আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্বজুড়ে ক্রিসমাস ডে অর্থাৎ যীশুখ্রিষ্টের জন্মদিন পালন করা হয় ২৫ ডিসেম্বর। বিশেষ এই দিনটি ঘিরে পশ্চিমা দেশগুলোর মতো এখন সব দেশেই চলছে আয়োজন। তবে ক্রিসমাস অনেক দেশেই অদ্ভুত উপায়ে পালিত হয়। এই উৎসব ঘিরে আছে মজার কিছু ঘটনা:
যীশুখ্রিষ্টের জন্মদিন হিসেবে ক্রিসমাস পালন করা হলেও এটি তার জন্মদিন নয় বলে মনে করেন অনেকে। কারণ বাইবেল মতে যীশু শীতে জন্মগ্রহণ করেননি। অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন যীশুর জন্ম হয়েছে বসন্তে। যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা প্রদেশে একটি শহর আছে, যার নাম সান্তাক্লজ। ইউক্রেনের বাসিন্দারা তাদের ঘরে রাখা ক্রিসমাস ট্রিতে মাকড়সার জাল রাখেন সৌভাগ্য নিয়ে আসার জন্য।
আইসল্যান্ডে ক্রিসমাস ঘিরে এক লোককথা প্রচলিত আছে। ক্রিসমাসের সময় শীতে ভালো গরম কাপড় না পড়লে বরফে থাকা একটি ইয়ুল ক্যাট নাকি জীবিত মানুষ খেয়ে ফেলে! তাই আইসল্যান্ডে ক্রিসমাসের সময় পরিবারের সবাই একসঙ্গে থাকে নিরাপত্তার স্বার্থে।
সুইডেনের লোককথা মতে সান্তাক্লজ তার বাহনে নয় বরং বিশাল এক ছাগলে চড়ে সবাইকে উপহার দেন। অনেকে আবার মনে করেন, সেই ইয়ুল গট বা বিশাল ছাগলের আছে আধ্যাত্মিক ক্ষমতা, যার মাধ্যমে সে ক্রিসমাসের প্রস্তুতি ঠিকমতো হলো কিনা নিশ্চিত করে।
সুইডেনের ইয়াভলা শহরে প্রতিবছর ক্রিসমাসের একমাস আগে খড় দিয়ে তৈরি করা হয় বিশাল এক ছাগলের ভাস্কর্য। সুইডিশদের একটি বিরাট অংশ ১৯৬০ সাল থেকেই ক্রিসমাস ছুটিতে ডোনাল্ড ডাক কার্টুন দেখে সময় কাটায় বেশি।
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় ক্রিসমাস টাউনে বছরজুড়ে উদযাপন করা হয় ক্রিসমাস উৎসব।
জাপানিরা ক্রিসমাসের সময় খাবার খেতে পুরো পরিবার নিয়ে চলে যায় কেএফসি রেস্টুরেন্টগুলোতে।
ক্রিসমাস ঘিরে রাশিয়ানরা পাগলামি করে অনেক। ক্রিসমাস পরবর্তী ৭ জানুয়ারি থেকে ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়টাকে তারা বছরের সবচেয়ে অপবিত্র মনে করে। তাদের ভাষায় সময়টার নাম ‘সিয়াতগি’। এ সময় একজন আরেকজনের সাথে বিভিন্ন ধরনের মজা করা, বরফ ঠান্ডা লেক ও নদীতে ঝাঁপ দেয়ার মতো উদ্ভট সব কাজ করে।
মেক্সিকোর অনেক পরিবার ক্রিসমাসের সময় তাদের বাড়িতে অথবা বাগানে নেটিভিটি সিন তৈরি করে। অর্থাৎ শিশু যীশুর জন্ম, পরিবার, এঞ্জেল, গ্রামবাসী এসব কিছুর অবয়ব তৈরি করা হয় শৈল্পিকভাবে।
ক্রিসমাসের সময় অস্ট্রেলিয়ার সি বিচে নারীদের বিকিনি ও সুইমস্যুট পরে ঘুরতে দেখা যায়। আর সান্তাক্লজের টুপি পরে সমুদ্রে ছেলেদের সার্ফিং করতে দেখা যায়।
স্পেনের বেশিরভাগ গ্রামে ক্রিসমাস ঘিরে ২২ ডিসেম্বর লটারির আয়োজন করা হয়। পরিবার ও গ্রামের সবাই এক রাতে ধনী হওয়ার স্বপ্ন দেখে। সেই ক্রিসমাস লটারিতে সবচেয়ে বেশি ৬০০ মিলিয়ন ইউরো জেতারও সুযোগ পায় ভাগ্যবানরা।
সুইজারল্যান্ডে সান্তাক্লজের অন্য রূপ দেখা যায় ক্রিসমাসে। সাদা দাড়ি, লাল পোশাক পরা সে লোক সবাইকে উপহার দেয়, তাকে ইয়ামিক্লাউস বলে স্থানীয়রা। তবে তার বিরোধী কালো দাড়িসহ আরেকজনকে দেখা যায় ক্রিসমাসের সময়। তাকে সুটজলি বলা হয় স্থানীয় ভাষায়।
রাশিয়ায় জন্ম নেয়া আমেরিকান গায়ক আরভিং বার্লিনের গাওয়া গান ‘হোয়াইট ক্রিসমাস’ ১৯৪২ সালে মুক্তি পায়। ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া সিঙ্গেল এটি। ১০০ মিলিয়নেরও বেশি কপি বিক্রি হয়েছে এই গান।
ব্রিটিশ গায়ক পল ম্যাকার্টনি তার গান ‘ওয়ান্ডারফুল ক্রিসমাস টাইম’ এর জন্য প্রতি বছর ৪ লাখ ডলার সম্মানী পান। অনেক বোদ্ধার মতে এটি তার সবচেয়ে বাজে গান।
‘উইন্টার ওয়ান্ডারল্যান্ড’, ‘দ্য ক্রিসমাস সং’, ‘হোয়াইট ক্রিসমাস’সহ ক্রিসমাস নিয়ে জনপ্রিয় বেশিরভাগ গানই লিখেছে ইহুদীরা।
২০১০ সালে ফেসবুকের এক জরিপে জানা গেছে ক্রিসমাসের দুই সপ্তাহ আগে বেশিরভাগ প্রেমিক-প্রেমিকা সম্পর্ক ছিন্ন করে।
আমেরিকানরা প্রতি বছর ১.৬ বিলিয়ন ক্রিসমাস কার্ড কেনেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।