কুড়িগ্রামের গৃহবধূকে কুয়াকাটায় নিয়ে হত্যা, ২ বছর পর রহস্য উদঘাটন

জুমবাংলা ডেস্ক: মার্জিয়া কান্তা নামে কুড়িগ্রামের এক গৃহবধূকে কুয়াকাটায় নিয়ে হত্যা ও মরদেহ গুম করার দুই বছর পর হত্যারহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)

এ ঘটনায় নিহতের স্বামী ও কুয়াকাটার একটি আবাসিক হোটেলের দুই মালিকসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, নিহতের স্বামী কুড়িগ্রামের রৌমারি এলাকার শহিদুল ইসলাম সাগর (৩৭), সাগরের সহযোগী রৌমারি থানার রতনপুরের শাহিনুর ইসলামের ছেলে মো: মামুন মিয়া (২৬), পুটয়াখালীর কুয়াকাটার হোটেল আল মদিনার মালিক মো: দেলোয়ার হোসেন (৪৪), তার ভাই আনোয়ার হোসেন (৩৭) এবং হোটেল ম্যানেজার আমির হোসেন (৩৮)।

নিহত মার্জিয়া কান্তা (২৫) নরসিংদীর বেলাব উপজেলার বীরভাগবেড় গ্রামের সেহারাব হোসেন রতনের মেয়ে। সে সাভারের আশুলিয়ায় কান্তা বিউটিপার্লার নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক ছিলেন।

শনিবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই নরসিংদীর পুলিশ সুপার মো: এনায়েত হোসেন মান্নান জানান, পরিচয়ের সূত্রধরে পার্লার ব্যবসায়ী মার্জিয়া কান্তার সাথে বিয়ে হয় কুড়িগ্রামের শহিদুল ইসলাম সাগরের। বিয়ের পর সাগরের একাধিক স্ত্রী রয়েছে জানতে পারে কান্তা। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কলোহের সৃষ্টি হয়।

২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে মার্জিয়াকে নিয়ে ভারত ভ্রমনের উদ্দেশ্যে নরসিংদীর বেলাব থেকে আশুলিয়ার বাসায় যায় স্বামী সাগর। সেখান থেকে প্রস্তুতি নিয়ে ভারতের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে তারা শরিয়তপুর যায়। সেখানে সহযোগী মামুনকে নিয়ে নদী ভাঙ্গন দেখানোর কথা বলে হত্যা পরিকল্পনায় ব্যর্থ হয়। পরে শরীয়তপুর থেকে কান্তাকে নিয়ে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত দেখানোর জন্য সেখানকার আল মদিনা নামের একটি আবাসিক হোটেলে উঠেন তারা। ওই হোটেল কক্ষেই স্বামী ও তার সহযোগী মামুন কান্তাকে গলাটিপে হত্যার করে খাটের তলায় মরদেহ লুকিয়ে রেখে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে হোটেল কক্ষ থেকে মরদেহ উদ্ধার করতে না পারলেও অজ্ঞাত ব্যক্তিদের লাগেজ, কাপড়, একটি চাপাতিসহ কিছু আলামত উদ্ধার করে স্থানীয় পুলিশ।

কান্তা নিখোঁজের ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তার স্বামী ও সহযোগীকে গ্রেপ্তার ও তদন্তে বেরিয়ে আসে হত্যার রহস্য। গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা জানায় হত্যা করে মরদেহ হোটেলের খাটের নীচে রেখে পালিয়ে যায় । পরে দূর্গন্ধ ছড়ালে হোটেল কর্তৃপক্ষ পুলিশি হয়রানি এড়াতে মরদেহটি কুয়াকাটা সমুদ্রে ফেলে দেয়। পুলিশ আলামত উদ্ধার করলেও লাশ উদ্ধার করতে পারেনি। গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের আদালতে স্বীকারোক্তি প্রদান করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।