জুমবাংলা ডেস্ক: ছাত্রছাত্রীদের আণাগোণায় মুখরিত হয়েছে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ; ক্লাস শুরুর ঘণ্টাও বেজে গেছে। এক পিরিয়ড পেরিয়ে যায়, কখনও দুই পিরিয়ড; কিন্তু শ্রেণি শিক্ষক তখনও আসেননি। একটু পর দেখা গেল শিক্ষকদের কেউ গল্পে মশগুল, কেউ অন্য সহকর্মীর চুল বেধে দিচ্ছেন; কেউবা বেছে দিচ্ছে উকুন।
এমনই এক পরিস্থিতিতে হঠাৎ শ্রেণিকক্ষ পরিদর্শনে এসে হতভম্ব হয়ে গেলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
শ্রেণি শিক্ষকের অনুপস্থিতিতে কচিকাঁচার দল হুটোপুটি করে বেড়াচ্ছিল, তারা বড় অফিসার দেখে একদম চুপসে গেল। জিজ্ঞাসায় জানাল, স্যার-ম্যাডামরা তো এমনই করেন।
অতঃপর বিদ্যালয় পরিদর্শনে আসা সেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চক-ডাস্টার হাতে পাঠদান শুরু করলেন।
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার মগড়া চড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শ্রীকোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বোয়ালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রানীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দবিরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন শেষে এমন তথ্যই জানালেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. উজ্জল হোসেন।
মাত্র কিছুদিন আগে উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেওয়ার পর গত ৭ এপ্রিল ও ৯ এপ্রিল তিনি উপজেলার সহ বেশ কয়েকটি স্কুল পরিদর্শন করেন।
তিনি জানান, সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একজন শিক্ষকেরও উপস্থিতি পাননি তিনি। বেলা ১০টা পর্যন্ত স্কুলগুলোতে অধিকাংশ শিক্ষক আসেন না।
রানীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে তিনি দেখতে পান, স্কুলের বারান্দায় এক শিক্ষিকার চুলের বেণি বেঁধে দিচ্ছেন অন্য একজন মহিলা। অন্য একটি স্কুলে এক শিক্ষিকাকে শিক্ষার্থীদের দ্বারা মাথার উকুন বেছে নিতে দেখেন তিনি।
ইউএনও উজ্জল আরও জানান, তিনি স্কুলে প্রবেশ করার পর বারান্দায় বসে থাকা শিক্ষকরা দ্রুত অফিস কক্ষে ঢুকে পড়েন।
দবিরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের কাউকে না পেয়ে নিজেই পাঠদান করেন।
তিনি জানান, যেসব স্কুলে অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা পাওয়া গেছে সেসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তিনি উপজেলা শিক্ষা অফিসকে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দিয়েছেন।
উজ্জল হোসেন বলেন, ‘সরকার প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। এর জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে। অথচ এখানে স্কুলগুলো সেভাবে তদারকি করা হয় না। শিক্ষকদের মধ্যেও রয়েছে দায়িত্বহীনতা ও আন্তরিকতার অভাব। আমি নিয়মিত স্কুলগুলো পরিদর্শনে যাবো।’
দবিরগঞ্জ এলাকায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক জানান, নতুন ইউএনও প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শনের যে উদ্যোগ নিয়েছেন তাতে তারা খুশি। আর এই উদ্যোগে স্কুলের শিক্ষকরা দায়িত্বশীল হবেন বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এ ব্যাপারে উল্লাপাড়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আল মাহমুদর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
সূত্র: সমকাল
পরীক্ষার খাতা হাতে হল থেকে ছাত্রলীগ নেতার ফেসবুক লাইভ (ভিডিও)
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।