙ্কের জন্য দুই ধরনের টিকা রয়েছে। এই টিকার দুটোই আপনাকে দিতে হবে না। চিকিৎসক বলে দেবেন কোনটি নিতে হবে। অনেককে দুটোও নিতে হতে পারে। তবে সেলফ মেডিকেশন নেবেন না। দ্রুত চিকিৎসক থেকে পরামর্শ নিন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।