
উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদনের পর ‘গণভোট অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করে সরকার গেজেট প্রকাশ করেছে। আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে অনুষ্ঠিতব্য ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোট আয়োজন করা হবে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) রাতে আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগ থেকে গণভোট অধ্যাদেশ, ২০২৫–এর গেজেট প্রকাশ করা হয়। এর আগে সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন পায়।
সরকার জানিয়েছে, জাতির গণতান্ত্রিক রূপান্তরের অংশ হিসেবে জুলাই সনদের বাস্তবায়নে জনগণের মতামত ও অভিপ্রায় জানতে একই দিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট আয়োজন করা হবে।
গণভোটের মাধ্যমে জনগণ সরাসরি মতামত জানাবে—জুলাই সনদের সংস্কার, কাঠামো ও রূপান্তর প্রক্রিয়া এগিয়ে নেবে কি না।
গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে অধ্যাদেশটি এখন কার্যকর হয়েছে। শিগগিরই নির্বাচন কমিশন গণভোটের বিধিমালা, ভোটগ্রহণ পদ্ধতি ও প্রস্তুতির বিস্তারিত ঘোষণা করবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
গণভোটে যে ৪ বিষয় থাকবে
* নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান জুলাই সনদে বর্ণিত প্রক্রিয়ার আলোকে গঠন করা হবে।
* আগামী জাতীয় সংসদ হবে দুই কক্ষবিশিষ্ট ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ১০০ সদস্যবিশিষ্ট একটি উচ্চকক্ষ গঠিত হবে এবং সংবিধান সংশোধন করতে হলে উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের অনুমোদন দরকার হবে।
* সংসদে নারী প্রতিনিধি বৃদ্ধি, বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার ও সংসদীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচন, মৌলিক অধিকার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, স্থানীয় সরকার, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতাসহ তফসিলে বর্ণিত যে ৩০টি বিষয়ে জুলাই জাতীয় সনদে ঐকমত্য হয়েছে- সেগুলো বাস্তবায়নে আগামী সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী রাজনৈতিক দলগুলো বাধ্য থাকবে।
* জুলাই জাতীয় সনদে বর্ণিত অন্যান্য সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুসারে বাস্তবায়ন করা হবে।
অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, গণভোটে চারটি বিষয়ের ওপর একটি প্রশ্ন উপস্থাপন করা হবে— আপনি কি জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫ এবং জুলাই জাতীয় সনদে লিপিবদ্ধ সংবিধান সংস্কার সম্পর্কিত নিম্নলিখিত প্রস্তাবসমূহের প্রতি আপনার সম্মতি জ্ঞাপন করছেন?; (হ্যাঁ/না):
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য যেসব ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করা হবে সেসব ভোটকেন্দ্রে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য কমিশন যেসব রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ ও অধিক্ষেত্র নির্ধারণ করবে, তারা গণভোট অনুষ্ঠানের জন্য সংশ্লিষ্ট অধিক্ষেত্রে নিযুক্ত হয়েছেন বলে গণ্য হবেন বলেও অধ্যাদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।
গণভোট বিধিমালা করবে ইসি
নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার জানিয়েছেন, গণভোট অধ্যাদেশের আলোকে গণভোট বিধিমালা ২০২৫ চূড়ান্ত করতে দু-একদিন লাগবে। গণভোটের প্রাসঙ্গিক কিছু প্রস্তুতির পর সংসদ ও গণভোটের তফসিল দেয়ার ক্ষণগণনা শুরু হবে।
তিনি আরও জানান, অধ্যাদেশ জারির পর বুধবার (২৬ নভেম্বর) কমিশন নিজেরা বসবে বিধিমালা প্রস্তুত করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



