স্পোর্টস ডেস্ক: আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় নিয়েছিলেন অনেক আগেই। তবে ঘরোয়া ক্রিকেটে ছিলেন নিয়মিত। এবার তাকেও বিদায় জানালেন পাকিস্তানি পেসার উমর গুল। শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি কাপে সাউদার্ন পাঞ্জাবের কাছে নক আউট পর্বে হেরে গেছে তার দল বেলুচিস্তান।
ক্যারিয়ারের শেষ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়া হলো না গুলের। তাই তো বিদায়টা সুখের হলো না গুলের। কান্নাভেজা চোখে বিদায় নিতে হলো তাকে। দীর্ঘ প্রায় ২০ বছরের ক্যারিয়ারে শেষ ম্যাচে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি এই পেসার। ম্যাচ শেষে দু’দলের খেলোয়াড়রা তাকে গার্ড অব অনার দেন।
ম্যাচ শেষে গুল বলেন, আমার পুরো ক্যারিয়ারে সমর্থন দিয়ে যাওয়া ভক্তদের ধন্যবাদ জানাই। আমার ভক্ত-সমর্থকরাই সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা ছিল। আমি আমার পরিবারকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, যাদের অনুপ্রেরণায় দীর্ঘদিন ক্রিকেট খেলতে পেরেছি। ক্রিকেট ছাড়ায় এখন পরিবারকে সময় দিবো বেশি বেশি। তবে ক্রিকেট আমার মনে-প্রাণে। সুযোগ পেলে হয়তো আবারো ফিরবো।
বয়সভিত্তিক ক্রিকেট দিয়ে পেশাদার ক্রিকেটে পা রাখা গুল ২০০২ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করেন। ঠিক এক বছর পর জাতীয় দলে ডাক পেয়ে যান তিনি। ওই সময় দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভরাডুবির পর ওয়াসিম আকরাম ও ওয়াকার ইউনিসদের মতো তারকারা অবসরে চলে যাওয়ার পর একটা পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল পাকিস্তান দল।
২০০৩ সালের এপ্রিলে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেক হয় গুলের। একই বছরের আগস্টে করাচিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেকও হয়ে যায় তার। টেস্টে ৪৭ ম্যাচ খেলে ৩৪.০৬ গড়ে ১৬৩ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ১৩০ ওয়ানডেতে ২৯.৩৪ গড়ে তার ঝুলিতে আছে ১৭৯টি উইকেট।
বোলিংয়ে গুলের সবচেয়ে বড় অস্ত্র ছিল ইয়র্কার। তার পারফেক্ট ইয়র্কার ব্যাটসম্যানদের জন্য রীতিমত দুঃস্বপ্নের কারণ ছিল। এজন্য টি-টোয়েন্টিতে তার গুরুত্ব ছিল অনেক বেশি। এই ফরম্যাটে তার সাফল্যও বেশি। জাতীয় দলের জার্সিতে ৬০ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ১৬.৯৭ গড়ে তার উইকেটসংখ্যা ৮৫টি। তার চেয়ে এগিয়ে আছেন মাত্র চারজন বোলার- লাসিথ মালিঙ্গা (১০৭), শহিদ আফ্রিদি (৯৮), সাকিব আল হাসান (৯২) এবং রশিদ খান (৮৯)।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম দুই আসরে পাকিস্তানের সাফল্যের পেছনে অন্যতম অনুঘটক ছিলেন গুল। ২০০৭-এর আসরে রানার্সআপ হওয়া পাকিস্তান পরের আসরেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। ২০০৭ সালের আসরে ১৩ উইকেট নিয়ে বোলারদের তালিকায় শীর্ষে ছিলেন গুল। দুই বছর পর সমান উইকেট নিয়ে একই কীর্তির পুনরাবৃত্তি করেন তিনি। ধারাবাহিকতার এমন উদাহরণ সত্যিই বিরল।
শুধু তাই না, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তার অবিশ্বাস্য ফাস্ট বোলিংয়ের স্মৃতি ক্রিকেটভক্তদের মনে বহুদিন টিকে থাকবে। ওই ম্যাচে ৩ ওভার বল করে মাত্র ৬ রানে ৫ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন এই ডানহাতি।
২০১৫ বিশ্বকাপে উপেক্ষিত হওয়ার পরও পাকিস্তান ওয়ানডে দলে ফেরার লড়াই চালিয়ে গিয়েছিলেন গুল। সর্বশেষ ২০১৬ সালে সর্বশেষ পাকিস্তানের জার্সিতে খেলতে দেখা গেছে তাকে। এরপর জাতীয় দলে আর ডাক না পেলেও ঘরোয়া ক্রিকেটে অংশ নিতেন নিয়মিত। এবার খেলোয়াড়ি জীবনকেই বিদায় বলে দিলেন এই অভিজ্ঞ পেসার।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।