জুমবাংলা ডেস্ক : কুড়িগ্রামে গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিপাতে ধরলা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। এতে করে চরম দুর্ভোগে পড়েছে চর, দ্বীপচরসহ নদ-নদী অববাহিকার নীচু এলাকার অন্তত ৬০ হাজার পানিবন্দি মানুষ। এসব এলাকার কাঁচা সড়ক তলিয়ে থাকায় ভেঙ্গে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। কৃষি বিভাগের তথ্যমতে চলতি বন্যায় জেলায় প্রায় ১৬ হাজার ৪শ ৭ হেক্টর জমির রোপা আমান ও ২শ ৭০ হেক্টর জমির সবজি ক্ষেত, ১শ হেক্টর জমির বীজতলা দীর্ঘদিন পানিতে তলিয়ে থাকায় বেশিরভাগ ফসল নষ্ট হয়ে গেছে।
সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের জমিলা বেগম (৪০) জানান, প্রায় ১০ দিন ধরে আমার বাড়ির চারিদিকে পানিতে তলিয়ে আছে। নৌকা ছাড়া বাইরে বেড়ানোর কোন উপায় নেই। ঠিকমত বাজার সদাই করতে পারছি না। স্যালোমেশিনে সেচ দিয়ে আমন লাগিয়েছি সে আমনও পানির নীচে থেকে নষ্ট হয়ে গেছে। জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার বেরুবাড়ী ইউনিয়নের খামার নকুলা গ্রামের বিমল চন্দ্র সিংহ ও বাবু মিয়া জানান, তাদের প্রত্যেকের পাঁচ বিঘা জমির আমন ধান গত ১০ দিন থেকে পানির নীচে। এছাড়াও ঐ এলাকার শতশত কৃষকের আমন ক্ষেত পানির নীচে থাকায় কৃষকের রোটনকৃত আমন ধান নষ্ট হয়ে গেছে বলে একাধিক কৃষক জানিয়েছেন।
যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী সরকার জানান, আমার ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকার প্রায় সাড়ে ৩শ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। প্রশাসন থেকে ৫শ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ পাওয়া গেছে যা বিতরণ প্রক্রিয়া চলছে। অন্যদিকে, উলিপুর উপজেলার বেগমগন্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন জানান, আমার ইউনিয়নের প্রায় ৪শতাধিক পরিবার পানিবন্দি। ঘরের ভিতর পানি না উঠলেও চারিদিক তলিয়ে আছে। ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি পেলে ঘর-বাড়ির ভিতরে পানি ঢুকে পড়বে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশরী আরিফুল ইসলাম জানান, ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার ও ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ২৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধরলার পানি কিছুটা হ্রাস পেলেও ব্রহ্মপুত্রের পানি আরো কিছুটা বাড়তে পারে। এ প্রসঙ্গে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, এ জেলায় বন্যাকবলিতদের জন্য ২৮০ মেট্রিক টন চাল ও সাড়ে ১১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।