জীববিজ্ঞানে ২০২২ সালের অসংখ্য গবেষণা থেকে অন্যতম সেরা কয়েকটি আবিষ্কারকে নিয়ে একটি তালিকা প্রকাশ করেছে ‘কোয়ান্টা ম্যাগাজিন’। ২০২২ সালে ‘বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন’ ক্যাটেগরিতে পুলিৎজার পুরস্কার পেয়েছে ম্যাগাজিনটি।
এ বছরের শুরুর দিকে ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষকরা মস্তিষ্কের এ ইলেকট্রিক্যাল পরিবর্তনকে পর্যবেক্ষণ করার একটি উপায় বর্ণনা করেছেন। অসহনীয় তাপ প্রয়োগে জীবন্ত জেব্রা মাছের স্মৃতি গঠনের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া তারা অনুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম হয়েছেন। তারা আরো পর্যবেক্ষণ করেন- এ প্রক্রিয়ায় কিছু সিন্যাপসের সংযোগ শুধু দৃঢ়ই হচ্ছে না, বরং কিছু সিন্যাপসের ক্ষেত্রে এ দৃঢ়তা মুহূর্তেই বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
মস্তিষ্কের স্মৃতিভাণ্ডার যেসব তথ্য জমা রাখে, তা আমরা পরবর্তীতে স্মরণ করতে পারি। এক্ষেত্রে মস্তিষ্ক কিছু স্মৃতিকে ভালো স্মৃতি হিসেবে ও কিছু স্মৃতিকে খারাপ স্মৃতি হিসেবে চিহ্নিত করে রাখে। এ বছরই অপর একটি গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন- মস্তিষ্কের নিউরন থেকে নিঃসৃত ‘নিউরোটেনসিন’ এই ভালো ও খারাপ স্মৃতির নির্ণায়ক হিসেবে কাজ করে।
প্রাণরসায়নবিদ নিক লেন ও অন্যান্য গবেষকরা মনে করেন- সমুদ্র তলদেশে হাইড্রোথার্মাল ভেন্টে প্রথম প্রাণের উদ্ভব হয়, যেখানে কোষে জেনেটিক তথ্যের আবিভার্বের পূর্বেই মেটাবলিজমের উপকরণসমূহ বিদ্যমান ছিল। এ বছরের শুরুর দিকে নিক লেন গবেষণাগারে উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে তার ধারণার স্বপক্ষে প্রমাণ হাজির করেন। বিজ্ঞানীদের এ গবেষণা বার্ধক্য ও ক্যানসারের গবেষণায় দারুণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এ বছরেই ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির একদল গবেষক একধরনের কৃত্রিম জিন নেটওয়ার্কের প্রভাবে স্টেম কোষ থেকে বিভিন্ন ধরনের বিশেষায়িত কোষ তৈরির প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম হয়েছেন। যদিও তারা কোষের এমন প্রাকৃতিক জেনেটিক নিয়ন্ত্রণের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে সক্ষম হননি, তবে এ প্রক্রিয়া যে খুব একটা জটিল না, বিজ্ঞানীদের এ মডেল তারই ইঙ্গিত দেয়।
মস্তিষ্কের স্বাভাবিক ক্রিয়া চালু রাখার জন্য দরকার হয় প্রচুর শক্তির। আর শক্তির জোগানদাতা হলো খাদ্য। মস্তিষ্ক যদি যথেষ্ট পরিমাণে শক্তি না পায় তাহলে তো এর কাজকর্মে ব্যাঘাত তৈরি হওয়াই স্বাভাবিক। এ বছরের জানুয়ারিতে ইউনিভার্সিটি অব এডিনবার্গের গবেষকরা নিউরন জার্নালে এ বিষয়ে তাদের একটি গবেষণা তুলে ধরেছেন।
খাদ্য সংকটে থাকা ইঁদুরের উপর গবেষণায় তারা দেখিয়েছেন, এ অবস্থায় তাদের মস্তিষ্কে একধরনের ‘লো পাওয়ার মোড’ চালু হয়ে যায়। এ অবস্থায় মস্তিষ্কের দৃষ্টি কেন্দ্রে প্রায় ৩০% কম শক্তি ব্যবহৃত হয়। ফলে এ অবস্থায় প্রাণীর দৃষ্টিশক্তিও কমে যায় অনেকাংশেই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।