নিজস্ব প্রতিবেদক : বর্তমানে যমুনা তার ব্যবসা সম্প্রসারন করেছে সারাদেশব্যাপী। বিশেষ করে হোম অ্যাপ্লায়েন্স ও ইলেকট্রনিক্স পণ্যে যমুনার জনপ্রিয়তা এখন তুঙ্গে। আর এই সফলতা এসেছে প্রতিষ্ঠানটির সততা এবং পণ্যের মান নিয়ে কোন কম্প্রমাইজ না করার পাশাপাশি সব ডিলাদের প্রত্যক্ষ অবদানের জন্য। আগামীতে যমুনা এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সে ক্ষেত্রে পণ্যের ডিলার ও ক্যাটাগরি এক্সপানশনসহ ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী আরও ব্যবসা সম্প্রসারণের উদ্যোগ অব্যহত রয়েছে।
একটি জাতীয় দৈনিকের সঙ্গে কথপোকথনে এমনটাই জানিয়েছেন যমুনা ইলেকট্রনিক্স ও অটোমোবাইলস লিমিটেডের হেড অব বিজনেস সাজ্জাদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, দেশের স্বনামধন্য যমুনা গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান যমুনা ইলেক্ট্রনিক্স এবং অটোমোবাইলস এক যুগেরও বেশি সময় ধরে অত্যন্ত সুনামের সাথে এই দেশে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। ইদানিং প্রতিয়মান হচ্ছে যে, যমুনা যমুনা ইলেক্ট্রনিক্স এবং অটোমোবাইলস এর সাথে ডিলারশিপ নেয়ার জন্য ব্যবসায়ীদের প্রচুর আগ্রহ আর এর পিছনে প্রধান কারণ ইলেক্টনিক্স পণ্যের প্রসার এবং ক্রেতার ক্রমবর্ধমান চাহিদা ।
সাজ্জাদুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে মার্কেটে ট্রেন্ড অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে, ইলেকট্রনিক্স ব্যবসায় তিনটি সাব ক্যাটাগরি তৈরি হয়েছে যেটা হল- ফ্রিজ, টিভি, এসির মত বিগ এপ্লায়েন্স, স্মল হোম অ্যাপ্লায়েন্স এবং কিচেন অ্যাপ্লায়েন্স। এই তিনটি ক্যাটাগরিতেই আলাদা আলাদা করে ভোক্তার চাহিদার ঊর্ধগতি সুনির্দিষ্টভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। অতীতের ট্রেন্ড ছিল এই সবগুলোই মোটামুটি একই ব্যক্তি অথবা ডিস্ট্রিবিউটরের দ্বারা সেন্ট্রালাইজডভাবে ব্যবসা পরিচালনা করত। কিন্ত ইদানিং এই আলাদা আলাদা ক্যাটাগরিতে নতুন সফল ব্যবসায়ী অথবা উদ্যোক্তাদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। আর এটার কারণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের গত ২ দশকে এই সেক্টরটা একই সাথে ভার্টিক্যাল এবং হরাইজোন্টাল দুইভাবেই গ্রোথ পেয়েছে মানুষের গড় আয় বৃদ্ধি এবং লাইফস্টাইল চেঞ্জের মত গুরুত্বপূর্ণ কারণগুলোর জন্য।
‘এমনকি জেলা এবং থানা সদরের মার্কেট পয়েন্ট ছাড়াও অনেক ইউনিয়নে পরিসদ বাজারেও সুন্দর গোছানো ইলেকট্রনিক্সের পণ্য বিক্রির দোকান সংখ্যা বেড়ে গেছে এবং ভোঁগলিক লোকেশনের সুবিধার কারনে এইসব পয়েন্টগুলো থেকে অনেক বড় মার্কেট পয়েন্টের সমপরিমাণ বিক্রি নিশ্চিত হচ্ছে। দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং ডিজিটালাইজেশনের এবং কোম্পানি গুলোর থানা ইউনিয়ন পর্যায়ে বিক্রয়োত্তর সেবা নিশ্চিত করনের কারনে মানুষের মধ্য একটি অভ্যস্ততা বা নির্ভরতার জায়গা তৈরি হয়েছে তার ঘরের কাছের জায়গা থেকে এই ধরনের পণ্যগুলো ক্রয় করলে পরবর্তীতে সার্ভিস এবং সেবা পেতে সুবিধা বেশি হয়,’ যোগ করেন তিনি।
পরিসংখ্যান বলছে গত ২০ বছরে ইলেকট্রনিক্স বিক্রি করার মত মার্কেট পয়েন্ট হিসেবে প্রায় তিনগুণ মার্কেট পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সাথে দোকানের সংখ্যাও বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে।
দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্র্যান্ডে পরিণত হওয়ার পেছনে সবচেয়ে কোন বিষয়টি ভূমিকা রেখেছে জানতে চাইলে সাজ্জাদুল ইসলাম বলেন, ‘বিগত কয়েক বছরে যমুনা পণ্যের বাজার চাহিদা কয়েকগুণ বেড়েছে। দেশি বিদেশি সবধরনের ব্র্যান্ডের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেই যমুনা এখন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্র্যান্ডে পরিনত হয়েছে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য কিছু কোম্পানির অনিয়ম এবং অব্যবস্থাপনা কারণে এই মুহূর্তে বাজারে একটা নেতীবাচক প্রভাব পড়েছে। এক্ষেত্রে যমুনার একটা সুনাম বরাবরই ছিল। যমুনা নীতিগত জায়গা থেকে ব্যবসায়ীদের সুরক্ষা ও ব্যবসায় সততা বজায় রেখেছে। মার্কেট ও ডিলারদের সবসময় পর্যবেক্ষণ করেছে এবং প্রয়োজনী সবধরণের সহায়তা অব্যহত রেখেছে। অন্যদিকে সারাদেশে ক্রেতাকে পণ্যের বিক্রয় পরবর্তী সেবা সহজতর করা হয়েছে। ক্রেতার ক্রয় ক্ষমতার সঙ্গে পণ্যের বেস্ট কোয়ালিটি ও দাম নির্ধারণ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘কিছু কোম্পানির অনিয়ম এবং অব্যবসায়িক কৌশলের কারণে এই মুহূর্তে বাজারে ডিলারদের মধ্যে একটা বিশাল গ্যাপ তৈরি হয়েছে। যার কারণে আমরা অনেক নতুন উদ্যোক্তাকে ব্যবসায় আনতে পেরেছি। অসুস্থ প্রতিযোগিতার মধ্যেও আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছি সঠিক পথে থাকতে এবং সক্ষম হয়েছি আমাদের প্রত্যেকটি ডিলারের বাৎসরিক গ্রোথ অর্জন করতে এবং তাদের বিজনেস হেলথ সঠিক রাখতে। বিগত বছরগুলোতে সবচাইতে বেশি নতুন উদ্যোক্তাকে ইলেকট্রনিক্স সেক্টর ব্যবসায় সফল করার জন্য ভূমিকা রেখেছে যমুনা ইলেকট্রনিক্স। আমরা শুধুমাত্র তাদেরকে ব্যবসায় অন্তর্ভুক্তিকরন করিনি, তাদের ব্যবসার সেটআপ দেয়া, তাদের ম্যানপাওয়ার রেডি করে দেয়া, তাদের ব্যবসার মুনাফা নিশ্চিত করানো এবং তাদের সঠিক গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য আমাদের টিম সবচাইতে বেশি আন্তরিক ছিল। আপনারা জেনে খুশি হবেন, আমাদের ৭০% নতুন উদ্যোক্তারা প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বছরের মধ্যে ধারাবাহিকভাবে ভার্টিকাল গ্রোথ অর্জনে সক্ষম হয়েছে। যেমন প্রথম বছরে যিনি দেড় কোটি করেছেন, পরের বছরে তিন কোটি এবং এর পরের বছর ৬ কোটি ব্যবসা করতে সামর্থ্য হয়েছেন।’
নতুন ডিলারদের ক্ষেত্রে যমুনা কি সুযোগ রাখছে? এই প্রশ্নের উত্তরে যমুনা ইলেকট্রনিক্স ও অটোমোবাইলস লিমিটেডের হেড অব বিজনেস বলেন, ‘যারা যমুনার নতুন ডিলার হতে চায় তাদের আমরা সবথেকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকি। এরই ধারাবাহিকতায় গত দু-বছরে আমরা প্রায় ২শ’ নতুন ডিলারকে তার ব্যবস্যা স্টাবলিসমেন্টে প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা দিয়েছি। অনেকেই ভাবে আমাদের প্রোডাক্টের লাক্সারি ও ভ্যালু যা তাতে ডিলারশীপ নিতে গেলে বিশাল ইনেভেস্টমেন্ট করতে হবে, হয়ত ১ থেকে দেড় কোটি টাকা লাগবে। কিন্ত বাস্তবে বিষয়টা এমন না। দেখা গেছে থানা লেভেলের যমুনার বিভিন্ন পয়েন্টে মাত্র ২০ থেকে ২২ লাখ টাকার ইনভেস্টমেন্ট নিয়েও একজন ডিলারকে প্রথম বছরের মধ্যে ২ থেকে ৩ কোটি টাকায় রিচ করেছি। এমনকি মাত্র ২ বছরের মধ্যে তারা ইনভেস্টমেন্ট ব্যাক পেয়েছে এবং প্লানিং করে ৬৫% কোম্পানির বাৎসরিক প্রবৃদ্ধি হারে পৌছে দিতে সক্ষম হয়েছি।’
নতুন উদ্যোক্তাদের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য এখন এই সেক্টরে বিনিয়োগে সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে। কারণ শুধুমাত্র ব্যবসা পরিচালনার জন্য টিম তৈরি করা এবং সঠিক সেটআপ দেয়া ও সঠিক কৌশল অনুসরণ করা নিশ্চিত করতে পারলেই আপনি একজন সঠিক সফল ব্যবসায়ী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন। দেখতে হবে, যে কোম্পানির সাথে ব্যবসা করছেন উক্ত কোম্পানির সঠিক গুণগত মানের পণ্য পাচ্ছেন কিনা, বিক্রয় পরবর্তী সেবা দেয়ার জন্য সঠিক জনবল এবং অবকাঠামো তাদের আছে কিনা। একটা জিনিস খেয়াল রাখতে হবে আপনি আপনার পণ্য বিক্রি এবং রিটেল করার জন্য কোন সুনির্দিষ্ট এরিয়া কিংবা মার্কেট পয়েন্টে এক্সক্লুসিভভাবে পাচ্ছেন কিনা।’
পণ্যের মান উন্নয়নে যমুনা কি করছে জানতে চাইলে সাজ্জাদুল ইসলাম বলেন, ‘এই সেক্টরের সম্পৃক্ত সকল ব্যবসায়ী্, সার্ভিস টেকনিশিয়ান, রিটেইলার এমনকি যমুনার গ্রাহকদের কাছে সুস্পষ্ট যে, যমুনা রেফ্রিজারেটর, এসি, এল.ই.ডি টিভি এবং অন্যান্য এপ্লায়েন্স এর গ্রাহক সন্তুষ্টির লেভেলটা সুনির্দিষ্টভাবে অনেক ঊর্ধ্বে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, আমাদের রেফ্রিজারেটরে বিক্রয় পরবর্তী গ্রাহকের কমপ্লেন অনুপাত অনেক কম। সেটা এমনকি এক পারসেন্টেরও নিচে। যেখানে ইন্ডাস্ট্রি এভারেজ হচ্ছে ১২ থেকে ১৫ পার্সেন্ট। সেক্ষেত্রে বিক্রেতাদের টেনশন, কাস্টোমারদের ভোগান্তি পোহাতে হয় না। আমরা ধারাবাহিকভাবে আমাদের নতুন পণ্যসমূহে এই ইমেজ রাখতে বদ্ধপরিকর এবং পণ্যের গুণগত মান এবং উপস্থাপনা দিনে দিনে আরো সমৃদ্ধ করার ক্ষেত্রে ম্যানেজমেন্টের বিশেষ মনোযোগী রয়েছে।’
পাবনার শিম যাচ্ছে ঢাকাসহ সারাদেশে, ভালো দাম পেয়ে খুশি চাষিরা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।