ময়মনসিংহের ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিয়ের আয়োজন। তবে এই আয়োজন পাত্র-কনের পরিবারের লোকজন কেউ করেননি। পুরো আয়োজনটি করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বিয়ের কনে নাদিয়া আফরিন নিগার বিশ্ববিদ্যালয়টির ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী। পারিবারিকভাবেই বিয়ে ঠিক হয়েছে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও চাঁদপুর সরকারি কলেজের শিক্ষক ইমরান হাসানের সঙ্গে।
বুধবার বিকেলে তাকে অবাক করে দিয়ে বান্ধবীরা তার গায়ে হলুদের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১নং গেট সংলগ্ন ‘সাওদা’ হোটেলের দোতলায়। পুরো আয়োজন দেখে নিগারের চোখ যেন ছানাবড়া!
এ ব্যাপারে নাদিয়া আফরিন নিগার বলেন, প্রত্যেক ভার্সিটিতেই যাদের পড়তে থাকা অবস্থায় বিয়ে হয় তদেরকে হল থেকে একটা হলুদ দেয় সিনিয়ররা, জুনিয়ররা, ফ্রেন্ডরা। আমাদের ভার্সিটিতে এই ট্রেডিশন নেই। আমার ফ্রেন্ডরা চেয়েছে এটা মেমোরেবল হোক সবার জন্য। আমার তিন কাছের বন্ধু সামান্তা, মিত্রা ও রিফাতের উদ্যোগ ছিলো এটি। পাশে ছিলো ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ।
আর আজকের অনুষ্ঠানে যোগদান করেছে মোটামুটি সব ব্যাচ, জুনিয়র সিনিয়র অনেকেই উপস্থিত ছিল। পূজার বন্ধে আমার বিয়ে হবে। আমার বাসা ঢাকায়।। সবাই যেতেও পারবে না। এজন্যই এই আয়োজন করেছে তারা।
গায়ে হলুদের পরিকল্পনার ব্যাপারে নিগার বলেন, ক্যাম্পাসে এই গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান আয়োজনের যে প্রধান উদ্যোক্তা সে আমার বান্ধবী সামান্তা। আমি জানতামই না সে আমাকে এই ভাবে অবাক করে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানটি করবে। এই আয়োজনের কথা আমি বাসায় বলেছি। সবাই সারপ্রাইজড আর খুশি এ কারণে যে আমি এমন কোথাও থাকি যেখানে আমার আরেকটা পরিবার আছে।
পুরো আয়োজনটির উদ্যোক্তা সামান্তা ও তার বন্ধুরা জানান, নাদিয়ার বিয়ে ঠিক হওয়ার পর থেকেই রেগুলার ক্লাস, টিউশনির চাপে বিয়ের শপিং, প্রিপারেশন কোনো কিছুতেই ঠিকভাবে সময় দিতে পারছিলাম না।
বারবার নাদিয়া বলছিলো সে হলুদের ঝামেলা করবে না, হলুদের প্রোগ্রাম স্কিপ করবে। আর তাছাড়া ওর বিয়ের অনুষ্ঠান ঢাকায় হওয়ায় বেশিরভাগ বন্ধুরা ওখানে যেতে পারবে না। এজন্যই মূলত বন্ধুরা মিলে ক্যাম্পাসে হলুদের আয়োজন করা। সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি আমাদের সবার জন্য দিনটাকে মেমোরেবল বানানোর।
এদিকে নিগারের বন্ধুরা ফেসবুকে ছবি ছাড়ার পর কৌতূহলী অনেকেই জানতে চাচ্ছেন, অনেক মজাও করছেন কেউ কেউ। কেউ আবার বলছেন, বিয়ে ক্যাম্পাসে কেন? পালিয়ে বিয়ে করছে নাকি ওরা? কেউ আবার পরিকল্পনা সাজাতে বসে পড়েছেন নিজের বিয়ের আয়োজনটাও ক্যাম্পাসেই এরকম মহা ধূমধামে সারতে।
বিয়ে ক্যাম্পাসে কেন? এই প্রশ্নের উত্তরে নিগার বলেন, পারিবারিকমতেই আমাদের বিয়ে হচ্ছে। বিয়ের পাত্র (ইমরান) আর আমি দুইজনই ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী। ইমরান বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ ব্যাচ আর আমি ১২ ব্যাচের। বিয়ের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামি ৭ অক্টোবর।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।