জেনজিদের মাঝে প্রচলিত একটি টার্ম ‘এসএমএইচ’। এর পূর্ণরূপ শেকিং মাই হেড। হতাশ হয়ে সাধারণত আমরা যেভাবে মাথা নাড়ি, ভার্চুয়ালি সেটা বুঝাতে নতুন এই প্রজন্ম এসএমএইচ লিখে থাকে। ইন্টারনেটে ঘুরে বেড়ানো লাইফ হ্যাকের কন্টেন্টগুলো সাধারণত বাস্তবধর্মী হয়না। এই ভিডিওগুলোই খাবি লামের কন্টেন্টের মূল বিষয়বস্তু। সবাই এই ভিডিও দেখে যেভাবে হতাশ হয় তা তিনি করে দেখান আর এর বিপরীতে স্বাভাবিক সহজ সমাধানগুলোই তুলে ধরেন।
হতাশায় মাথা নেড়ে, সহজ উপায়টি দেখিয়ে ‘এই যে এখানে বা এই যে এত সহজ’ দেখানোর যে ভঙ্গিমা, এটিই তাঁকে জনপ্রিয় করেছে। অল্প সময়ে সর্বোচ্চ বিনোদন আর হাস্যরসের জন্যই তিনি জেনজি প্রজন্মের কাছে এত দ্রুত পৌছাতে পেরেছেন। এখন তার টিকটক অনুসারী ১৬২ মিলিয়ন, যা টিকটকের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
একটি কথাও না বলা প্রথম ইনফ্লুয়েন্সার এই খাবি সবচেয়ে সর্বজনীন ভাষাটি বেছে নিয়েছেন। আর তা হলো ইশারা। কোন একটি বা দুটি ভাষায় কথা বলে হয়ত এত লোকের কাছে পোঁছানো যেত না। তার কন্টেন্টে কথার ফুলঝুরি, ঝকঝকে স্ক্রিন, চিত্তাকর্ষণকারী সাজসজ্জা, নাচ, গান কিছুই নেই। এমনকি তার ভিডিও এডিটিংও খুব সাধারণ পর্যায়ের।
শুধু টিকটক জয় করেই থামেন নি তিনি। খাবির ইন্সটাগ্রাম আর ইউটিউবেও আছে বহু অনুসারী। কিছদিন আগে তাকে দেখা গিয়েছে ভেনিস ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে। হলিউডেও শীঘ্রই দেখা যাবে এই আধুনিক যুগের নির্বাক অভিনেতাকে। অস্কার আর গ্র্যামির রেড কার্পেটে দেখি আমরা এই কন্টেন্ট ক্রিয়েটরের পদচারণা। ফ্যাশন জগতেও আনাগোনা আছে তাঁর। মাঝে মাঝেই ড্যাপার বা সোয়্যাগে ভরা হিপহপ লুকে দেখা দেন তিনি।
সোশাল মিডিয়ায় মানুষের চাহিদা দ্রুত পরিবর্তন হয়। ফাস্ট স্ক্রলিংয়ের এই সময়ে কোনো কন্টেন্ট ক্রিয়েটরের জনপ্রিয়তাই স্থায়ী নয়। এখানে মানুষের রুচি দ্রুত গতিপথ বদলায়।তাই ছোট পর্দা থেকে নিজেকে খাবি নিয়ে যেতে চান বড় পর্দায়, কাজ করতে চান কমেডি ফিল্মে। অস্কার জয়ের স্বপ্ন দেখছেন তরুণ এই কন্টেন্ট ক্রিয়েটর। এদিকে নতুন রেকর্ডের গুঞ্জন এখন খাবি লামেকে এনেছে আলোচনায়। ২০২৯ সালের মধ্যে তিনি নাম লেখাবেন বিলিয়নিয়ারের তালিকায়, এরকমই বলছেন বিশ্লেষকরা।
২০২০ সালে, মানে কোভিডের আগে এই চিত্র ছিল সম্পূর্ণ উলটো। সেনেগাল থেকে ইতালিতে অভিবাসী হিসেবে আসার পর একটি কারখানায় মেশিন অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন খাবি। কোভিড মহামারিতে চাকরি খোয়ানোর পর শুরু করেন টিকটকে কন্টেন্ট তৈরি। গেমিং আর নাচের ভিডিও দিয়ে তাঁর টিকটকে যাত্রা শুরু। তবে অযৌক্তিক লাইফ হ্যাক কন্টেন্টগুলোর রিয়্যাকশন ভিডিওই তাকে জনপ্রিয় করেছে। এরপরের গল্প তো সবারই জানা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।