জুমবাংলা ডেস্ক: কিশোরগঞ্জে শহরের পশ্চিমে নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত প্রায় আড়াইশ বছরের পুরোনো ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ। মসজিদটির ইমরাত খুবই সুন্দর এবং নির্মাণশৈলীও বেশ চমৎকার। তিন তলা বিশিষ্ট পাগলা মসজিদের ছাদে তিনটি বড় গম্বুজ এবং ৫ তলা ভবনের সমান একটি মিনার বহুদূর থেকে সহজেই দৃষ্টি কাড়ে। কিন্তু এই মসজিদের সৃষ্টি কীভাবে?
মহাবীর ঈশা খানের অধস্তন পুরুষ দেওয়ান জিলকদর খান ওরফে জিলকদর পাগলা দুনিয়াদারি ছেড়ে আধ্যাত্মিক সাধনায় একাকী জীবনযাপন করতেন। ফলে তিনি মানুষের কাছে ‘পাগলা সাহেব’ বলে পরিচিত ছিলেন। এই আধ্যাত্মিক পুরুষ খরস্রোতা নরসুন্দা নদীর মধ্যস্থলে মাদুর পেতে ভেসে এসে বর্তমান মসজিদের কাছে স্থিত হন এবং তাকে ঘিরে আশেপাশে অনেক ভক্তকুল সমবেত হন।
তার ইবাদত-বন্দেগির জন্য দেওয়ান পরিবারের পক্ষ থেকে পাগলা সাহেবের নিজের পছন্দের স্থান নরসুন্দা নদীর মাঝখানে টিলার উপর একটি টিনের ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়। ওই ঘরটি পরবর্তীতে ‘পাগলা মসজিদ’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। এমন জনশ্রুতিই সবচেয়ে বেশি সমাদৃত।
অপর জনশ্রুতি অনুসারে, তৎকালীন কিশোরগঞ্জের হয়বতনগর জমিদার পরিবারের এক নিঃসন্তান বেগমকে জনগণ ‘পাগলা বিবি’ বলে ডাকত। দেওয়ানবাড়ির এ বেগম নরসুন্দার তীরে স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে একটি মসজিদ নির্মাণ করলে ‘পাগলা বিবির মসজিদ’ নামে পরিচিতি পায়।
পাগলা মসজিদটি শুধু ইসলাম ধর্মাবলম্বীর কাছে নয়, বৃহত্তর ময়মনসিংহ ও এর আশেপাশের অঞ্চলে সব ধর্মাবলম্বীর কাছে অত্যন্ত পবিত্র ধর্মীয় স্থান হিসেবে পরিগণিত। এই মসজিদে মানত কিংবা দান খয়রাত করলে মনোবাসনা পূর্ণ হয়- এমন বিশ্বাস থেকে বিভিন্ন বয়সী হিন্দু-মুসলিমসহ নানা ধর্ম-বর্ণের নারী-পুরুষ মানত নিয়ে এখানে আসেন। নগদ টাকা-পয়সা, স্বর্ণ ও রুপার অলংকারের পাশাপাশি গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি দান করেন। অধিক দান-খয়রাতের কারণে পাগলা মসজিদ ইতোমধ্যেই দেশের অন্যতম আয়কারী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।