গত ১০০ বছরে বন নিধন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে। এই সময়ের মধ্যে বিশ্বের বনের প্রায় এক তৃতীয়াংশ নষ্ট হয়ে গেছে। এই নষ্ট হওয়া বনের অর্ধেক পরিমাণ শুধুমাত্র গত শতকে নষ্ট হয়েছে। বন পাথিদের বাসস্থান এবং খাদ্যের উৎস সরবরাহ করে। বন নিধনের ফলে পাথিদের আবাসস্থল হারিয়ে ফেলে এবং তাদের খাদ্য উৎস কমে যায়। এর ফলে অনেক পাথি প্রজাতি বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে।
বন নিধনের প্রভাব
বন নিধনের প্রভাব বিভিন্ন ভাবে প্রকাশ পায়। এর প্রধান প্রভাব হলো জলবায়ু পরিবর্তন। বন নিধনের ফলে বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তনের প্রায় ১০% অবদান রয়েছে। বন নিধনের ফলে বনের মাটি থেকে কার্বন ডাইঅক্সাইড মুক্ত হয় এবং এটি জলবায়ু পরিবর্তনে অবদান রাখে। আমাজন বন পৃথিবীর বৃহত্তম বন এবং এটি অনেক পাথি প্রজাতির আবাসস্থল। গত ৫০ বছরে, আমাজন বনের ২০% ধ্বংস হয়েছে। এর ফলে অনেক পাথি প্রজাতি বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে এবং স্থানীয় আদিবাসীদের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
সুন্দরবন বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন এবং এটি বাংলাদেশের একটি জাতীয় সম্পদ। বন উজাড়, কৃষিক্ষেত্র সম্প্রসারণ, এবং লবণাক্ততার কারণে সুন্দরবনের বনভূমি হ্রাস পাচ্ছে। এর ফলে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, বাংলাদেশ হাতি, এবং অনেক পাখি প্রজাতির আবাসস্থল হুমকির মুখে রয়েছে।
বন নিধনের কারণ
বন নিধনের প্রধান কারণ হলো কৃষি জমি বাড়ানো, বাসস্থান তৈরি করা, এবং জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহার করা। এছাড়াও বন নিধনের অন্যান্য কারণ হলো প্রযুক্তি, অনিয়মিত বন ব্যবস্থাপনা, এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের চাপ। বন গ্রিনহাউস গ্যাস শোষণ করে এবং গ্রহকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। বন নিধনের ফলে কার্বন ডাই অক্সাইড বায়ুমণ্ডলে নির্গত হয়, যা জলবায়ু পরিবর্তনে অবদান রাখে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পাথিদের আবাসস্থল পরিবর্তিত হচ্ছে এবং তাদের প্রজনন ও বেঁচে থাকার ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে।
বন নিধন প্রতিরোধ
বন নিধন প্রতিরোধে বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করা হচ্ছে। এতে অন্তর্ভুক্ত হলো বন পুনরুদ্ধার, স্থানীয় সম্প্রদায়ের সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো, এবং বন ব্যবস্থাপনায় নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করা। বন মাটির ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য করে। বন নিধনের ফলে বৃষ্টির পানি মাটি ক্ষয় করে এবং নদী ও সমুদ্রে পলি জমা করে। মাটির ক্ষয়ের ফলে পাথিদের খাদ্য উৎস কমে যায় এবং তাদের আবাসস্থলের ক্ষতি হয়।
বন পৃথিবীর জীববৈচিত্র্যের জন্য অপরিহার্য এবং জীববৈচিত্র্যের ভারসাম্য রক্ষা করে। গত ১০০ বছরে, বন নিধন বিশ্বব্যাপী একটি প্রধান পরিবেশগত সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বন উজাড়ের ফলে বনভূমি হ্রাস পেয়েছে, যার ফলে জীববৈচিত্র্য হ্রাস, জলবায়ু পরিবর্তন, মাটির ক্ষয়, এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।