জুমবাংলা ডেস্ক : ছিনতাইয়ের ৮০ শতাংশই ‘মোবাইল ছিনতাই’ জানিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেছেন, ‘বাসে বা প্রাইভেট কারে যখন কেউ কথা বলেন, তখন তার মোবাইল নিয়ে ছিনতাইকারীরা দৌড় দেয়। তাদের হাতেনাতে ধরা অত্যন্ত কঠিন কাজ। অফিসারদের কাছে বড় অস্ত্র থাকে, বুট পরা, ইউনিফর্ম পরা থাকে। ছিনতাইকারী থাকে খালি পায়ে বা একটা কেডস পরা। তার সঙ্গে দৌড়ে পারাটা অনেক কঠিন। তাই ঢাকাবাসীকে অনুরোধ করব, আপনার মোবাইল, মহিলারা যাঁরা পার্স ব্যবহার করেন, পার্স বা হ্যান্ডব্যাগ নিজের নিরাপত্তায় ভালোভাবে রাখার চেষ্টা করেন।’
আজ বুধবার দুপুরে ঢাকা ক্লাবে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) বার্ষিক সাধারণ সভায় ডিএমপি কমিশনার এসব কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার ছিনতাই প্রতিরোধে রাজধানীবাসীকে নিজের মোবাইল ও ব্যাগ নিজ দায়িত্বে নিরাপদ রাখার মাধ্যমে পুলিশকে ‘সহায়তা’ করার আহ্বান জানান।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আমরা আপনাদের সাহায্য করব। কিন্তু নিজের ব্যক্তিগত ব্যাগ এবং মানিব্যাগ, পার্স, মোবাইল নিজে একটু নিরাপদে রাখার চেষ্টা করবেন। তাহলে এ কাজটির মাধ্যমে আপনি আমাদের সহযোগিতা করতে পারবেন।’
সাজ্জাত আলী বলেন, ‘ইদানীং মানুষের মধ্যে শঙ্কার সৃষ্টি করেছে ছিনতাই। ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত অধিকাংশ মাদকাসক্ত অল্প বয়সী ছেলেরা। ১৫ থেকে ২২ বছরের ছেলেরা মাদকে আসক্ত হয়ে এই ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।’
ছিনতাই প্রতিরোধে গত এক সপ্তাহে দিনে ও রাতে পুলিশ প্যাট্রলের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার।
মানুষ ছোট ছোট দাবি আদায়ে রাজপথকেই বেছে নেওয়ার কথা জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘সবাই মনে করে রাজপথ দখলে নিলে তাদের দাবিদাওয়া দ্রুত আদায় হবে বা সমস্যার সমাধান হবে। যার ফলে ঢাকার ভঙ্গুর ট্রাফিক আরও নাজুক অবস্থায় চলে যায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা মানুষকে রাস্তায় থাকতে হয়।’
ঢাকার উত্তর থেকে দক্ষিণে তিনটি সড়কের কথা তুলে ধরে তিনি বলেছেন, ‘একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বন্ধ হলে পুরো শহর অচল হয়ে যায়। আমরা এ সমস্যার প্রতিনিয়ত সম্মুখীন হচ্ছি। তাই অনুরোধ দাবির ব্যাপারে খোলা মাঠ, অডিটরিয়াম, সভাস্থল বেছে নিন। যথাযথ কর্তৃপক্ষকে সেখানে ডেকে টেবিলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করুন। ঢাকাবাসীর ট্রাফিক ব্যবস্থাকে আরও ভঙ্গুর করে তুলবেন না—এটি আমার সবিনয় নিবেদন।’
পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, গত দেড় দশকের আচরণ থেকে ডিএমপির সদস্যরা ‘বের হয়ে আসতে চায়’। কিন্তু এ জন্য সময়ের প্রয়োজন। সব অফিসারের নতুন করে প্রশিক্ষণের বিশেষভাবে প্রয়োজন। প্রশিক্ষণ ছাড়া হঠাৎ ৪০ হাজার সদস্যকে পরিবর্তন সম্ভব না।
সরকার পতনের পর ডিএমপির মনোবল ‘একদম ভেঙে পড়েছিল’ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের অনেক শর্টকামিংস দুর্বলতা আছে, সেগুলা থেকে বের হয়ে সেবা দেব। কিন্তু আপনাদের লাগবে। সীমিতসংখ্যক পুলিশ দিয়ে সব সমস্যার সমাধান অত্যন্ত দুরূহ। সম্মিলিতভাবে চেষ্টা করলে আমরা অবশ্যই ভালো থাকব।’
এ সময় ক্র্যাবের সভাপতি কামরুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ক্র্যাবের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, ক্র্যাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যসহ সংগঠনের অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।