জুমবাংলা ডেস্ক : মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুরের ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূর মৃত্যু নিয়ে চলছে তোলপাড়। মৃত্যুর ৪০ ঘণ্টা পর লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায় পুলিশ। গৃহবধূর শ্বশুরের দাবি, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছে। আর বাবার বাড়ির লোকজনের দাবি, গৃহবধূকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তবে নিহত গৃহবধূর শ্বশুরবাড়ির লোকজন পালিয়ে যাওয়ায় মৃত্যু নিয়ে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাত আনুমানিক ১০টায় মারা যান গৃহবধূ সুভা। মৃত্যুকালে তিনি ৩ মাসের গর্ভবতী ছিলেন।
জানা যায়, সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ভাদেশ্বর এলাকার ছুরুক আলীর ও মা কাতারপ্রবাসী জবা বেগমের মেয়ে সুভা বেগম (১৯) ছোটবেলা থেকে নানাবাড়ি কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের বিলেরপার গ্রামে বড় হয়। গত ৫ মাস আগে সুভার বিয়ে হয় উপজেলা সীমান্তবর্তী শরীফপুর ইউনিয়নের সঞ্জবপুর গ্রামের তৈমুছ আলীর ছেলে মখলিছ মিয়া (২২) সাথে।
নিহত গৃহবধু শোভার মামা এমরান আলী জানান, হাসপাতালে মৃত অবস্থায় নিয়ে আসে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। হাসপাতালে যাওয়ার পর শ্বশুর তৈমুছ আলী জানান, সুভা স্ট্রোক করে মারা গেছে। সুভাকে জীবিত ভেবে দ্রুত মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। শ্বশুড়বাড়ির লোকজনের কথা বিশ্বাস করে সুভার মৃতদেহ নিয়ে আসি আমাদের বাড়ি (হাজিপুর ইউনিয়নের) বিলের পাড় গ্রামে।
তিনি আরো জানান, লাশ দাফনের সময় তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন কেউ আসেনি। না আসার কারণ জানতে গিয়ে শুনলাম শ্বশুর-শাশুড়ি ও স্বামীসহ আত্মীয়-স্বজন বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। তারা লোকজন এখনও পলাতক। এতে সন্দেহ হয়- সুভাকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন নির্যাতন করে হত্যা করছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মামলা করা হবে বলে মামা এমরান আলী জানান।
নিহত সুভার শ্বশুর তৈমুছ আলী জানান, বাড়িতে সন্ধ্যায় চা খাওয়ার সময় হঠাৎ দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হলে দ্রুত কমলগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ সময় সুভার নানিসহ আত্মীয়-স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। তবে নিহত সুভা স্ট্রোক করে মারা গেছে বলে দাবি করেন তৈমুছ আলী। তারা কেউ পলাতক নয় বলেও জানান।
হাসপাতালের ডা. অভিজিৎ রায় জানান, হাসপাতালে আনার পর সুভার মৃত্যু হয়। তবে এ সময় তার নাখ দিয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়ায় সন্দেহ হয়। হাসপাতালের পক্ষ থেকে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। এরপর পুলিশকে বুঝিয়ে আত্মীয়রা মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।
কুলাউড়া থানার ওসি বিনয় ভূষণ রায় জানান, ২ ফেব্রুয়ারি বিকেলে নিহতের আত্মীয়-স্বজনরা মৌলভীবাজার থেকে লাশ নিয়ে দাফনের কাজ শুরু করে। রহস্যজনক মৃত্যুর খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। ৩ ফেব্রুয়ারি বুধবার ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রাপ্তিসাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।