আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। তবে শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের অন্য কিছু দেশেও কোটা ব্যবস্থা রয়েছে। এ বিষয়ে বিতর্ক যখন তুঙ্গে, তখন কোটায় নিয়োগ পাওয়া ভারতীয় এক কর্মকর্তাকে নিয়েও শুরু হয়েছে তোলপাড়।
এনডিটিভিসহ ভারতীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, মহারাষ্ট্রে ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিসের (আইএএস) একজন কর্মকর্তা চাকরিতে কোটায় নিয়োগ পাওয়ার আগেই সরকারি সব সুযোগ-সুবিধা দাবি করেছিলেন। এমনকি নিয়োগ পাওয়ার পরও জুনিয়র অফিসার হিসেবে যেসব সুবিধা পাওয়ার কথা নয়, সেগুলো নিয়েছেন তিনি।
ভারতে চালু থাকা কোটা প্রথায় নিয়োগ পাওয়া পূজা খেদকার নামের ওই কর্মকর্তা সম্প্রতি ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে বদলি হয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সূত্র স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, অ্যাসিস্ট্যান্ট কালেক্টর হিসেবে যোগ দেয়ার আগেই মুম্বাইয়ের পুনে জেলার ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টরের কাছ থেকে পৃথক বাড়ি ও গাড়ি দাবি করেছিলেন পূজা।
জানা যায়, পূজা খেদকার ভারতীয় প্রশাসন ক্যাডার আইএএসের ২০২৩ ব্যাচের কর্মকর্তা। সম্প্রতি তিনি তার ব্যক্তিগত বিলাসবহুল গাড়িতে সাইরেন, ভিআইপি নম্বর প্লেট এবং ‘মহারাষ্ট্র সরকার’ স্টিকার ব্যবহারসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগের মুখোমুখি হন। এমনকি দায়িত্ব পালনকালে অধিকার না থাকলেও, তাকে পুনের অতিরিক্ত কালেক্টর অজয় মোরের অফিস ব্যবহার করতেও দেখা গেছে।
কেবল তাই নয়, কোটায় চাকরি পাওয়া এই কর্মকর্তা তার অফিসের আসবাবপত্রও অপসারণ করেছেন। কিন্তু কোনো জুনিয়র অফিসারের এসব সুবিধা পাওয়ার কথা নয়। পূজার বাবা একজন সাবেক সরকারি কর্মকর্তা; তিনি মেয়ের এসব চাহিদা পূরণের জন্য সংশ্লিষ্টদের চাপ দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
পরে পুনের কালেক্টর সুহাস ডিভাসে মহারাষ্ট্র সরকারের মুখ্য সচিবের কাছে অভিযোগ করলে পূজা খেদকারকে ওয়াশিমে বদলি করা হয়।
এদিকে, পূজা খেদকারের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তিনি ভারত সরকার নির্ধারিত ওবিসি তথা ‘অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি’ কোটায় নিয়োগ পান। এ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ছাড় পেতে পূজা নিজেকে দৃষ্টি ও মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী বলে দাবি করেছিলেন। কিন্তু বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য বাধ্যতামূলক পরীক্ষা করাতে রাজি হননি তিনি।
ভারতীয় আইনে এটি বাধ্যতামূলক হলেও পূজা খেদকার তা করেননি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকটি সূত্র গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, পূজাকে কয়েক দফায় শারীরিক অক্ষমতার বিষয়টি পরীক্ষার জন্য ডাকা হলেও তিনি সেগুলো এড়িয়ে যান।
এসব অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতের ক্যাডার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন পূজার নিয়োগকে চ্যালেঞ্জ করেছিল। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে একটি ট্রাইব্যুনাল তার নিয়োগের বিরুদ্ধে রায় দেয়। তারপরও পূজা খেদকারের নিয়োগ ঠেকানো যায়নি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।