জুমবাংলা ডেস্ক : ২০ মাস বয়সী আমির হামজা নামে এক শিশুর মৃত্যুর ৫ মাস পর জানা গেল খিঁচুনিতে নয় তার মৃত্যু হয়েছে আপন ফুফুর নির্মমতায়। ঘটনাটি ঘটে গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় দেবীদ্বার উপজেলার ৬নং ফতেহাবাদ ইউনিয়নের সাইচাপাড়া গ্রামের সুলতান বাবুর্চির বাড়িতে। নিহত আমির হামজা ওই গ্রামের আল-আমিন ও সালমা আক্তারর এক মাত্র পুত্র।
ঘটনার ৫ মাস পর পুলিশি তদন্তে ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে নিহত হামজার (ফুফু) স্বপ্না আক্তারকে গত শনিবার দিবাগত রাতে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে। জিজ্ঞাসাবাদে স্বপ্না তার ভাইপোকে হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করলে রবিবার (৩০ মে) কুমিল্লা ৪নং সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়।
পুলিশ ও নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানায়, নিহত আমির হামজার বাবা হোটেলে চাকরি করেন এবং মা সালমা আক্তার কুমিল্লা মহানগর এলাকার ইপিজেড এ পোষাক কারখানায় চাকরি করেন। সেই কারণে তার সন্তানকে শ্বশুর-শাশুড়ি ও ননদের কাছে দেখভালের জন্য রেখে যান। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় রান্না করার সময় মায়ের অনুপস্থিতিতে হামজা কান্নাকাটি ও বিরক্ত করায় তার ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে ফুফু স্বপ্না রান্নার কাজে ব্যবহৃত কাঠি দিয়ে সজোরে আঘাত করলে সে অচেতন হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় ফুফু শ্বাসরোধে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে তার খিঁচুনি রোগ দেখা দিয়েছে বলে স্থানীয়দের মধ্যে প্রচার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয়।
পুলিশ ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে। এ ঘটনায় নিহতের মা গত ২৮ মে অজ্ঞাতনামা কয়েকজন আসামির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। রবিবার নিহতের ফুফু স্বপ্নাকে আদালতে হাজির করলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রোকেয়া বেগমের নিকট হত্যাকাণ্ডে সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।
নিহত আমির হামজার দাদা মো. সুলতান বাবুর্চি জানান, ঘর নির্মাণের সময় আমার নাতি আমির হামজার ঘাড়ে জানালার গ্রিল খুলে পড়লে আহত হয় এবং হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায়।
নিহত আমির হামজার নানা নায়েব আলী জানান, তার ফুফুই আমার নাতিকে হত্যা করেছে।
দেবীদ্বার থানার ওসি (তদন্ত) ছমি উদ্দিন জানান, এ ঘটনায় প্রথমে অপমৃত্যু মামলা হলেও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট দেখে হামজার স্বাভাবিক মৃত্যু নয়, হত্যাকাণ্ড বলে নিশ্চিত হই। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে নিহতের ফুফুকে গ্রেপ্তার করে কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সাথে আর কেউ জড়িত আছে কিনা তা জানার চেষ্টা চলছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।