জুমবাংলা ডেস্ক : করোনা দুর্যোগ মোকাবেলায় ক্ষুদ্র কৃষকদের জন্য নগদ মূলধন যোগান, কৃষি শ্রমিকদের স্বাস্থ্য-নিরাপত্তা এবং কৃষকের জন্য সরকারি প্রণোদনার সুদের হার দুই শতাংশ করার দাবী জানিয়েছে খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক (খানি)। এছাড়াও চলমান এই সংকট থেকে বেরিয়ে আসার জন্য চারটি বিষয় উল্লেখ করে মাঠ পর্যায়ে কাজ করার দাবি জানিয়েছেন এই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানটি।
বৃহস্পতিবার খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক (খানি) সভাপতি ড. জয়নাল আবেদিন সাক্ষরিত এক প্রেস বিবৃতিতে এই দাবির বিষয়টি জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির জনসংযোগ কর্মকর্তা সামিউল ইসলাম।
বিবৃতিতে বলা হয়, করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক তাণ্ডবের ধাক্কা বাংলাদেশেও লেগেছে। বাংলাদেশের মতো জনবহুল- ক্ষুদ্র অর্থনীতির দেশের জন্য কারোনাভাইরাসের ফলে সৃষ্ট বিপর্যয় কতটা গভীর এবং দীর্ঘমেয়াদি হবে তা তা এখনো অনুমান করা না গেলেও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ইতোমধ্যে বলেছেন, এর ফলে বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি ১.১ শতাংশ হ্রাস পেতে পারে।
এই প্রেক্ষাপটে কৃষিই আমাদের একমাত্র ভরসা। কিন্তু করোনার আগ্রাসন থেকে রেহাই পায়নি কৃষিখাতও। পরিবহন লকডাউন এবং আঞ্চলিক লকডাউনের কারণে পণ্যবাজার সংকুচিত হয়েছে, কৃষকরা উৎপাদিত ফসল বিক্রি করতে পারছে না আবার উপকরণ সরবরাহে অপ্রতুলতায় আগামীতে উৎপাদন কমে আসারও শঙ্কা রয়েছে। তাতে আসছে দিনগুলোতে দেশে খাদ্য সঙ্কট দেখা দেওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।
চারটি বিষয় উল্লেখ করে খানি জানিয়েছে, আমরা খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক (খানি) দাবি করছি: ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের জন্য প্রণোদনা : সরকার ঘোষিত প্রণোদনাটিমূলত: প্রাতিষ্ঠানিক কৃষকদের সহায়তা করতে। কিন্তু প্রচলিত ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এই প্রণোদনা থেকে বর্গাচাষী করেন, অপ্রাতিষ্ঠানিক কৃষি কাজ করেন এবং কৃষিসমন্ধীয় কাজ করেন এমন কৃষকরা কোন সহায়তা পাবেন না। সুতরাং, তাদের জন্য কোন ধরণের সুদ ছাড়াই খানা ভিত্তিক আয় ধরে নগদ অর্থ সহায়তা দিতে হবে।
ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মূলধন সহায়তা : করোনাভাইরাসজনিত কারণে পরিবহণ ও সাধারণ বাজারঘাট বন্ধ থাকায় কৃষকের সবজি এবং তরমুজ মাঠেই নষ্ট হয়ে যাবার ফলে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকরা তাদের মূলধন হারিয়েছে।সরকারিভাবে এইসকল ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করে ক্ষতিপূরণ প্রদানের মাধ্যমে মূলধন যোগান দিত হবে।
হাওরাঞ্চলে ধান কাটার জন্য শ্রমিক ও করোনা নিরাপত্তা : হাওরাঞ্চলে ধান কাটার শ্রমিক যোগান দেওয়ার জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানের শ্রমিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষাপূর্বক ‘স্বাস্থ্য কার্ড’ প্রদান করা এবং দেশের অভ্যন্তরে সরকারি ব্যবস্থাপনায় শ্রমিকদের গমনাগমন নিশ্চিত করা।শ্রমিকরা কাজ করতে গিয়ে কোনভাবে অসুস্থ হয়ে গেলে দ্রুত চিকিৎসা পাওয়া জন্য ‘কৃষি শ্রমিক স্বাস্থ্য নিরাপত্তা’ প্রণোদনা তহবিল গঠন করতে হবে।
মাঠ থেকে সরাসরি ধান সংগ্রহ : যেহেতু এ মুহূর্তে পরিবহন এবং শ্রমিক সঙ্কট রয়েছে; তাই করোনাভাইরাসের বিস্তার ও সংক্রমণ রোধ করতে এবং কৃষকের হয়রানি কমাতে এই বোরা মৌসুমে সরাসরি কৃষকের মাঠ থেকে ধান সংগ্রহ করতে হবে।
সরকারিভাবে ২৫ লাখ মেট্রিকটন ধান/চাল ক্রয় করা : সরকারিভাবে এই বছর ১৯ লাখ মেট্রিক টন ধানচাল ক্রয় করার কথা বলা হয়েছে, যা মোট উৎপাদনের মাত্র ১০ শতাংশ।সরকারিভাবে সকল গুদাম ব্যবহার নিশ্চিত করে ২৫ লাখ মেট্রিকটন ধান চাল ক্রয় করতে হবে; সেই সাথে মশুর, আলু ইত্যাদি ফসল ক্রয়ের সীমা বৃদ্ধি করতে হবে।
ক্ষুদ্র কৃষকদের জন্য ডিজেলে নগদ সহায়তা : যেহেতু গত মার্চে দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে বৃষ্টিপাত হয়েছে ৬০ শতাংশ কম। দেশের ফসলের সবচেয়ে বড় এই মৌসুমে মাঠে আলু, সবজি ও শর্ষে রয়েছে, যেগুলোতে সেচ দিতে হচ্ছে। এক্ষেত্র ক্ষুদ্র কৃষকদের যারা নিজেরাই শ্যালো মেশিনে ইরিগেশন করে, তাদেরও ডিজেল ক্রয়ের জন্য জরুরিভাবে নগদ সহায়তা দিতে হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।