নিয়ান্ডারথাল আর আধুনিক মানুষ হাজার হাজার বছর ধরে একসঙ্গে থেকেছে, নিয়মিতভাবে যোগাযোগ করেছে—এমন প্রমাণ বাড়তে থাকায় অনেক গবেষক নিয়ান্ডারথালদের ভাগ্যে কী ঘটেছিল, তা জানতে একটি অপ্রত্যাশিত উত্তর খুঁজছেন। আর তা হলো, সেখানে জিনের প্রবাহ (gene flow) ছিল এবং নিয়ান্ডারথালরা আধুনিক মানুষের মধ্যে ধীরে ধীরে মিশে গিয়েছিল। মূলত নিয়ান্ডারথাল ও আধুনিক মানুষ পরস্পরের সঙ্গে সহাবস্থানে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছিল। আরও বেশি মানুষ ইউরেশিয়ায় চলে আসার সঙ্গে সঙ্গে সংখ্যালঘু হয়ে পড়ে নিয়ান্ডারথালরা। অবশেষে বিলুপ্ত হয়ে যায় তারা।
এটা নিছক ধারণা নয়। গবেষণা থেকে প্রাপ্ত ফল ধারণাটিকে সমর্থন করছে। গবেষণা বলছে, আধুনিক মানুষেরা নিয়ান্ডারথালদের শুষে (Absorbed) নিয়েছিল। এভাবে আমরা হয়তো নিয়ান্ডারথালদের একটি স্বতন্ত্র গোষ্ঠী হিসেবে বিলুপ্ত করে দিয়েছি। তাদের মধ্যে কাউকে কাউকে আবার নিজেদের পরিবারের অংশও করে নিয়েছি।
একই জায়গায় আধুনিক মানুষ ও নিয়ান্ডারথালরা দীর্ঘ সময় একসঙ্গে বাস করছিল, এমন কোনো নির্ভরযোগ্য প্রমাণ নেই। যদিও আমরা জানি, তারা কিছু জিন ভাগ করে নিয়েছিল। তবে আমরা তাদের একসঙ্গে বাস করার বা সত্যিই ঘনিষ্ঠ বন্ধু হওয়ার কোনো প্রমাণ খুঁজে পাইনি। তাই এখনো স্পষ্ট নয় যে আধুনিক মানুষ নিয়ান্ডারথালদের গ্রহণ করেছিল এবং তাদের পরিবারের অংশ করে নিয়েছিল।
যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা একজন নিয়ান্ডারথাল ও একজন আধুনিক মানুষের ঘনিষ্ঠতার দৃশ্য খুঁজে না পাই, ততক্ষণ নিশ্চিতভাবে বলা কঠিন আসলে কী ঘটেছিল। আর যদি খুঁজেও পাই, সম্ভবত নিয়ান্ডারথালদের শেষ সময়ের জটিল চিত্র সম্পর্কে আমাদের ধারণার খুব বেশি পরিবর্তন হবে না।
কিছু নিয়ান্ডারথাল মারা গিয়েছিল, কিছু হত্যার শিকার হয়েছিল, কিছু মিলেমিশে থেকেছিল, কিছু শুধু আইডিয়া আদান-প্রদান করেছিল। কিন্তু নিয়ান্ডারথালরা কীভাবে হারিয়ে গেছে, বিলুপ্ত হয়ে গেছে? এই প্রশ্নের ‘একটামাত্র’ উত্তর বোধ হয় কারও কাছে নেই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।