আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি এমন এক কৃষ্ণগহ্বরের সন্ধান পেয়েছেন, যা এখন পর্যন্ত শনাক্ত হওয়া বৃহত্তমগুলোর মধ্যে অন্যতম। এর ভর সূর্যের তুলনায় প্রায় ৩৬ বিলিয়ন গুণ অর্থাৎ এটি মিল্কিওয়ের কেন্দ্রীয় কৃষ্ণগহ্বরের তুলনায় প্রায় ১০ হাজার গুণ বেশি।
এই অতিকায় কৃষ্ণগহ্বরটির অবস্থান ‘কসমিক হর্সশু’ নামে পরিচিত এক বিশালাকার গ্যালাক্সির কেন্দ্রে। এটি পৃথিবী থেকে প্রায় ৫০০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। গ্যালাক্সিটি এতটাই ভরসম্পন্ন যে এটি আশপাশের স্থান-সময়কে বাঁকিয়ে দেয় এবং দূরের একটি গ্যালাক্সি থেকে আসা আলোর পথ পরিবর্তন করে ঘোড়ার নালের মতো ‘আইনস্টাইন রিং’ তৈরি করে।
গবেষকরা এই কৃষ্ণগহ্বরের ভর নির্ধারণ করেছেন গ্র্যাভিটেশনাল লেন্সিং (বৃহদাকার বস্তুর কারণে আলোর বাঁক) এবং স্টেলার কাইনেম্যাটিক্স (কৃষ্ণগহ্বরের চারপাশে নক্ষত্রের গতিবেগ পরিমাপ)- দুই পদ্ধতির সমন্বয়ে। মিল্কিওয়ের কেন্দ্রীয় কৃষ্ণগহ্বরের চারপাশে নক্ষত্রের গতি তুলনামূলক কম হলেও এই কৃষ্ণগহ্বরের কাছে নক্ষত্ররা ঘণ্টায় প্রায় ১৪.৪ লাখ কিলোমিটার (প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৪০০ কিমি) বেগে ঘুরছে।
গবেষণা দলের প্রধান ব্রিটেনের ইউনিভার্সিটি অব পোর্টসমাউথ-এর প্রফেসর থমাস কোলেট জানান, “এটি শীর্ষ ১০ বৃহত্তম কৃষ্ণগহ্বরের মধ্যে একটি এবং সম্ভবত সবচেয়ে বড়। দুইটি স্বতন্ত্র প্রমাণ পদ্ধতি এর ভর নির্ধারণে অসাধারণ দৃঢ়তা দিয়েছে।” ব্রাজিলের ইউনিভার্সিদাদে ফেডারাল দো রিও গ্রান্দে দো সুলের গবেষক কার্লোস মেলো বলেন, “এটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ এ ধরনের নিঃশব্দ কৃষ্ণগহ্বর সাধারণত শনাক্ত করা কঠিন।”
‘কসমিক হর্সশু’-কে বিজ্ঞানীরা এক ধরনের ‘ফসিল গ্রুপ’ গ্যালাক্সি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন, যা অতীতে বহু গ্যালাক্সির সংমিশ্রণে তৈরি হয়েছে। কেন্দ্রীয় কৃষ্ণগহ্বরটিও একসময়ের একাধিক কৃষ্ণগহ্বরের মিলনের ফল। ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার (ESA) ইউক্লিড স্পেস টেলিস্কোপ ভবিষ্যতে এ ধরনের আরও অতিকায় কৃষ্ণগহ্বর শনাক্তে সহায়তা করবে বলে আশা করা হচ্ছে যা গ্যালাক্সি গঠন ও বিবর্তন বোঝার ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
সূত্র- সায়েন্স এলার্ট।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।