কুবি প্রতিনিধি: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের কয়েক দফা মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে প্রায় ১৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এই ঘটনা ঘটে। এদের মধ্যে ৫ জনকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, আন্তঃবিভাগ ফুটবল প্রতিযোগিতার ১ম সেমিফাইনালে রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) মুখোমুখি হয় বাংলা ও মার্কেটিং বিভাগ। খেলা চলাকালে রেফারির সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের খেলোয়াড় এবং দর্শকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়ায়। পরে দু’পক্ষে উত্তেজনা শুরু হলে আয়োজক কমিটি প্রায় ৩০ মিনিটের মতো খেলা বন্ধ রাখে।
পরবর্তীতে খেলা শেষ হলে পূর্বের ঘটনার জের ধরে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এসময় শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা থামাতে গেলে তাদেরকেও মারধর করে তারা। এতে ছাত্রলীগ নেতা মাসুম, জুনায়েদসহ আরো কয়েকজন আহত হয়। ফলে সংঘর্ষ ভিন্ন মোড় নেয় এবং ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও পরিস্থিতি সামাল দিতে এসে মারধরে জড়িয়ে পরে।
এতে বাংলা বিভাগের শাহিদুল ইসলাম বিজয়, তাওহিদ সানি, রাশেদুল ইসলাম, সুপন সূত্রধর, শাহাদত হোসেন হিমেল, আব্দুর রহমান, সফিউর রহমান সাগর, আমীর হামজা তন্ময়, তানভীর, আশাদুজ্জামান শাহেদ, আব্দুল আহাদ, এস কে বিজয়, রবিউল, প্রান্ত, সিফাতসহ কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়। এদের মধ্যে গুরুতর আহত শাহিদুল ইসলাম বিজয়সহ ৫ জন শিক্ষার্থীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ছাত্রলীগ নেতা মাসুম জানায়, ‘সংঘর্ষ শুরু হবার পর আমি থামাতে গেলে তারা আমাকেও মারধর করে। কেউ একজন আমাকে ধারালো কিছু দিয়ে আঘাত করে’
সেখানে উপস্থিত আরেক ছাত্রলীগ নেতা জুনায়েদ ইসলাম বলেন, ‘আমি সেখানে ফেরাতে গেছি। তারা উল্টো আমাদের মেরেছে। আমি নিজে কাউকে মারিনি।’
শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ জানান, ‘দুই বিভাগের ঘটনায় ওখানে উপস্থিত ছাত্রলীগকর্মীরা তাদের ফেরানোর চেষ্টা করে। তারা ছাত্রলীগ কর্মীদের উপরও চড়াও হয়েছে। আমিসহ সিনিয়র নেতৃবৃন্দ সেখানেই অনেক কষ্টে এটি থামিয়ে দিয়েছি। পরবর্তীতে খেলার এই ঘটনা নিয়ে হলে কিংবা বাইরে ছাত্রলীগের কোনো নেতাকর্মী ঝামেলায় জড়ালে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বাংলা বিভাগের সভাপতি শামসুজ্জামান মিলকী জানান, ‘খেলা চলাকালীন রেফারির কিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্তের কারণে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হলেও খেলা চালিয়ে নেওয়ার স্বার্থে আমরা মেনে নিয়েছি। কিন্তু খেলা শেষে আমরা ফিরে আসার সময় খেলোয়াড়, শিক্ষক, সমর্থকসহ সকলের উপর অতর্কিত হামলা করা হয়। এতে আমাদের অন্তত বিশজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং এর প্রতিবাদে সোমবার অনুষ্ঠিতব্য তৃতীয় স্থান নির্ধারনী খেলা আমরা বয়কট করেছি।’
অন্যদিকে মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক জিল্লুর রহমান জানান, ‘ঘটনাটি অপ্রত্যাশিত। আমরা সবসময়ই চাই খেলা সুষ্ঠু হোক। কেন এভাবে হাতাহাতির পর্যায়ে গেল সেটি আমার বোধগম্য নয়।’
খেলা পরিচালনা কমিটির প্রধান ড. মো: শামিমুল ইসলাম জানান, ‘এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা প্রশাসনের সাথে সার্বিক ঘটনার বিষয়ে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নিবো।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দুই বিভাগের মধ্যকার মারামারিতে যারা আহত হয়েছে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা ও মেডিকেলে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।