আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বর্তমানে উদয় কোটাকের নাম আমরা প্রত্যেকেই শুনেছি। ভারতের অন্যতম বড় ব্যাংক কোটাক মহিন্দ্রা ব্যাঙ্কের মালিক তিনি। দেশভাগের সময় পাকিস্তান থেকে ভারতে চলে আসেন তার বাবা। এরপর ১৯৫৯ সালের ১৫ মার্চ তার জন্ম হয়। তার বাবার কাপড়ের বড় ব্যবসা ছিল। রিলায়েন্সের প্রতিষ্ঠাতা ধিরুভাই আম্বানির খুব ভালো বন্ধু ছিলেন তার মামা। তিনি রপ্তানির ব্যবসায় নিযুক্ত ছিলেন। কিন্তু কেমন ছিল উদয়ের সাফল্যের গল্প?
মাথায় আঘাতই বদলে দিল জীবনের মোড়
১৯৭৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মাঠে ক্রিকেট খেলতে গিয়ে মাথায় বলার আঘাত লাগে তার। আর এরপরই তিনি সেই মাঠেই অজ্ঞান হয়ে যান। তাকে সাথে সাথে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও ডাক্তারের কথা শুনে পরিবারের লোকজনের মুখে হতাশার সৃষ্টি হয়। ডাক্তারের থেকে জানা যায় যে, উদয়ের ব্রেন হেমারেজ হয়েছে এবং অবিলম্বে তার অপারেশন করতে হবে। এরপর এক বছর লেগেছিল তার বাস্তবজীবনে ফিরে আসতে। কিন্তু এরপর পরীক্ষা দিতেই তিনি হয়ে গেলেন বোম্বে ইউনিভার্সিটিতে টপার। এরপর জামনালাল কলেজে ভর্তি হলেন তিনি। সেখান থেকেই নিজের এমবিএ সম্পূর্ন করেন তিনি।
ফাইন্যান্সিয়াল কনসালটেন্সির শুরু
এরপর উদয় কোটাক নিজের ফাইন্যান্সিয়াল কনসালটেন্সির অফিস খোলেন। সেই সময় বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ঋণের উপর ৬% এবং ১৬.৫% সুদ নিত। সেই সময় উদয় কোটাকের এমন একজনের সাথে দেখা হয়, যিনি টাটার কোম্পানির ‘নেলকোর’ প্রভূত অর্থের দেখাশোনা করছিলেন। সেইসময় নেলকো বাজার থেকে টাকা তুলছিল। এরপর উদয় কোটক তার বন্ধুদের নেলকোতে বিনিয়োগ করার কথা বলেন, এবং উদয়ের কথা শুনে তারা সেখানে বিনিয়োগ করেও ফেলে। এরপর আসে ১৯৮০ সাল যখন অনেক বিদেশী ব্যাঙ্ক ভারতে তাদের অফিস খুলেছিল। ফলে উদয় কোটক আরও অর্থ সংগ্রহের সুযোগ পান। তার জীবনে তিনি ১৯৮৫ সালকে নিজের ভাগ্যের সুচনাবর্ষ হিসেবে ধরে নিয়েছেন তিনি।
সেই ১৯৮৫ সালেই উদয় আনন্দ মাহিন্দ্রার সাথেও দেখা করেন, এবং আনন্দ তাকে তার নিজের ফাইন্যান্স ব্যবসা শুরু করতে বলে। ১৯৮৬ সাল নাগাদ আনন্দ মাহিন্দ্রার সহায়তায়, তিনি ৩০ লক্ষ টাকা দিয়ে সংস্থাটি শুরু করেছিলেন। এই কারণে তিনি তার ব্যাংকের নাম রাখেন কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাংক।
এরপর অনিল আম্বানির বিয়েতে গিয়ে উদয় কোটক একজন বন্ধুর সাথে দেখা করেছিলেন যিনি নিজের FD ব্যবসা থেকে মুক্তি পাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এরপর সুযোগ বুঝে উদয় কোটক সেই ব্যবসাকে ৫০ লাখে কিনে নেন। ব্যাবসা শুরুর ৫ বছরের মধ্যে কোটাক মাহিন্দ্রা মার্চেন্ট ব্যাঙ্কিং-এও যোগ দেন। ১৯৯১ সালে কোম্পানিটি পাবলিক ইস্যু নিয়ে সামনে আসে। এরপর একের পর এক সাফল্য ছুঁয়ে গেছে উদয় কোটাককে, আর ঘুরে তাকাতে হয়নি তাকে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।