প্রতিবছরের মতো আবারও মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের দোরগোড়ায় পবিত্র ঈদুল আজহা, যা কোরবানির ঈদ উৎসব হিসেবে পরিচিত। পশু কোরবানির মাধ্যমে মানুষকে ত্যাগের মহিমা শিক্ষা দেয় এ ঈদ।
কোরবানি ঈদে মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভ করার জন্য পশু কোরবানি করতে হয়। ফলে পশু ক্রয়–বিক্রয় করার জন্য দেশের নানা প্রান্তে হাটবাজার বসে থাকে। মহামারি মোকাবিলায় সারা দেশে প্রায় ১৫ দিন কঠোর বিধিনিষেধ চলমান ছিল, ফলে হাটবাজারসহ সব ধরনের যোগাযোগব্যবস্থা বন্ধ ছিল।
কিন্তু ঈদ উৎসব উপলক্ষে সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক গণপরিবহনসহ সবকিছুই কয়েক দিনের জন্য চালু করা হয়েছে। যানবাহনসহ শপিং মলগুলোতে জনসমাগম দেখা যাচ্ছে।
গণপরিবহনে যাতায়াত, পশু ক্রয়–বিক্রয়, ঈদের নামাজ সবকিছুতেই যেন স্বাস্থ্যবিধি ঠিক থাকে, এ ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। এমনকি পশু জবাই করার পরে পশুর মলমূত্র, রক্তসহ সব বর্জ্য দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলা একান্তই জরুরি।
খেয়াল রাখতে হবে, নিজের একটু অসচেতনতা যেন ভবিষ্যতে ক্ষতির কারণ না হয়ে দাঁড়ায়। তাই প্রত্যেকের সঠিকভাবে মাস্ক পরিধান ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা জরুরি। ব্যক্তি সচেতনতার পাশাপাশি প্রশাসনকেও জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে।
স্বাস্থ্যবিধি মানার উপায়
অত্যধিক লাল মাংস: সবজির তুলনায় মাংস হজম করা কঠিন। কোরবানির ঈদে মানুষ বেশি মাংস খায়। বিশেষ করে লাল মাংস। এটি শরীরে রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। বেশি পরিমাণে মাংস খাওয়ার ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। সুতরাং মাংস যদি খেতেই হয়, পরিমিত খান। সঙ্গে সাদা ভাত এবং সালাদ পাতে রাখুন।
শাকসবজি ও ফল কম খাওয়া: অনেকে শাকসবজি এবং ফল উপেক্ষা করে উৎসবে শুধু মাংস খান। শাকসবজি ও ফলের গুরুত্ব সবারই জানা। হজমে সহায়তা করে এসব খাবার। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। সুতরাং এ ক’দিন সবজি বা ফল খেতে ভুলবেন না।
রুটিন মেনে না চলা: ঈদের মতো উৎসবে অনেকে কোনো রুটিন মানতে চান না। এমনকি অনেক অসুস্থ মানুষও এ সময় শরীরের যত্ন নিতে ভুলে যান বা গাফিলতি করেন। অনেকে অপরিমিত আহার করেন। যা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে। রুটিন অনুযায়ী খাবার না খেলে তা হজম করতে শরীরকে অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে হয়। চর্বি সঠিকভাবে বিপাক করতে পারে না শরীরের প্রধান শক্তিঘর লিভার। ফলে দেখা দেয় কোলেস্টেরলের উচ্চ মাত্রা এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের অবনতি।
কোমল পানীয়: ঈদে হাই প্রোটিন ডায়েট হজম করার জন্য মানুষ কোমল পানীয় বেশি পান করে। যার পরিণতি মারাত্মক হতে পারে। কোমল পানীয়তে বিদ্যমান উচ্চ মাত্রার চিনি স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে থাকে।
মসলাদার খাবার: ঈদে মুখরোচক মসলাদার খাবার মানুষ বেশি রান্না করে। খাবারে লবণ এবং অধিক মসলা রক্তচাপের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এজন্য কম মসলা দিয়ে মাংস রান্না করা উচিত।
হাঁটার জন্য সময় না থাকা: ঈদ উদযাপনে ব্যস্ত সময় পার করায় ব্যায়াম বা হাঁটার সময় থাকে না। অথচ খাওয়া হয়ে যায় বেশি। এ কারণেও শরীরে রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়। হাঁটলে আপনার পাকস্থলী মাংস সঠিকভাবে হজম করতে পারবে। এটি হৃদরোগের বিপজ্জনক ঝুঁকিও হ্রাস করবে।
রান্নার তেল হিসেবে পশুর চর্বি ব্যবহার: পশুর চর্বি অস্বাস্থ্যকর। রান্নার তেল হিসেবে গরুর চর্বি ব্যবহার করা হলে তা শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। রান্না করার জন্য উদ্ভিজ্জ তেল ব্যবহার করা উচিত।
সবকিছুই অতিরিক্ত স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। উৎসবে আপনার ডায়েটে শাকসবজি এবং সালাদ রাখুন। আপনার প্লেটে কম তেল ও কম মসলায় রান্না করা খাবার যোগ করুন। সেদ্ধ মাংসজাতীয় খাবার তৈরির চেষ্টা করুন। মাংস খাওয়ার পরে গ্রিন টি পান করুন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।