প্রাচীনকাল থেকে মানুষ রাতের আকাশ দেখে মুগ্ধ হয়েছে। খোঁজার চেষ্টা করেছে আকাশ ও পৃথিবীর সম্পর্ক। আকাশ ও পৃথিবী নামের এই বইয়ে সেই সম্পর্ক ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ছোটদের জন্য, সহজ ভাষায়। বইটি প্রকাশিত হয়েছে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের ‘বিদেশি ভাষায় সাহিত্য প্রকাশালয়’ থেকে।
ক্রিস্টফার কলম্বাস ইতালির লোক, তাঁর জন্ম জেনোয়া শহরে। কিন্তু তাঁর কৈশোর কাটে পর্তুগালে। পর্তুগীজ নাবিকদের সঙ্গে দূর যাত্রায় যান তিনি। ৩৫ বছর বয়সেই সুদক্ষ নাবিক হিসেবে তাঁর খ্যাতি রটে। এই বয়সে ভারত ও চীনে সমুদ্রযাত্রার সঙ্কল্প প্রথমে জাগে তাঁর মনে।
এ দুটি সমৃদ্ধ দেশে স্থলপথে যাত্রা সুদীর্ঘ ও কষ্টসাধ্য ছিল, বরাবর পূর্বাভিমুখী যেতে হতো। পৃথিবী যে গোলাকার এ ধারণা তখন বেশ জোরদার। তাই কলম্বাসের মনে হলো যে পশ্চিমে পাড়ি দিলেও ভারত ও চীনে পৌঁছনো যাবে।
তিনি জানতেন না যে তাঁর পথ আটকাবে আমেরিকার বিরাট মহাদেশ। এও তিনি জানতেন না যে সমুদ্রপথে চীন অনেক দূর। যদিও স্থলপথে যাত্রার চেয়ে সমুদ্রযাত্রা সহজ। সত্যি বলতে পৃথিবীর আয়তন তখনকার দিনে জানা ছিল না। লোকে যা ভাবত তার চেয়ে আয়তনে অনেক বড় ছিল পৃথিবী।
অভিযানের তোড়জোড়ের অনুমতি লাভে বিশেষ বেগ পেতে হলো কলম্বাসকে। তাঁর ধারণায় বিশ্বাস করে এমন লোক ছিল না পর্তুগালে। সেখান থেকে তিনি যান প্রতিবেশী স্পেনে। কয়েক বছরের প্রচেষ্টার পর তিনটি ছোট্ট জাহাজের ভার তাঁকে দেওয়া হলো। ১৪৯২ সালের ৩রা আগস্টে পালস বন্দর থেকে তিনি যাত্রা করলেন এগুলোতে (স্প্যানিশ ভাষায় এদের বলত কারাভেলা)।
তিনটি জাহাজে—সান্টা মারিয়া, নিনিয়া ও পিন্টা। সবসুদ্ধ ছিল নব্বইটি অফিসার ও নাবিক। লোকবল কম, দীর্ঘ যাত্রা—কিছুতেই ডরালেন না এ্যাডমিরালইউরোপীয়রা জানল যে নব আবিষ্কৃত দ্বীপগুলো ভারত নয়, এদের পেছনে আছে তাদের কাছে সম্পূর্ণ অজানা বিরাট একটি মহাদেশ। তবু কলম্বাসের দেওয়া নামগুলো রয়ে গেল, এদের বলা হতো ওয়েস্ট ইন্ডিয়া আর আসল ভারতের নাম হলো ইস্ট ইন্ডিয়া (বর্তমানে শুধু ভারত নামে পরিচিত)।
ভারতের অধিবাসীরা হলো ইন্ডিয়ান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের দেশজ বাসিন্দাদেরও ডাকা হয় ইন্ডিয়ান বলে। দুটি জায়গার মধ্যে সমুদ্রের বিরাট ব্যবধান, তবু কলম্বাসের ভুলের জন্য তাদের এই নাম দেওয়া হয়।
ইন্ডিজ দ্বীপপুঞ্জ পেরিয়ে যে বিরাট মহাদেশ সেটি আবিষ্কৃত হয় মহানাবিক কলম্বাসের দৌলতে। কিন্তু তার নাম রাখা হলো অভিযাত্রী আমেরিগো ভেসপুচির নামে, ইনি নতুন পৃথিবীতে কয়েকবার পাড়ি দেন (আমেরিকাকে এখনো প্রায়ই নতুন পৃথিবী বলা হয়)। কিছু দিন পরে বন্ধুদের কাছে চিঠিপত্রে কলম্বাস তাঁর নানা যাত্রার বর্ণনা দেন।
১৫০৬ সালে দরিদ্র প্রায় বিস্মৃত কলম্বাস মারা যান। কয়েক বছর পরে আর একটি মহাঅভিযাত্রী, ফার্ডিনান্ড মাগেলানের নেতৃত্বে জাহাজের একটি স্কোয়াড্রন পৃথিবী পরিক্রমণ করে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।