নিজস্ব প্রতিনিধি: বীজ তলায় চারা উৎপাদন করতে গিয়ে কৃষকরা বিভিন্ন ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয়। দেখা যায়, ৫০-৬০% চারা গজায়, আবার সে চারা ক্ষেতে রোপন করলে অনেক চারা মারা যায়। কৃষকের এ ধরনের সমস্যা বিবেচনা করে শরীয়তপুরের এসডিএস এর সহযোগিতায় এবং পিকেএসএফ এর অর্থায়নে সমন্বিত কৃষি ইউনিটের মাধ্যমে কোকোডাস্টের মাধ্যমে গুণগত মানসম্পন্ন সবজির চারা উৎপাদনের জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
সবজি চাষের জন্য পরিচিত শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলা। রাস্তার দুই পাশে সবুজে ঢাকা বিভিন্ন ধরনের মনমাতানো সবজির ক্ষেত দেখা যায়। সারা বছরেই এ অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের সবজি যেমন ধুন্দুল, চিচিঙ্গা, করলা, লাউ, বেগুন, শসা, টমেটো ইত্যাদির চাষ হয়ে থাকে। সবজি চাষের জন্য কৃষকরা বীজ তলায় সবজির চারা উৎপাদন করে থাকে।
এসডিএস এ বছর জাজিরা উপজেলার মুলনা ইউনিয়নের লাউখোলা গ্রামে রিপন সরদার নামে একজনকে কোকোডাস্টের মাধ্যমে চারা উৎপাদনের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি ও কারিগরি সহযোগিতা দিয়েছে। রিপন সরদার এ বছর প্রো ট্রের মাধ্যমে প্রায় এক লক্ষ বিভিন্ন ধরনের চারা উৎপন্ন করে বিক্রি । সরেজমিনে দেখা যায়, তার নার্সারীতে হতে বহু কৃষক চারা ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন।
মিরাসা গ্রামের আলফাস নামে এক কৃষক তার নার্সারী হতে করলার চারা ক্রয় করছেন। তিনি বলেন, কোকোডাস্টের মাধ্যমে উৎপন্ন চারার শিকড় ক্ষতিগ্রস্ত হয় না বলে জমিতে রোপন করার পর কোন চারা মারা যায় না। আবার এ চারায় রোগজীবাণুর আক্রমণ কম হয় এবং গাছ দ্রুত সুস্থ সবল হয়ে বাড়তে থাকে। আরেক কৃষক রাসেল চোকদার বলেন, তিনি বীজতলায় যে বীজ দিয়েছেন তার অর্ধেক অঙ্কুরোদগম হয়েছে। তাই তিনি অতিরিক্ত চারা ক্রয় করতে এসেছেন।
তিনি আরো বলেন, এ চারা রোপন করলে ১৫-২০ দিন আগে ফসল সংগ্রহ করা যায়। নার্সারীর মালিক রিপন সরদার বলেন, তিনি এ মাসে প্রায় ৫০ হাজার শসা, মরিচ, ধুন্দুল, করলা, চিচিঙ্গার চারা উৎপাদন করেছেন। কৃষকরা তার নার্সারী হতে চারা ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন। এ চারা উৎপাদন করতে তার প্রায় ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তিনি আশা করছেন, চারা বিশ দিনের মধ্য বিক্রি হয়ে যাবে। এতে তার খরচ বাদে পঞ্চাশ হাজার টাকা লাভ হবে। তিনি প্রতি মাসে এ নার্সারী হতে ৪০-৫০ হাজার টাকা লাভ হবে বলে আশা করছেন।
উন্নত মানের চারা উৎপাদনের জন্য সার্বক্ষনিক কারিগরি পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন এসডিএস এর কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ খাজি আলম। তিনি বলেন, কোকোডাস্টের মাধ্যমে চারা উৎপাদন একটি আধুনিক পদ্ধতি। মাটির স্পর্শ ছাড়া চারা উৎপন্ন করা হয় বলে মাটি বাহিত রোগ জীবানু হয় না। মাটির বদলে কোকোডাস্ট দেওয়া হয়। কোকোডাস্ট হলো নারিকেল ছোবার গুড়া। নারিকেলের গুড়ায় যে লবন থাকে সেটি প্রথম অপসারণ করা হয়। এ গুড়া প্লাস্টিকের প্রো ট্রেতে দিয়ে চারা বসিয়ে দেওয়া হয়। চারার পুষ্টি চাহিদা পরনের জন্য স্প্রের মাধ্যমে খাদ্যর যোগান দেওয়া হয়। পোকামাকড় যাতে এ চারায় আক্রমন করতে না পারে তাই চারার চারদিকে মশারীর নেট দেওয়া হয়। আবার প্রখর রোদের তাপ হতে রক্ষার জন্য চারার উপড়ে শেডনেট দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। কঠোর নিয়ন্ত্রণনের মাধ্যমে চারা উৎপন্ন করা হয় বলে এ চারা অনেক সুস্থ ও সবল হয়ে।
তিনি আরো বলেন, কৃষককে ভালো মানের চারা উৎপন্ন করার জন্য এসডিএস সবসময় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।