আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর গ্রিনল্যান্ডের ওপর আমেরিকার দখল নিশ্চিত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই আধা স্বায়ত্বশাসিত দ্বীপটি উত্তর আমেরিকা মহাদেশের মধ্যে থাকলেও এটি আমেরিকার অংশ নয়। ইউরোপের ডেনমার্কের একটি অংশ এটি। ট্রাম্পের বক্তব্য, জাতীয় ও বৈশ্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা এবং নিয়ন্ত্রণ যুক্তরাষ্ট্রের হাতে থাকা অত্যন্ত জরুরি। খবর বিবিসি
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাতে মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার সময় আবারও গ্রিনল্যান্ড নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার মনোভাব পুনর্ব্যক্ত করেছেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প বলেন, “আজ রাতে গ্রিনল্যান্ডের অসাধারণ জনগণের জন্য আমার একটি বার্তা আছে: সেটি হচ্ছে- আমরা দৃঢ়ভাবে আপনাদের নিজেতের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের অধিকারকে সমর্থন করি। এবং আপনরা যদি চান, আমরা আপনাদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্বাগত জানাই।”
এ সময় তিনি বলেন, “জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিনল্যান্ড প্রয়োজন।”
“আমি মনে করি এটি আমরা পাবই। যেকোনও উপায়ে আমরা এটি পাবই,” বলেন ট্রাম্প।
কিন্তু কেন গ্রিনল্যান্ড পেতে মরিয়া ট্রাম্প, কী আছে সেখানে?
কূটনীতিকেরা মনে করছেন, এই দ্বীপের দখল পেলে আমেরিকার অর্থনৈতিক নিরাপত্তার নতুন দিগন্ত খুলে যেতে পারে। কারণ এই দ্বীপটিতে লুকিয়ে রয়েছে খনিজ সম্পদের বিপুল ভাণ্ডার।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, গ্রিনল্যান্ডের খনিজ সম্পদের বেশির ভাগই অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এই দ্বীপের প্রতি বিভিন্ন দেশের আগ্রহের অন্যতম কারণ হল এখানকার খনিজ সম্পদ।
মাইনিং কোম্পানি আমারক মিনারেলস-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এলদুর ওলাফসন জানিয়েছেন, আগামী কয়েক দশকে উন্নত দেশগুলোতে যে পরিমাণ খনিজ সম্পদের প্রয়োজন হবে, তা একাই জোগান দিতে পারবে এই দ্বীপ। এখানে রয়েছে অনেক উঁচু উঁচু পাহাড়। অনেকগুলোই দুর্গম। পাহাড়গুলোতে প্রচুর পরিমাণে স্বর্ণ সঞ্চিত রয়েছে। এছাড়া তামা, নিকেল এবং অন্য ধাতুর আকরিকও রয়েছে। বিভিন্ন সংস্থা সেখানে স্বর্ণ এবং অন্য বিরল মূল্যবান ধাতুর খোঁজ চালাচ্ছে।
তবে এই দ্বীপের অধিকাংশ অঞ্চলেই খনিজ সম্পদের খোঁজ এখনও শুরু হয়নি। আধা স্বায়ত্বশাসিত এই দ্বীপটি ডেনমার্কের অংশ হলেও খনিজ এবং প্রাকৃতিক সম্পদগুলোর দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন গ্রিনল্যান্ড কর্তৃপক্ষই।
প্রতিবেদন অনুসারে, বিরল খনিজ ধাতুর সম্ভারের দিক থেকে এই দ্বীপটি বিশ্বে অষ্টম স্থানে রয়েছে। মোবাইল, ব্যাটারি, বৈদ্যুতিক মোটর তৈরির কাজে এগুলো ব্যবহার হয়। লিথিয়াম, কোবাল্ট প্রচুর পরিমাণে মজুত রয়েছে এখানে। এছাড়া খনিজ তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের সম্ভারও রয়েছে। তবে নতুন করে কোনও খনন বর্তমানে নিষিদ্ধ রয়েছে গ্রিনল্যান্ডে। দ্বীপ সংলগ্ন গভীর সমুদ্রেও খনন নিষিদ্ধ। গোটা গ্রিনল্যান্ডে বর্তমানে মাত্র দু’টি সক্রিয় খনি রয়েছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, গ্রিনল্যান্ডে আপাতত একশ’টি সংস্থাকে খনিজ সম্পদ খোঁজার ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। বিদেশি সংস্থাগুলোর মধ্যে বেশির ভাগই ব্রিটেন, কানাডা এবং অস্ট্রেলিয়ার। আমেরিকার রয়েছে মাত্র একটি সংস্থা। সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদন অনুসারে, এক খনি সংস্থাকে আমেরিকা অনুরোধ করেছে তাদের উত্তোলন করা ধাতু চীনের কাছে বিক্রি না-করার জন্য।
রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।