কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামে ধরলা, ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তার পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়েছে।
পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন জেলার ৯টি উপজেলার ৫৬টি ইউনিয়নের প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ। অনেকেই ঘর-বাড়ি ছেড়ে পাকা সড়ক, উঁচু বাঁধ ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছেন, কিন্তু সেখানেও বানের পানি আসতে শুরু করেছে।
দ্বিতীয় দফার বন্যার কবলে পড়া কর্মহীন এসব মানুষের মাঝে খাদ্য সংকটের পাশাপাশি বিশুদ্ধ পানিসহ দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। অনেকে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
এসব এলাকার কাঁচা-পাকা সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় ভেঙে পড়েছে উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী যাত্রাপুর হাটের সঙ্গে সারা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থাও।
জেলা প্রশাসন থেকে ১৬০ মেট্রিক টন চাল, ৮ লাখ টাকা ও ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেয়া হলেও তা এখনও বিতরণ শুরু হয়নি।
মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, কুড়িগ্রামে সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি বিপদসীমার ১০০ সেন্টিমিটার, চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ৮৫ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ৮১ সেন্টিমিটার ও তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন জেলার ৯টি উপজেলার ৫৬টি ইউনিয়নের প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ।
কুড়িগ্রাম সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের কলেজ মোড় এলাকার মো. সাইদুর রহমান জানান, বন্যা পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হচ্ছে। সব বাড়িতে পানি। রান্না করার মতো কোনও ব্যবস্থা নেই। আমি সকাল থেকে ২০টি বাড়ি ঘুরেছি কেউ সকালে রান্না করেনি।
ওই ইউনিয়নের মসলা পাড়া গ্রামের বাচ্চা মিয়া বলেন, ২-৩ দিন ধরে পানিবন্দি আছি। ঘরে খাবার নাই। মানুষের কাছে চালের খুদি এনে ২ দিন ধরে খেয়ে সবাই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছি।
কুড়িগ্রাম-যাত্রাপুর সড়কে আশ্রয় নেয়া ওই ইউনিয়নের জুম্মা পাড়া গ্রামের জোসনা জানান, আমাকে চেয়ারম্যান, মেম্বার গত বান ও এবারের বানেও একটি চালও দেয়নি। স্বামী অসুস্থ ছেলে-মেয়েদের নিয়ে খুব বিপদে আছি।
কুড়িগ্রাম সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ দেলোয়ার হোসেন জানান, আমরা গত বন্যায় সরকার থেকে যা বরাদ্দ পেয়েছি তা বানভাসিদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছিল। যারা এখনো পায় নাই, বরাদ্দ পেয়েছি তাদের দেয়া হবে।
কুড়িগ্রাম সদরের ভোগডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ সাইদুল রহমান জানান, আমার ইউনিয়নে ১৪ হাজার পরিবার পানিবন্দি জীবন-যাপন করছে। তাছাড়াও ধরলা নদীতে ২৫-৩০টি বাড়ি নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে। ৩০০টি পরিবারকে দেয়ার জন্য ১০ কেজি করে চাল বরাদ্দ পেয়েছি তা বিতরণ করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।