বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ বলেছেন, দেশ, জনগণ ও গণতন্ত্র যখনই সংকটে পড়েছে, তখনই বেগম খালেদা জিয়ার আপসহীন নেতৃত্বই বাংলাদেশকে মুক্তির পথে নিয়ে এসেছে। তার দৃঢ় ও আপসহীন অবস্থান না থাকলে দেশে গণতন্ত্র বারবার প্রতিষ্ঠা পেত না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) বিকেলে বরিশাল নগরীর গির্জা মহল্লা একে স্কুল মাঠে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় অনুষ্ঠিত নারী সমাবেশ ও দোয়া-মোনাজাতে এসব কথা বলেন আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ।
নারী সমাবেশ ও দোয়া-মোনাজাত অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা নিজেই। মহিলা দলসহ প্রায় পাঁচ হাজার নারী এতে অংশগ্রহণ করেন। স্থানীয় নেতারা জানান, বরিশালে নারীদের এমন ব্যাপক অংশগ্রহণে এটি ছিল স্মরণকালের বৃহত্তম দোয়া-মোনাজাত অনুষ্ঠান।
আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ বলেন, “১৯৮৬ সালের পাতানো নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, জামায়াত ও স্বৈরাচার এরশাদ ক্ষমতা বৈধ করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার দৃঢ় ও আপসহীন অবস্থানের কারণেই সেই অবৈধ সংসদ টিকতে পারেনি।”
তিনি আরও বলেন, “ফ্যাসিবাদের জননী শেখ হাসিনা বারবার খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি কখনো আপস করেননি। সেই আপসহীনতার কারণেই তাকে কারাবরণ করতে হয়েছে। অথচ কারাগার থেকেও তিনি গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলনরত জনগণকে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন।”
আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহর মতে, বেগম খালেদা জিয়ার আপসহীন নেতৃত্বই বাংলাদেশের গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় ভিত্তি, যা দেশের জনগণকে এখনও সাহস ও প্রেরণা জোগায়।
আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ বলেন, স্বৈরাচারের ষড়যন্ত্রে পা না দেওয়ায় বেগম জিয়াকে এক কাপড়ে বাড়ি ছাড়া করা হয়েছিল। কিন্তু সেই নির্যাতনও তার আদর্শকে পরাজিত করতে পারেনি। বাংলাদেশের নারী জাগরণের ইতিহাসে বেগম খালেদা জিয়া এক অনন্য নাম। তিনি শুধু রাজনীতির মাঠে নয়, নারী নেতৃত্বের শক্তি হিসেবেও এক অপ্রতিরোধ্য উদাহরণ স্থাপন করেছেন।
তিনি বলেন, বেগম জিয়া নারীদের শিখিয়েছেন কীভাবে সাহসী হতে হয়, অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হয়, নিজের অধিকার আদায় করতে হয়। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী, যিনি প্রমাণ করেছেন নেতৃত্বের প্রশ্নে নারী-পুরুষের কোনো পার্থক্য নেই।
আবু নাসের বলেন, আজ যে নারীরা রাজনীতিতে, প্রশাসনে কিংবা সামাজিক নেতৃত্বে নিজেদের অবস্থান তৈরি করছেন তাদের অনেকেই খালেদা জিয়ার আদর্শ থেকে অনুপ্রেরণা নিচ্ছেন। তিনি দেখিয়েছেন, নারী মানেই দুর্বল নয়, নারীই পারে জাতিকে নেতৃত্ব দিতে। বেগম জিয়ার দৃঢ়তা নারীদের শিখিয়েছে যে, আপস নয়, আদর্শের পক্ষে অটল থাকাই সত্যিকারের শক্তি।
এ সময় সমাবেশে বেগম জিয়ার সুস্থতা কামনা এবং আসন্ন নির্বাচনে বিএনপির বিজয় নিশ্চিত করতে ধানের শীষে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। পরে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া-মোনাজাত করা হয়।
এর আগে অনুষ্ঠিত নারী সমাবেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাজে সেজে অনুষ্ঠানে অংশ নেয় দুই শিশু। তাদের দুজনের সঙ্গে সেলফি এবং ছবি তোলেন অংশগ্রহণকারী নারীরা।
অনুষ্ঠানে বরিশাল জেলা মহিলা দলের সভাপতি ফাতেমা রহমান, সদর উপজেলা মহিলা দলের নেত্রী ইসরাত জাহান রিমা, রায়পাশা-কড়াপুর ইউনিয়নের মহিলা দল নেত্রী জাহানারা পারভীন, জাগুয়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য ও মহিলা দল নেত্রী সেতারা বেগম, শায়েস্তাবাদ ইউনিয়ন মহিলা দল নেত্রী হোসনে আরা বেগম, চরমোনাই ইউনিয়ন মহিলা দল নেত্রী হনুফা বেগম, চন্দ্রমোহন ইউনিয়ন মহিলা দল নেত্রী সাহেরা বেগম উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুরা ইউনিয়ন মহিলা দল নেত্রী নীরু বেগম, চরবাড়িয়া ইউনিয়ন মহিলা দল নেত্রী জয়নব বিবী, টুঙ্গিবাড়িয়া ইউনিয়ন মহিলা দল নেত্রী কহিনুর বেগম, জেলা ছাত্রদল নেত্রী অনন্যা কবির, জেলা ছাত্রদলের আঁখি ইসলাম, স্বর্ণা ইসলাম, নগরীর ২৮ নম্বর ওয়ার্ড মহিলা দলের ফরিয়া ইয়াসমিনসহ বরিশাল মহানগর এবং সদর উপজেলার ১০ ইউনিয়নের মহিলা দল নেতাকর্মী এবং সমর্থকরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



