কুমিল্লার দেবীদ্বার পৌর এলাকার জামিয়া ইসলামিয়া বাইতুন-নূর হাফিজিয়া মাদ্রাসার এক শিশু (১৩) বলৎকারের ঘটনায় ওই মাদ্রাসার সহকারী ও আবাসিক শিক্ষক ক্বারী মোহাম্মদ শাহজালাল মাঝিকে (২৫) গ্রেফতার পূর্বক শনিবার (১৪ নভেম্বর) সকালে কুমিল্লা কোর্ট হাজতে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটে গত ৬ নভেম্বর রাত ১০টায় দেবীদ্বার নিউমার্কেট কলেজ রোডের স্যোশাল ইসলামি ব্যাংকের তৃতীয় তলায় অবস্থিত জামিয়া ইসলামিয়া বাইতুন-নূর হাফিজিয়া মাদ্রাসার আবাসিক কক্ষে।
ওই ঘটনায় ভিক্টিম শিশুর পিতা বাস চালক (৪০) বাদী হয়ে শনিবার সকালে জামিয়া ইসলামিয়া বাইতুন-নূর হাফিজিয়া মাদ্রাসার আবাসিক শিক্ষক ক্বারী মোহাম্মদ শাহজালাল মাঝিকে এক মাত্র আসামি করে দেবীদ্বার থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন (মামলা নং- ১৬, তাং-১৪/১১/২০২০ইং)।
এর আগে ভিক্টিমের পিতার একটি লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে শুক্রবার রাত অনুমান ৯টায় অভিযুক্ত ক্বারী মোহাম্মদ শাহজালাল মাঝিকে দেবীদ্বার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আলমগির হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ গিয়ে মাদ্রাসার আবাসিক কক্ষ থেকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। আটক শিক্ষক শাহজালাল মাঝি উপজেলার ধামতী (উত্তর পাড়া মাঝি বাড়ি) গ্রামের মো. নজরুল ইসলাম মাঝির পুত্র।
মামলার এজহারে উল্লেখ করা হয়, ভিক্টিম শিশুটি ওই মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র এবং আবাসিক কক্ষে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সাথে থাকত। শিক্ষক ক্বারী মোহাম্মদ শাহজালাল প্রায়ই তাকে খারাপ উদ্দেশ্যে যৌন নিপীড়নের চেষ্টা করে আসছিল। ঘটনার দিন তাকে নানাভাবে মারধর ও ভয়ভীতি দেখিয়ে এবং কুরআন শরীফ দ্বারা তার মাথা খারাপ করে ফেলবে বলে হুমকী দিয়ে বলৎকার করে। বিষয়টি তার মা ও বাবাকে বললে, তারা মাদ্রাসা পরিচালনা পর্ষদ ও প্রধানের সাথে যোগাযোগ করলে তারা আইনের আশ্রয় নিতে পরামর্শ দেন।
এ ব্যাপারে জামিয়া ইসলামিয়া বাইতুন-নূর হাফিজিয়া মাদ্রাসা প্রধান মাওলানা আবু সাঈদ সোহেল জানান, ঘটনার সত্যতা প্রমান হলে তার সর্বোচ্চ বিচার দাবী করছি। আমার মাদ্রাসায় তাকে সহ ৩ জন শিক্ষক ও প্রায় ৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এর আগে তার বিরুদ্ধে এরকম কোন অভিযোগ পাইনি।
অভিযুক্ত ক্বারী মোহাম্মদ শাহজালালর বড় ভাই বিল্লাল হোসেন জানান, তার ভাই সাংসারিক জীবনে বিবাহিত এবং ৮ মাসের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে এরকম কোন ঘটনা অতিতে শুনি নাই।
এব্যাপারে দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ জানান, বলৎকারের ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। আসামি ও ভিক্টিমসহ আদালতে পাঠানো হয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মাহবুব হোসেন খানের আদালতে ভিক্টিমের ২২ ধারায় জবানবন্দি, ডাক্তারী পরীক্ষা করা এবং আসামির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নথিভূক্ত করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।