জুমবাংলা ডেস্ক: খাদ্য অধিকার ও স্বাস্থ্যগত উন্নয়ন তরান্বিত করতে তরুণদের দীপ্ত শপথ গ্রহনের মধ্য দিয়ে গত মঙ্গলবার রাত থেকে শুরু হয়েছে ‘অ্যাকট ফোর ফুড অ্যাকট ফোর চেইঞ্জ’ নামে ব্যাতিক্রমী ক্যাম্পেইন।
বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, আয়ারল্যান্ড, ব্রাজিল, সুইজারল্যান্ড চীনসহ বিভিন্ন দেশের তরুণদের অংশগ্রহণে অনলাইন প্লাটফর্মে আয়োজিত আলোচনা সেশনের মাধ্যমে এর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইসপ্রুভড নিউট্রিশন (গেইন) ও ইউকে ভিত্তিক বেসরকারি সংস্থা দি ফুড ফাউন্ডেশনের আয়োজনে এতে প্রায় ১৮ টি দেশ অংশ নেবে। আয়োজনে সহযোগী হিসেবে থাকছে যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ড সরকার।
এর মূল লক্ষ্য জলবায়ু পরিবর্তন ও জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে (এসডিজি) সুস্বাস্থ্যের বিষয়টি বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়া। এছাড়া ক্যাম্পেইনে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে খাদ্য নিরাপত্তা, খাদ্য অধিকার, নিরাপদ খাবার ও পুষ্টি উন্নয়ন বিষয়গুলি বিশেষ গুরুত্ব পাবে।
এতে অ্যাডভোকেসি কার্যক্রম হিসেবে থাকছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে খাদ্য সচেতনতা নিয়ে তরুণদের শপথগ্রহণমূলক বক্তব্য ও বিশেষ ছবি পোস্ট করা এবং ইউটিউবে ভিডিও শেয়ারিং।
এছাড়া এর গুরুত্ব তুলে ধরে বিভিন্ন সময়ে টুইট করা ও ইনস্টগ্রামে ছবি দিয়ে বিশেষ প্রচার-প্রচারণা করা হবে। আপাতত ইউনাইটেড ন্যাশন ফুড সিস্টেম সামিটকে লক্ষ্য রেখে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর নাগাদ এই ক্যাম্পেইন চলবে। তবে এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২০৩০ সাল নাগাদ ক্যাম্পেইনটি চালু রাখার ব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
অনলাইন প্লাটফর্মে আয়োজিত এই আলোচনায় অংশ নেন ইউনাইটেড ন্যাশন ফুড সিস্টেম সামিট (ইউএনএফএসএস) অ্যাকশন ট্র্যাক -১ এর ইয়ুথ লিডার ও গেইনের ‘ভালো খাবো, ভালো থাকবো’ ক্যাম্পেইন এর প্রতিনিধি দীপ্তি চৌধুরী, লেবাননের ইয়ুথফোরন্যাচারের আঞ্চলিক পরিচালক রায়ান কাশেম, ভারতের হেলথগ্রোসেট এর প্রতিষ্ঠাতা প্রিয়া প্রকাশ, স্কেলিং আপ নিউট্রিশন মুভমেন্ট (সান)-এর লিড গ্রুপ মেম্বার সোফি হেলি প্রমূখ।
এতে আয়ারল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রী সিমন কভনি এক ভিডিও বার্তায় ক্যাম্পেইনের সাফল্য কামনা করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সাংবাদিক ফেমি ওকে।
ক্যাম্পেইন সম্পর্কে গেইন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. রুদাবা খন্দকার বলেন, বিশে^র বিশাল তরুণ জনগোষ্ঠী বোঝাপড়ার ভিত্তিতে ইতিবাচক পরিবর্তনে নিজেদেরকে যুক্ত রাখার চেষ্টা করে। পরিবর্তনকারী, বর্তমান ও ভবিষ্যতের নেতৃত্ব হিসেবে তরুণরা বিশেষত মেয়ে ও যুব নারীরাই এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখে। তাই সকলের জন্য সাশ্রয়ী, পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাবার গ্রহণে উৎসাহিত করতে তারাই পারে খাদ্য ব্যবস্থাকে একটা পদ্ধতিগত রুপ দিতে।
তিনি বলেন, চলমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে পুষ্টিকর খাবার ও নিরাপদ খাবারের মাধ্যমে সুরক্ষার বিষয়টি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
দীপ্তি চৌধুরী বলেন, আমি দৃঢভাবে বিশ্বাস করি, আমার মতো তরুণরাই বিশ্ব পরিবর্তনে বড় ভূমিকা পালন করে। এ কারণে বিশ্ববাসী আমাদের কথা শুনে। তারই অংশ হিসেবে আমি এই ক্যাম্পেইনে অংশ নিয়েছি। তাছাড়া পুষ্টিকর খাবারকে আমি মৌলিক অধিকার হিসেবে দেখি। এতে সকল ধরণের জাংক ফুড থেকে আমরা মুক্তি পেতে পারি।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশে সাম্প্রতিক সময়ে কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে জনসাধারণের মাঝে পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাবার সরবরাহ বেশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁডিয়েছে। এই ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত সচেতনতার পাশাপাশি সমন্বিত উদ্যোগে খাবারের পুষ্টি মান ও নিরাপদ খাদ্যের পর্যাপ্ত প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণ জরুরি।
এর আগে নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের লক্ষ্যে গেইনের আয়োজনে ‘ভালো খাবো, ভালো থাকবো’ শিরোনামে এক ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়। এতে এখন পর্যন্ত প্রায় ১০ লাখের বেশি কিশোর-কিশোরী নিজেদের টিফিনের টাকায় পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণের শপথ গ্রহণ করে; যা ইতিমধ্যে দেশব্যাপী বেশ সাড়া জাগিয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।