জুমবাংলা ডেস্ক : এবারের ঈদে রাজধানীতে কোরবানির পশুর বর্জ্য ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণের ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। বুধবার জাতীয় ঈদগাহের প্রস্তুতি দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের সামনে তিনি এই ঘোষণা দেন।
মেয়র বলেন, আমরা প্রতিবার বর্জ অপসারণের যে লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে থাকি সেটা হলো ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেই বর্জ্য অপসারণ। সুতরাং ঈদের দিন যে বর্জ্য সৃষ্টি হবে সেটা ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই অপসারিত হবে এবং পরের দিন যে বর্জ্য অপসারিত হবে সেটাও ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই অপসারিত হবে।
গবাদি পশুর হাটের বর্জ্য ঈদের আগের রাত থেকে অপসারণ শুরু হবে বলে জানান মেয়র।
তিনি বলেন, যেহেতু আমরা জানি যে, রাতের পরে পশুর সংখ্যা কমে যায়, বিক্রি কমে যায়, হাটের পরিধিও কমে যায়, সেজন্য আমরা এই কাজটি আগের রাতে শুরু করব যাতে করে কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ নিয়ে কোনো রকম প্রতিবন্ধকতা না থাকে, বিশেষ করে যেসব এলাকায় হাট রয়েছে।
শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, হাট এবং কোরবানির পর বর্জ্য অপসারণের জন্য আলাদা কর্ম পরিকল্পনা তৈরি করেছেন তারা। যাতে একটার সাথে আরেকটার কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না হয়। দুইটাই এক নাগাড়ে চলবে। গতবারের অভিজ্ঞতা থেকে এবারের কর্মপরিকল্পনা একটু ঢেলে সাজানো হয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে আমরা হাটের জন্য আলাদা জনবল, আলাদা কর্মকর্তা এবং আলাদা যান-যন্ত্রপাতি নিয়োজিত করেছি। একসময় আমাদের যান-যন্ত্রপাতির কিছু দূর্বলতা ছিল, এবার ইনশাল্লাহ আমাদের কোনো দুর্বলতা নেই; আমরা পূর্ণভাবেই সক্ষম।
মেয়র বলেন, আমাদের বহরে এবার নিজস্ব অর্থায়নে ৩৫টা নতুন যান-যন্ত্রপাতি সংযোজন করেছি। ২৫টা ১০ টনের যান-যন্ত্রপাতি ইতোমধ্যে আমরা চালু করে ফেলেছি, ১০টা পে-লোডার লাগে, যেগুলো ময়লা অপসারণ করে, সেইগুলো সংযোজন হয়েছে। আরও প্রায় ১৫টি যান-যন্ত্রপাতি গাড়ি সংযোজন হচ্ছে। এক কথায় আমাদের যান-যন্ত্রাপাতির বহর অত্যন্ত সমৃদ্ধ। আমরা আশাবাদী, আমরা ঢাকাবাসীকে গতবার যে সুবিধা দিতে পেরেছি, তারচেয়ে আরও সুষ্ঠুভাবে আমাদের কার্য্ক্রম দিতে পারব।
ঈদের দিন বর্জ্য অপসারণের কাজ দুপুর ২টা থেকে শুরু হবে জানিয়ে মেয়র বলেন, ইনশাআল্লাহ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেই বর্জ্য অপসারণ করা হবে। সেইভাবে আমাদের জনবল ও যান-যন্ত্রপাতি প্রস্তুত করা হয়েছে। আমরা ইনশাল্লাহ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণ করতে সক্ষম হব এবং ঢাকাকে একটি পরিচ্ছন্ন নগরী হিসেবে সবার জন্য উপহার দিতে পারব।
গতবছর কোরবানির ঈদ ঘিরে ৪৮ ঘণ্টায় মোট ৪১ হাজার টন বর্জ্য অপসারণের কথা জানিয়েছিল ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।
এর মধ্যে উত্তর সিটি এলাকায় ২২ হাজার ৩৮৭ টন এবং দক্ষিণে ১৮ হাজার ৮৫২ টন বর্জ্য সরানোর কথা জানিয়েছিলেন সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা।
মেয়রের অনুরোধ : ফজলে নূর তাপস বলেন, ঢাকাবাসীর প্রতি আমি অনুরোধ করব, আহ্বান করব… যেহেতু আমাদের বিশাল কর্মযজ্ঞ হাটের বর্জ্য, কোরবানির পশুর বর্জ্য, নিয়মিত বর্জ্য সকল কিছুই আমাদের সিটি করপোরেশনকে পরিষ্কার করতে হয় আগের রাত থেকে। আমাদের ৭২ ঘণ্টা এই কার্য্ক্রম চলে, বিশ্রাম নিতে পারি না। আমি সকলকে অনুরোধ করব, দুই দিন, অর্থাৎ ঈদের দিন ও পরের দিন যেন সকল কোরবানি সস্পন্ন করা হয়, যাতে করে পরে নতুন করে কোরবানির পশুর বর্জ্য আর সৃষ্টি না হয়।
প্রত্যেক হাটের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ : শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, আমাদের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থাকবে। প্রতিটি হাটে আমাদের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থাকবে। আমাদের ভ্রাম্যমাণ আদালত থাকবে। আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে তদারকির জন্য রাখা হয়েছে। কোরবানির তিন দিন সার্বক্ষণিকভাবে তদারকির জন্য কর্মকর্তাদের দায়িত্ব বণ্টন করা হয়েছে। আমরা আশা করছি, পশুর হাটগুলো সঠিকভাবে পরিচালিত হবে। সকলে হাট থেকে পশু ক্রয় করতে পারবেন। কারো কোনো বিড়ম্বনা হবে না।
তিনি বলেন, কোনো সমস্যা যদি হয়, হাটের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ এবং কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষে জানালে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।