পৃথিবীর কিছু বিশেষ অঞ্চলে মধ্যরাতেও সূর্য ওঠার ঘটনাটি একটি প্রাকৃতিক ঘটনা, যা “মিডনাইট সান” নামে পরিচিত। সাধারণত এই ঘটনাটি ঘটে আর্কটিক এবং আন্টার্কটিক সার্কেলের মধ্যে অবস্থিত অঞ্চলে। আসুন জেনে নিই কেন এবং কীভাবে এই ঘটনা ঘটে।
পৃথিবীর কক্ষপথ ও ঘূর্ণন
পৃথিবী তার কক্ষপথে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে এবং একই সময়ে নিজ অক্ষে ঘূর্ণন করে। পৃথিবীর অক্ষ ২৩.৫ ডিগ্রি কোণে হেলানো, যা বছরের বিভিন্ন সময়ে সূর্য থেকে বিভিন্ন পরিমাণ আলো পেতে সহায়ক। এই কক্ষীয় অবস্থান এবং অক্ষীয় হেলানোর কারণে ঋতুগত পরিবর্তন ঘটে এবং দিনের দৈর্ঘ্য বিভিন্ন হয়।
আর্কটিক ও আন্টার্কটিক সার্কেল
আর্কটিক সার্কেল হল পৃথিবীর উত্তর মেরুর চারপাশের অঞ্চল এবং আন্টার্কটিক সার্কেল হল দক্ষিণ মেরুর চারপাশের অঞ্চল। এই দুটি সার্কেলের ভিতরে অবস্থিত অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে দিনের সময় দীর্ঘ হয় এবং শীতকালে দিনের সময় ছোট হয়।
মধ্যরাতের সূর্য (Midnight Sun)
গ্রীষ্মকালে, আর্কটিক এবং আন্টার্কটিক সার্কেলের মধ্যে অবস্থিত অঞ্চলে সূর্য একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অস্ত যায় না। এটি মূলত মে থেকে জুলাই মাসের মধ্যে ঘটে, যখন পৃথিবীর উত্তর মেরু সূর্যের দিকে হেলে থাকে। এই সময়ে সূর্য আকাশে ২৪ ঘণ্টা বিদ্যমান থাকে, যা মধ্যরাতেও দৃশ্যমান হয়।
কেন এই ঘটনা ঘটে?
১. পৃথিবীর অক্ষীয় হেলানো: পৃথিবীর অক্ষ ২৩.৫ ডিগ্রি কোণে হেলানো থাকায় গ্রীষ্মকালে আর্কটিক সার্কেল সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে। ফলে সূর্য অস্ত যায় না।
২. ঋতুগত পরিবর্তন: বছরের বিভিন্ন সময়ে পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে সূর্যের আলো পড়ার মাত্রা ভিন্ন হয়। গ্রীষ্মকালে উত্তর মেরু এলাকায় দিনের সময় দীর্ঘ হয় এবং শীতকালে তা ছোট হয়।
মধ্যরাতের সূর্য দেখার স্থান
বিশ্বের কিছু প্রধান স্থান যেখানে মধ্যরাতের সূর্য দেখা যায়:
– নরওয়ে: উত্তর কেপ এবং স্ফালবার্ড।
– ফিনল্যান্ড: ল্যাপল্যান্ড।
– আলাস্কা: বারো এবং ফেয়ারব্যাঙ্কস।
– সুইডেন: কিরুনা এবং আভিক্সজাওর।
– রাশিয়া: মুরমানস্ক।
মধ্যরাতের সূর্য পৃথিবীর একটি আকর্ষণীয় প্রাকৃতিক ঘটনা, যা মূলত পৃথিবীর কক্ষীয় অবস্থান এবং অক্ষীয় হেলানোর কারণে ঘটে। আর্কটিক এবং আন্টার্কটিক সার্কেলের মধ্যে অবস্থিত অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে এই ঘটনা দেখতে পাওয়া যায়, যা পর্যটকদের জন্য অত্যন্ত আকর্ষণীয়। এই ঘটনা আমাদের পৃথিবীর জ্যোতির্বিজ্ঞানের এক চমৎকার উদাহরণ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।