ছোট নদী কিংবা কোন প্রণালী নয়। দুটি মহাসাগরকে সংযুক্ত করেছে মানুষের তৈরী খাল। সিঁড়ি আকৃতির এই খালের সাহায্যে পাহাড়ের উপর দিয়ে চলে সামুদ্রিক জাহাজ। সাগর সমতল থেকে প্রায় ৮৫ ফুট উঁচুতে প্রবাহিত আজব খালটি একত্রিত করেছে আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগরকে। ১৯ শতকে ফরাসিদের হাত ধরে শুরু হয় জলপথ তৈরীর দুঃসাহসী কার্যক্রম। তখন ব্যর্থ হলেও ২০শতকের শুরুতে আসে সফলতা। আলোর মুখ দেখে প্রযুক্তির বিস্ময় পানামা খাল প্রকল্প।
১৮৮১ সালে খালটি খননের কাজ শুরু করে ফ্রান্স। ফরাসিরা ভেবেছিল যে পাহাড় কেটে সমান করার পর পানামা খাল খনন করার সহজ হয়ে যাবে। কিন্তু ভারী বৃষ্টি, আদ্রতা ও মহামারির পর তারা হাল ছেড়ে দেয়। প্রকল্পটি বিক্রি হয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্রের কাছে।
১৯১৪ সালে খনন কাজ শেষ হয়ে যায়। সে সময়ে প্রযুক্তিকালীন উৎকর্ষতার অনন্য উদাহরণ হয়েছিল পানামা খাল। খালে দুই পাশে শক্তিশালী ক্রেন রয়েছে এবং তা দিয়ে জাহাজকে টেনে সামনে নিয়ে যাওয়া হয়।
পানামা খাল প্রকল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্মাণ ছিল গাটুন লেক। এলিভেটেড লক সিস্টেমের মাধ্যমে জাহাজকে ধীরে ধীরে উঁচুতে তোলা হয়। গাটুন লেক পর্যন্ত উপরে তোলা হয় জাহাজকে। প্রতিটি লক সিস্টেমে দুইটি করে দরজা দেওয়া রয়েছে।
সাত ফুট ধাতব দরজার এক একটি ওজন প্রায় ৭০০ টন। এভাবে পানির স্তর জাহাজ চলাচলের উপযোগী হয়। ১৯১৪ সালের ১৫ আগস্ট সর্বপ্রথম জাহাজ চলাচল শুরু হয় এই খালের মধ্য দিয়ে। ঔ জাহাজের নাম ছিল এস এস আনকন।
এখানে ১০৬ থেকে ১৬০ ফুটের জাহাজ চলাচল করতে পারে। আটলান্টিক থেকে পানামা খাল হয়ে প্রশান্ত মহাসাগরে যেতে একটি জাহাজের সময় লাগে প্রায় ১০ ঘন্টা। বছর ১৫ হাজারের বেশি জাহাজ চলাচল করে এটির মধ্য দিয়ে।
গড়ে প্রতিদিন ৪০টি জাহাজ পানামা খাল অতিক্রম করে। এজন্য উচ্চ হারে শুল্ক দিতে হয়। এ প্রজেক্টের মাধ্যমে বছরে তিন বিলিয়ন ডলার আয় করতে পারে পানামা খাল। এখনো প্রযুক্তির বড় বিস্ময় হিসেবে টিকে রয়েছে পানামা খাল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।